মগবাজারের বাসায় চিকিৎসকের লাশ, গলায় ফাঁসের দাগ

সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ জুন ২০২১ | ০৮:৩৭
রাজধানীর মগবাজারের বাসা থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) ডা. জিহানুল আলিমের লাশ (৫৬) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর স্বজনেরা জানিয়েছিলেন, তিনি হার্টঅ্যাটাক করেছেন। সেই তথ্য জানিয়ে জরুরি বিভাগের কাউন্টার থেকে তারা টিকিটও নেন। ইসিজি করতে গিয়ে চিকিৎসকের দেখতে পান, তার গলায় ফাঁসের দাগ। সোমবার দুপুরে ওই ঘটনার পর পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে।
জিহানুল সর্বশেষ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রোগ্রাম ম্যানজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তবে গত ১০ মাস আগে তাকে ওএসডি করা হয়েছিল। তিনি স্ত্রী ও একমাত্র মেয়ে নিয়ে রাজধানীর বড় মগবাজারের পিয়ারাবাগ এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক আলামতে তাদের মনে হয়েছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওই কর্মকর্তা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে স্বজনেরা কেনো তা লুকানোর চেষ্টা করেছেন সে বিষয়ে তদন্ত চলছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, সোমবার দুপুর ২টার পর অচেতন জিহানুলকে তার স্ত্রী ও স্বজনেরা ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। তার স্ত্রী ফারহানা ফেরদৌস আলী টিকিট কাউন্টারে গিয়ে বলেন, তার স্বামী হার্টঅ্যাটাক করেছেন। এরপর তার চিকিৎসা শুরু হলে দেখা যায়, গলায় ফাঁসের দাগ। পরে চিকিৎসকেরা তা হাসপাতালের ক্যাম্প পুলিশকে জানান।
চিকিৎসকদের উদ্ধৃত করে ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই জিহানুল মারা গেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, গলায় ফাঁস লাগিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।
হাসপাতালে স্ত্রী ফারহানা ফেরদৌস আলীর সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তিনি রাজি হননি। তবে অপর একজন স্বজন জানিয়েছেন, জিহানুল বেলা ১১টার দিকে নিজের কক্ষে গলায় ফাঁস দেন। এরপর স্থানীয় হাসপাতালে নিলেও তিনি বেঁচে আছেন, নাকি মারা গেছেন- তা না জানিয়ে তাকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। ঝামেলা এড়াতেই তারা গলায় ফাঁসের বিষয়টি এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন।
নিহতের ভাই জহিরুল আলিম জানান, তার ভাই দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। তাকে উন্নত চিকিৎসার চেষ্টা চলছিল। কী কারণে বা কিভাবে তার মৃত্যু হলো- তা তিনি বুঝতে পারছেন না। তাদের বাড়ি পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর থানায়।
হাতিরঝিল থানার উপ-পরিদর্শক ইদ্রিস আলী বলেন, পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তারা জানতে পেরেছেন, জিহানুল অনেক টাকা ঋণ করেছিলেন। ওএসডি হওয়ার পর এ নিয়ে তিনি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এসব কারণে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার আগে তার মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। স্বজনেরা কেনো বিষয়টি লুকানোর চেষ্টা করেছেন, তাও যাচাই করা হচ্ছে।
- বিষয় :
- লাশ উদ্ধার
- মগবাজার
- চিকিৎসকের লাশ উদ্ধার