ফেসবুকে পোস্ট দেখে বাবার লাশ শনাক্ত করলেন প্রবাসী কন্যা

ছবি: প্রতীকী
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৪ | ০৫:২৯
পাওয়ারলুমের ব্যবসায়ী মোখলেসুর রহমান মুকুল (৬০)। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ৩০০ ফিট এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় আহত হন তিনি। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
মুকুলের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনটি চুরি হয়ে যাওয়ায় অজ্ঞাত হিসেবে তাঁর মরদেহ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। পরে গতকাল বুধবার সকালে পুলিশের ফেসবুক পেজে নিহতের ছবি দেখে পরিচয় শনাক্ত করেন তাঁর জার্মানি প্রবাসী মেয়ে সানজিদা রহমান তিথি।
নিহত মুকুল নরসিংদী সদরের কাঁঠালিয়া ইউনিয়নের ডউকাদি গ্রামের বাসিন্দা। পরিবার নিয়ে রাজধানীর খিলক্ষেত লেক সিটি কনকর্ড টাওয়ারে নিজস্ব ফ্ল্যাটে থাকতেন তিনি। স্ত্রী শাহিদা বেগম নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হেলথ পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত। বড় মেয়ে সানজিদা তিন বছর ধরে জার্মানিতে থাকেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা থেকে মার্স্টাস শেষে তাঁর ছোট মেয়ে মিম রহমানও গত ১৭ সেপ্টেম্বর জার্মানিতে বড় বোনের কাছে চলে যান।
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মুকুল সমকালের আর্ট এডিটর দেওয়ান আতিকুর রহমানের বড় ভাইরা। তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার সকালে ব্যবসায়িক প্রয়োজনে নরসিংদী যান মুকুল। সেখান থেকে ফেরার পথে সন্ধ্যায় রাজধানীর ৩০০ ফিট এলাকায় বিআরটিসি বাস থেকে নেমে রাস্তা পার হওয়ার সময় দ্রুতগতির একটি মোটরসাইকেল তাঁকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান মোটরসাইকেলচালক। আর গুরুতর আহত হন মোটরসাইকেল আরোহী ও পথচারী মুকুল। তাদের উদ্ধার করে পুলিশ কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানেই রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুকুলের মৃত্যু হয়। অপর আহত ব্যক্তি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
এদিকে, মঙ্গলবার রাতে বাসায় না ফেরায় বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন পরিবারের সদস্যরা। সকালে জার্মানি থেকে বড় মেয়ে তিথি ফোন করে দুর্ঘটনার বিষয়টি জানালে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গ থেকে মুকুলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের বরাত দিয়ে আতিকুর রহমান বলেন, উদ্ধারের সময় তাঁর সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন পায়নি পুলিশ। মৃত্যুর পর তাঁর আঙুলের ছাপ নিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। পরে খিলক্ষেত থানা থেকে নরসিংদী থানা পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। নরসিংদী পুলিশের ফেসবুক পেজে মুকুলের ছবি পোস্ট করলে তাঁর এক নিকটাত্মীয়ের নজরে আসে। পরে তিথি পুলিশের ফেসবুক পোস্টে ছবি দেখে মুকুলের পরিচয় নিশ্চিত করেন।
আতিকুর রহমান জানান, মোটরসাইকেল চালকও মারা যাওয়ায় মামলা করা হয়নি। মোটরসাইকেলটি জব্দ করেছে খিলক্ষেত থানা পুলিশ। পুলিশের কাছে আবেদন করে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ গ্রহণ করে বুধবার রাতে নরসিংদীতে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
খিলক্ষেত থানার ওসি আজাহারুল ইসলাম বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় পথচারী মুকুলের স্বজনের অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাঁর মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।