মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচিকে সর্বোত্তম বিনিয়োগ বিবেচনা

ছবি: ইউনিসেফ
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২২ | ০৬:২৯ | আপডেট: ০৯ জুন ২০২২ | ০৬:২৯
সরকার সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতায় মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচিকে সর্বোত্তম বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করে ২০২২-২৩ অর্থবছরে বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরের উপকারভোগীর সংখ্যা ১০ লাখ ৪৫ হাজার থেকে ২ লাখ ৯ হাজার বৃদ্ধি করে, আগামী ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে মোট ১২ লাখ ৫৪ হাজারে উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ খাতে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে মোট বরাদ্দ ১ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ প্রস্তাব করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতাভুক্ত বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ও প্রতিবন্ধী উপবৃত্তি কার্যক্রমে এবং দারিদ্র্য নিরসন কর্মসূচির আওতায় পল্লী ও শহর সমাজসেবা কার্যক্রম, এসিডদগ্ধ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পুনর্বাসনে শতকরা ৫০ ভাগ নারী এবং বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা দুঃস্থ মহিলা ভাতা এবং পল্লী মাতৃকেন্দ্র কার্যক্রমে শতকরা ১০০ ভাগ নারী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণের কার্যক্রমসমূহে নারীর অন্তর্ভুক্তি বাধ্যতামূলক থাকায় এগুলো বার্ষিক গড়ে ১.২০ লাখ নারীর ক্ষমতায়ন, সামাজিক সুরক্ষা বৃদ্ধি, আত্মকর্মসংস্থান, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রাপ্তি, আয়বর্ধক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ, নিজস্ব পুঁজি এবং সরকারি সম্পদ ও সেবা লাভের সুযোগ সৃষ্টিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখছে। সামাজিক অপরাধপ্রবণ নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৬টি কেন্দ্রের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে ভরণ-পোষণ, প্রশিক্ষণ, শিক্ষা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এতিম শিশুদের খোরাকী ভাতা জানুয়ারি, ২০২২ হতে ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করে মাসিক জনপ্রতি ৪ হাজার টাকা হারে প্রদান করা হয়েছে। শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রসমূহের মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত বিপন্ন শিশুদের সেবা প্রদান করে পরিবার বা নিকট আত্মীয় বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে পুনঃএকত্রীকরণ/পুনর্বাসন নিশ্চিত করা হচ্ছে। বর্তমানে কেন্দ্রসমূহে মোট ২ হাজার ২৯১ জন (১ হাজার ৮৮ জন ছেলে এবং ১ হাজার ২০৩ জন মেয়ে) শিশু অবস্থান করছে।’
মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি প্রসঙ্গে বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘আমরা গ্রামীণ এলাকার দরিদ্র গর্ভবতী মায়ের জন্য বিদ্যমান মাতৃত্বকালীন ভাতা এবং শহর অঞ্চলের কম আয়ের 'কর্মজীবী মায়েদের জন্য ল্যাকটেটিং ভাতা' এ কর্মসূচি দুটিকে সমন্বিত করে 'মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি' নামে বাস্তবায়ন শুরু করেছি। এ কার্যক্রম জীবনচক্রভিত্তিক সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় মাতৃগর্ভ থেকে শুরু করে শিশুর জীবনের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ ১ হাজার দিনসহ চার বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর পুষ্টি চাহিদা পূরণ, শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশে সাহায্য করবে।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘মাতৃমৃত্যু ও শিশু মৃত্যু হ্রাস, শীর্ণকায় ও খর্বকায় শিশুর সংখ্যা কমিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। মূলত এ কার্যক্রম চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উপযোগী দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আমাদের সরকার সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতায় মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচিকে সর্বোত্তম বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করছে।’