সোমবার কলমবিরতির ডাক এনবিআর ঐক্য পরিষদের
৩০১ সদস্যের এডহক কমিটি গঠন

এনবিআর ভবনের অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন এনবিআর কর্মকর্তারা
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৫ | ২১:৩০
আবারও অবস্থান কর্মসূচি ও তিন ঘণ্টার কলম বিরতির ডাক দিয়েছে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’। আগামী সোমবার সারাদেশে এই কর্মসূচি পালন করবেন তারা।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের রাজস্ব ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান মোহাম্মদ তারেক রিকাবদার ও মহাসচিব সেহেলা সিদ্দিকা।
সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এনবিআরের চেয়ারম্যানের অপসারণ ও সংস্থাটি বিভক্ত করে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও নীতি নামে দু’টি স্বতন্ত্র বিভাগ গঠন করার প্রক্রিয়ায় পরিষদের প্রতিনিধিত্ব রাখার দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করা হবে। তবে রোববার বাজেট পাসের কার্যক্রম থাকায় আগামী সোমবার ঢাকায় সব দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এনবিআরে অবস্থান কর্মসূচি ও কলমবিরতি পালন করবেন। অন্য দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্ব-স্ব দপ্তরে একই সময়ে এই কর্মসূচি পালন করবেন।
সংবাদ সম্মেলনের পর ঐক্য পরিষদের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শনিবার বিকেল ৫টায় রাজস্ব ভবনের নিচতলার মেঝেতে ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভা হয়। সভায় অতিরিক্ত কর কমিশনার হাসান মুহম্মদ তারেক রিকাবদারকে সভাপতি এবং অতিরিক্ত কর কমিশনার সেহেলা সিদ্দিকাকে মহাসচিব করে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ৩০১ সদস্যের একটি এডহক কমিটি গঠনের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
এতে আরও বলা হয়, ঐক্য পরিষদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী সামগ্রিক রাজস্ব সংস্কার ভাবনার অংশ হিসেবে ‘কেমন এনবিআর চাই’ শীর্ষক সেমিনার আয়োজনে ১৯ জুন একটি প্রস্তুতিমূলক সভার জন্য কক্ষ বরাদ্দ চেয়ে লিখিত পত্র দিলেও কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। সেজন্য রাজস্ব ভবনের নিচতলার মেঝেতে সভাটি করা হয়। এর আগে গত ২ জুন ‘একইভাবে কক্ষ বরাদ্দ না দেওয়ায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজস্ব ভবনের নিচ তলার মেঝেতে’ সভা করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ-২০২৫’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আয়কর ও কাস্টমস বিভাগের ছয়জন কর্মকর্তার সমন্বয়ে একটি কমিটি করে অফিস আদেশ জারি করেছে এনবিআর। এ কমিটিতে ঐক্য পরিষদের কোনো প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, এমনকি তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনাও করা হয়নি। এতে বোঝা যায়, চেয়ারম্যানের মাধ্যমে রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক কার্যক্রম সময়ক্ষেপণ ছাড়া আর কিছু নয়।
গত ১২ মে এনবিআর দুই ভাগ করে অধ্যাদেশ জারির পর তা বাতিলের দাবিতে কলমবিরতিসহ নানা কর্মসূচিতে আন্দোলনে নামেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের আন্দোলনের মুখে অধ্যাদেশ বাস্তবায়নে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে আশ্বাস দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। এরপর কাজে যোগ দিলেও আন্দোলনকারীরা এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি অব্যাহত রাখেন এবং এনবিআরে তাকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেন। তবে এনবিআর চেয়ারম্যান স্বাভাবিক কাজে ফিরলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে এখনও তার দূরত্ব রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে ঐক্য পরিষদ বলেছে, সংস্কার কর্মসূচিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক বদলি ও নিপীড়নের খড়গ নেমে এসেছে। সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকা সত্ত্বেও রাজস্ব ভবন ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে উস্কানিমূলক পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে।