এস আলমকে নিয়ে নিরবতা, প্রশ্নের মুখে বিএফআইইউ

লোগো
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২৪ | ২৩:৪৪
বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাজার–হাজার কোটি টাকা নিয়ে পাচারের সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে সমালোচিত ব্যবসায়ী গ্রুপ এস আলমের বিরুদ্ধে। গ্রুপটির বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, দুদক ও বিএসইসি বিভিন্ন ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। এরকম সময়েও অর্থপাচার নিয়ে কাজ করা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) নিরবতা নিয়ে কর্মকর্তাদের প্রশ্নের মুখে পড়েছে সংস্থাটি।
বুধবার (২১ আগস্ট) অনুষ্ঠিত নিয়মিত সভায় অর্থপাচারকারীদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না; তা নিয়ে একাধিক কর্মকর্তা প্রশ্ন তুলেন। বিএফআইইউর একাধিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
জানা গেছে, বিএফআইইউর উপ–প্রধান রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে বুধবারের সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিএফআইইউর সভা কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে একাধিক কর্মকর্তা প্রশ্ন করেন, এস আলম গ্রুপ, সামিট, ওরিয়ন, ব্যাংক খাতের সমালোচিত চৌধুরী নাফিজ সরাফতসহ অনেকের অর্থপাচারের সুনির্দিষ্ট তথ্য বিএফআইইউতে আছে। বিভিন্ন সময়ে এদের অনিয়ম নিয়ে সংবাদপত্রে রিপোর্ট হয়েছে।
এতদিন বলা হয়েছে– চাপের কারণে ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। এখন তো আর সেই চাপ নেই। বরং বর্তমান সরকার অর্থপাচারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছে। তাহলে এখনও কেন এসব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নজিরবিহীন বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হন বিএফআইইউ প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস, ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান ও খুরশীদ আলম এবং নীতি উপদেষ্টা আবু ফরাহ মো. নাছের। সরকার পতনের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে সাবেক মন্ত্রী, এমপি, রাজনীতিবিদ, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে বিএফআইইউ। তবে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে অর্থপাচারে মূল অভিযুক্তদের কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বিএফআইইউর কয়েকজন কর্মকর্তা আজ সমকালকে বলেন, গত কয়েক বছরে দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি অর্থপাচার করেছে এস আলম গ্রুপ। তার অর্থপাচারের সুনির্দিষ্ট তথ্য সংস্থাটির কাছে আছে। এস আলমসহ অন্য অনেকের তথ্য রয়েছে। এরপরও অদৃশ্য কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা ৬ ব্যাংকের ঋণ বিতরণে গত ১৯ আগস্ট বিধিনিষেধ আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে গত ১৬ আগস্ট এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা ব্যাংকগুলোর চলতি হিসাব ঘাটতি থাকা অবস্থায় যেন অন্য ব্যাংক এক কোটি টাকার বেশি চেক নগদায়ন না করে সে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরই মধ্যে এস আলমের শেয়ার হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বিএসইসি। ইসলামী ব্যাংক ছাড়াও এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা ৬ ব্যাংকের সব পরিচালক এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সব বিও অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গ্রুপটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে।