ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

বিজিএমইএকে সাত দেশের কুটনীতিকরা

ইইউ'র আইন পরিপালনে পদক্ষেপ নিতে হবে

ইইউ'র আইন পরিপালনে পদক্ষেপ নিতে হবে

ছবি: সংগৃহীত

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৪ | ২৩:০৫

ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) ডিউ ডিলিজেন্স সংক্রান্ত নতুন আইনের কারণে রপ্তানি অব্যাহত রাখতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে বাংলাদেশকে। শ্রম অধিকার চর্চা আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হবে। বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউর সাত দেশের  কুটনীতিকরা তৈরি পোশাক উৎপাদক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে রোববার এমন তাগিদ দেন। বৈঠকে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) কাতার থেকে উত্তরণের পরও  বর্তমানের মত শুল্কমুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানিয়েছে বিজিএমইএ। বিকল্প হিসেবে ‘জিএসপি প্লাস’ স্কিমে উৎস বিধির শর্ত শিথিল করা এবং ডিউ ডিলিজেন্স পরিপালনে সহায়তা চাওয়া হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে।

রাজাধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ইইউ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ইইউ ডেলিগেশন প্রধান রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইট লি। উপস্থিত ছিলেন জার্মানির রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রস্টার, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার, ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দো, সুইডেনের রাস্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে, নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স থিজস ওয়াউডস্ট্রা, ইইউ ডেলিগেশনের উপপ্রধান ড. বার্ল্ড স্প্যানিয়ার, স্প্যানিশ দূতাবাসের কমার্সিয়াল অ্যাটাসে এসথার পেরেজ ও বাংলাদেশে ইইউর বাণিজ্য উপদেস্টা আবু সৈয়দ বেলাল। বৈঠকে বিজিএমইএর পক্ষে নেতৃত্ব দেন সংগঠনের সভাপতি এস এম মান্নান কচি। সিনিয়র সহ–সভাপতি  খন্দকার রফিকুল ইসলাম, সহসভাপতি আরশাদ জামাল দীপু, নাসির উদ্দিন, মিরান আলী, আব্দুল্লাহ হিল রাকিবসহ পরিচালকরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি ইইউ জোটে বর্তমান শুল্কমুক্ত সুবিধা ইভরি থিং বাট আর্মস (ইবিএ) স্কিম অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান। এ অনুরোধের যৌক্তিকতা তুলে ধরে এস এম  মান্নান কচি বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ টেকসই করা এবং অর্থনেতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে রপ্তানি বাণিজ্যের গতি ধরে রাখা প্রয়োজন। বিকল্প হিসেবে ‘জিএসপি প্লাস’ স্কিমের আওতায় যাতে বাংলাদেশ বর্তমানের মত অব্যাহতভাবে একই অগ্রাধিকার সুবিধা ভোগ করতে পারে, সে ব্যাপারে রাষ্ট্রদূতদের সহযোগিতা চান তিনি।

প্রসঙ্গত, এলডিসি থেকে উত্তরণের শেষ পর্যায়ে রয়েছে বাংলাদেশ। আগামী ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে  বেরিয়ে যাওয়ার কথা। তবে এরপর আরও তিন বছর বাংলাদেশের  পণ্য আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে ইইউ।

বৈঠকে পোশাক খাতে বাংলাদেশের বিভিন্ন অর্জন কুটনীতিকদের সামনে তুলে ধরেন বিজিএমইএ সভাপতি। বিশেষ করে  নিরাপদ কর্মপরিবেশ, শ্রমিক কল্যাণ ও বিশ্বের মধ্যে সর্বাধিক সবুজ  কারখানা থাকার সাফল্য তুলে ধরেন তিনি। আগামীতে এ ধারবাহিকতা রক্ষায় ইইউর সহযোগিতা চান তিনি। ইইউর নতুন আইন সাসটেইনেবিলিটি ডিউ ডিলিজেন্স ডাইরেক্টিভ (সিএসডিডিডি) পরিপালন প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি শিল্পের সক্ষমতা বাড়াতে সহযোগিতা চান। বিশেষ  করে পোশাক পণ্যের ন্যায্য দর নিশ্চিত করা এবং  নৈতিকতা মেনে চলার বিষয়ে নিজ নিজ দেশের ক্রেতাদের অনুরোধ জানাতে রাষ্ট্রদূতদের প্রতি আহবান জানান।

ইইউ বাজারে ব্যবহৃত সব ধরনের পণ্যের উৎপাদন বিপণনসহ সরবরাহ চেইনের সব পর্যায়ে আবশ্যকভাবে পালন নিশ্চিত করতে গত মার্চে সিএসডিডিডি পাস করে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। যে সব দেশ থেকে পণ্য আমদানি করা হয় সে সব দেশের সংশ্লিস্ট পণ্য উৎপাদন পর্যায়ে এ ডিউ ডিলিজেন্স পরিপালন করার বাধ্যবাধকতা তৈরি হল। ইইউ বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের প্রধান গন্তব্য। মোট রপ্তানির ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ যায় জোটের দেশগুলোতে।

আরও পড়ুন

×