ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

প্লাস্টিক সংগ্রহ বাড়তি আয়ের উৎস

প্লাস্টিক সংগ্রহ বাড়তি আয়ের উৎস

.

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৫ | ২৩:৫৩

বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রামে প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়, যার মধ্যে প্রায় ২৪৯ টন প্লাস্টিক বর্জ্য। প্লাস্টিক খাল-নালা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা বন্ধ করে দিয়ে পরিবেশ দূষণ, জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি এবং শহরের জলাবদ্ধতা প্রকট করে তোলে। এই পরিবেশগত সংকট মোকাবিলায় ২০২২ সালের জুন মাসে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি), ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড (ইউবিএল) ও উন্নয়ন সংস্থা ইপসার মধ্যে একটি অংশীদারিত্ব চালু হয়। 
ইউনিলিভার বাংলাদেশ জানিয়েছে, এ উদ্যোগের আওতায় গত এপ্রিল পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরী থেকে ২৪ হাজার টনের বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, যা শহরের প্লাস্টিক বর্জ্যের প্রায় ১০ শতাংশ। এর মাধ্যমে তিন হাজারের বেশি বর্জ্যকর্মীকে নিরাপদভাবে বর্জ্য সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ১ হাজার ৮২৭ জন বর্জ্য সংগ্রাহক ও ভাঙারিওয়ালাকে আনা হয়েছে গ্রুপ লাইফ ইন্স্যুরেন্সের আওতায়, যেখানে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর জন্য সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা ও চিকিৎসা-সংক্রান্ত অন্যান্য খরচের নিশ্চয়তা রয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে ১৫ হাজারের বেশি পরিবার এবং প্রায় সাত হাজার স্কুল শিক্ষার্থীকে উৎসস্থলে বর্জ্য পৃথকীকরণ ও পুনর্ব্যবহার বিষয়ে সচেতন করা হয়েছে। 

সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, প্লাস্টিক বিক্রি অনেক পরিবারের জন্য অতিরিক্ত আয়ের উৎস হয়ে উঠেছে। সংশ্লিষ্ট ৭৫ শতাংশ পরিবার তাদের আয়ে ইতিবাচক পরিবর্তনের কথা জানিয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে সংগ্রহ প্লাস্টিকের পরিমাণ ও কার্যক্রম ওয়ার্ড কাউন্সিলরের প্রত্যয়নপত্রের মাধ্যমে যাচাই করা হয়। 
জরিপে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রায় ৯৯ শতাংশ বর্জ্যকর্মী তাদের মাসিক আয়ে উন্নতির কথা জানিয়েছেন। ৯১ শতাংশ এখন নিয়মিতভাবে সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার করছে। নিয়মিত সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহারের ফলে অনেকেই জানিয়েছেন, শারীরিক অসুস্থতা ও দুর্ঘটনার হার আগের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ৮৮ শতাংশ পরিবার এবং ভাঙারিওয়ালা এখন বিকাশ, নগদের মতো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছেন। ৯৫ শতাংশ পরিবার এখন প্লাস্টিক বিক্রয়ে অংশ নিচ্ছে, যাদের এক-তৃতীয়াংশ এই উদ্যোগ চালুর পর যুক্ত হয়েছেন। 

ইউনিলিভার বাংলাদেশ মনে করে, অনানুষ্ঠানিক প্লাস্টিক সংগ্রাহকরাই টেকসই পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি। তাদের স্বাস্থ্য, সুরক্ষা ও জীবিকার নিশ্চয়তার মাধ্যমে এ উদ্যোগ একটি প্রতিফলনযোগ্য মডেল দাঁড় করিয়েছে, যেখানে করপোরেট দায়িত্ববোধ, স্থানীয় সরকার ও সমাজভিত্তিক সংগঠন মিলিতভাবে পরিবেশবান্ধব ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শহর ভবিষ্যতের রূপরেখা তৈরি করেছে। 

আরও পড়ুন

×