ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

আজও চিকিৎসাসেবা বন্ধ চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে, ভোগান্তিতে রোগীরা

আজও চিকিৎসাসেবা বন্ধ চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে, ভোগান্তিতে রোগীরা

সংঘর্ষের কারণে বন্ধ রয়েছে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা। ছবি: সংগৃহীত

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৫ | ১৫:৩৪

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এখন অনেকটাই জনমানবশূন্য। গত বুধবার সকালে হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন জুলাই যোদ্ধাদের সঙ্গে ত্রিমুখী সংঘর্ষের পর কাজে ফেরেননি চিকিৎসক, নার্স ও সহায়ককর্মীরা। ফলে বন্ধ হয়ে যায় বহির্বিভাগ, অস্ত্রোপচার ও জরুরি সেবা। আজ শুক্রবারও চালু হয়নি হাসপাতালটির চিকিৎসাসেবা। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা ফিরে যাচ্ছেন মূল ফটক থেকেই।

আজ সকালের দিকে সরেজমিন দেখা যায়, হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক ও নার্স নেই। বিভিন্ন স্থান থেকে আসা নতুন রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে ফেরত যাচ্ছেন। আগে যেসব রোগী এখান থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন, তাদের অনেকে ফলোআপের জন্য এসে তা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, পুরো সেবা কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। কর্মচারীরা নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ করছেন। তাদের ভাষ্য, হাসপাতালের ভেতর জুলাই যোদ্ধাদের কিছু অংশ সহিংস আচরণ করেছে। ভাঙচুর ও হামলার ঘটনা ঘটেছে বারবার। এতে আতঙ্কে রয়েছেন চিকিৎসক ও স্টাফরা।

স্থানীয় চা দোকানি শাহ আলম বলেন, বুধবার সংঘর্ষের পর থেকে কেউ আসছেন না। হাসপাতাল পুরো ফাঁকা। মাঝে মাঝে আহত ছেলেগুলোর কাউকে কাউকে ভেতর থেকে বাইরে যেতে দেখি।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, বর্তমানে ৫০ জন জুলাই যোদ্ধা হাসপাতালে ভর্তি। আত্মহত্যার চেষ্টা করা চারজন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং একজন সিএমএইচে ভর্তি আছেন। এ ছাড়া প্রায় ১৫০ জন সাধারণ রোগী ছিলেন, যারা নিরাপত্তার অভাবে হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন।

হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, আটজন ছাড়া বাকি জুলাই যোদ্ধারা সুস্থ। তাদের হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন নেই। ছুটি দেওয়া হলেও তারা হাসপাতাল ছাড়ছেন না। বর্তমানে আমি ছুটিতে রয়েছি। এত ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়। বিষয়টি মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। প্রয়োজনে চাকরি ছেড়ে দেব। তিনি জানান, চিকিৎসক ও স্টাফদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না গেলে কেউ কাজে ফিরবেন না।

যে ঘটনার জেরে অচলাবস্থা

হাসপাতালের একাধিক সূত্র জানায়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত চার রোগী সঠিক চিকিৎসা না পাওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে গত ২৫ মে বিষপান করলে উত্তেজনার সূত্রপাত ঘটে। এরপর ২৭ মে পরিচালকের কক্ষে গিয়ে আরেক আহত শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এতে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়; তৈরি হয় অবিশ্বাসের আবহ। এরপর গত বুধবার বেলা ১১টার দিকে পরিস্থিতি ভয়াবহ অবস্থায় যায়। হাসপাতালে ভর্তি জুলাই যোদ্ধা, কর্মচারী এবং রোগীদের সঙ্গে থাকা স্বজনদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। 

আরও পড়ুন

×