কিশোরীটি অভিমান করে বাসা ছেড়েছিল

প্রতীকী ছবি
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২০ | ১২:০০ | আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২০ | ১৫:০৪
তিন দিন আগে নোয়াখালী থেকে বাবার কাছে বেড়াতে এসেছিল ১৩ বছরের কিশোরীটি। মিরপুরের পল্লবীর কালশী এলাকায় বাবার বাসায় উঠেছিল সে। সেখানে আগে থেকে তার বোনও থাকত। তিনি একজন গার্মেন্টকর্মী। গত রোববার রাতে বাবা আর বোনের সঙ্গে অভিমান করেই বাসা থেকে বেরিয়ে যায় মেয়েটি। এরপর বাসার অদূরে একটি দোকানের পাশে বসে ছিল সারা রাত। অনেক খোঁজাখুঁজিও করেছিলেন পরিবারের সদস্যরা।
একপর্যায়ে অভিমান ভেঙে বাসায় ফিরে যাওয়ার মনস্থিরও করেছিল; কিন্তু বাসা চিনতে না পারায় ফেরা হয়নি তার। চায়ের দোকানে বসে কান্নাকাটি করছিল। এ সময় আবদুর রহমান মিন্টু ও আলামিন নামের দুই বখাটে তরুণ তাকে বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে। এতে রাজি হয় সে।
তবে কিশোরীকে বাসায় না পাঠিয়ে মিন্টু তাকে তার কালশী এলাকার মেসে নিয়ে যায়। এরপর মিন্টু খবর দেয় তার বখাটে বন্ধু হৃদয় খান ও মোহাম্মদ জুয়েলকে। তারা একত্র হওয়ার পর মেয়েটিকে পরিকল্পিতভাবে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়। এরপর ধর্ষণ করা হয়। ভোরে অচেতন ওই কিশোরীকে মেসে রেখেই পালিয়ে যায় বখাটেরা। জ্ঞান ফেরার পর মেয়েটির কান্নাকাটি শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গিয়ে তাকে বিধ্বস্ত অবস্থায় দেখতে পান।
স্থানীয় এক বাসিন্দা ঘটনাটি পল্লবী থানা পুলিশকে অবহিত করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। প্রথমে ওই মেসের মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি জানান, মিন্টু নামের এক পোশাককর্মী তার কয়েক বন্ধুকে নিয়ে ওই মেসে থাকে। ভোর থেকেই তাদের বাসায় দেখছেন না। এরপর প্রযুক্তিগত তদন্তের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে প্রথমে মিন্টুকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিন্টু অপকর্মের কথা স্বীকারও করে। এরপর তিন সহযোগীর কথা জানায় সে। গতকাল দিনভর ঢাকার একাধিক জায়গায় অভিযান চালিয়ে বাকি তিনজনকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
পল্লবী থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী সমকালকে জানান, বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে প্রথমে দুই বখাটে কিশোরীকে ফাঁদে ফেলেছিল। এরপর তাদের সঙ্গে আরও দু'জন যুক্ত হয়। তারা রাতভর মেয়েটির সঙ্গে বর্বর আচরণ করেছে। কিশোরীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। মেয়েটি এখনও আতঙ্কিত। তার চোখেমুখে ভয়ের ছাপ।
ওসি আরও জানান, কিশোরী মেয়েটি তার মায়ের সঙ্গে নোয়াখালীতে থাকত। দিনমজুর বাবার কাছে বেড়াতে এসে এ ভয়ংকর ঘটনার মুখোমুখি হয় সে। জড়িত চারজনের সবাই কমবেশি মাদকাসক্ত। সোমবার তাদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে।
- বিষয় :
- কিশোরী
- অভিমান
- কিশোরী ধর্ষণ
- কালশী