কলাবাগানের ঘটনাটি পূর্ণাঙ্গ ক্রাইম: আইজিপি

ড. বেনজীর আহমেদ -ফাইল ছবি
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১ জানুয়ারি ২০২১ | ০৭:৩৬ | আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২১ | ০৭:৩৮
রাজধানীর কলাবাগানে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর মৃত্যুর ঘটনাকে 'পূর্ণাঙ্গ ক্রাইম' উল্লেখ করে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, সন্তানদের প্রতি অভিভাবকদের নজর দিতে হবে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে অভিভাবকদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া দরকার।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত 'র্যাব সেবা সপ্তাহ' অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন পুলিশ প্রধান। সোমবার সকালে কুর্মিটোলায় র্যাব সদরদপ্তরের শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল আজাদ মেমোরিয়াল হলে ওই অনুষ্ঠান হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি বলেন, পরিবারকে জানতে হবে ছেলে বা মেয়ে কোথায় কার সঙ্গে মিশে, কী করে, কখন কোথায় যায়। এটা বাবা-মায়ের দায়িত্ব। সন্তান জন্ম দিলে দায়-দায়িত্ব পিতামাতাকে নিতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'দায় যদি না নিতে পারেন তাহলে সন্তন জন্ম দিয়েছেন কেন?'
বেনজীর আহমেদ বলেন, ১৮ বছরের নিচে বয়সের সবাই শিশু। মানবাধিকার কর্মীরা, এনজিওকর্মীরা অনেক হৈ চৈ করে অনেক আইন পরিবর্তন সংশোধন করেছেন। কিন্তু কলাবাগানে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা কিন্তু পূর্ণাঙ্গ ক্রাইম। এখানে ধর্ষণ ঘটানো হয়েছে, মৃত্যু ঘটানো হয়েছে। অথচ দেশের আইন অনুযায়ী উভয়ই শিশু।
তিনি বলেন, 'অথচ আমরা এই আইনগুলো করেছি। অবশ্যই আমাদের আধুনিকায়ন দরকার, আইজিপি হিসেবে আমি দ্বিমত পোষণ করি না। তবে অত্যাধুনিক আইন করতে গিয়ে আমরা দেশের মধ্যে কোনো সমস্যা তৈরি করছি কি না সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।'
পুলিশ প্রধান বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে আধুনিক বাংলাদেশ, ধনী বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। আজকের যারা শিশু-কিশোর তারাই মূলত ওই আধুনিক বাংলাদেশের, ধনী বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে। সেখানে এখন এই কিশোরদের মধ্যে 'গ্যাং কালচার' গড়ে উঠছে।
তিনি বলেন, আমাদের সমস্যা হচ্ছে কিশোর গ্যাং। তারা মাদক নিয়ে ধ্বংস হয়ে যাক সেটা কোনোমতেই বরদাশত করতে পারি না। নতুন প্রজন্ম সামাজিকভাবে বিলুপ্ত বা বিনাশ হবে, তা হতে দেওয়া যাবে না। তাদেরকে সেই সময়ের জন্য যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সেজন্য সমাজের সঙ্গে পরিবারকেও এগিয়ে আসতে হবে।
শিশু অপরাধীদের সামলানোর ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাগুলো তুলে ধরে পুলিশ প্রধান বলেন, শিশুকে থানায় আনলেই প্রবেশন অফিসার নিয়ে আসতে হবে। বিন্তু দেশে প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রবেশন অফিসার নেই। তাদের রাখতে হবে শিশু সংশোধনাগারে। দেশে কয়টি শিশু সংশোধনাগার আছে? বিচার হবে শিশু আদালতে, কয়টি আছে এই শিশু আদালত?
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজের প্রশংসা করে তিনি বলেন, এই করোনাকালে তারা যেমন মাঠে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করেছে, অসহায় মানুষের পাশে থেকেছে তেমনি নকল মাস্ক-ওষুধ, ভুয়া করোনা টেস্টিং কিটের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেছে।
অনুষ্ঠানে র্যাব মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার বক্তব্য দেন।
'র্যাব সেবা সপ্তাহ' উপলক্ষে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে দরিদ্র, প্রতিবন্ধী ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা সহায়তা প্রদান করা হয়।