ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

লেভেলক্রসিং সুরক্ষিত হইতে কত দেরি

লেভেলক্রসিং সুরক্ষিত হইতে কত দেরি

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৩ | ১৮:০০

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে লেভেলক্রসিংয়ে পুলিশের পিকআপ ভ্যানে ট্রেনের ধাক্কায় নিহত তিন কনস্টেবলের পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা। দুর্ঘটনায় আহতদের আশু সুস্থতাও কামনা করিতেছি। সমকালের প্রতিবেদনে বলা হইয়াছে, দুর্ঘটনার সময় গেটম্যান উপস্থিত ছিল না। ফলে রেলক্রসিং ছিল উন্মুক্ত। ঘটনার পর হইতে গেটম্যান পলাতক। তাহার বিরুদ্ধে মামলা হইয়াছে।

রেল কর্তৃপক্ষ জানাইয়াছে, গেটম্যানকে বরখাস্ত করা হইয়াছে। সমকালের প্রতিবেদনে প্রকাশ, গেটম্যান রেলওয়ের অস্থায়ী কর্মচারী এবং দীর্ঘদিন ধরিয়া বিনা বেতনে চাকরি করিয়া আসিতেছে। সুতরাং মূল দোষ কার? অবৈতনিকের, নাকি বৈতনিক কর্তৃপক্ষের?

নিয়ম অনুযায়ী সকল লেভেলক্রসিংয়ে সার্বক্ষণিক গেটম্যান থাকিবার কথা। অস্থায়ী ভিত্তিতে জনবল নিয়োগ দেওয়া অন্যায় নহে। কিন্তু বিনা বেতনে কর্ম সম্পন্ন করাইবার ফন্দি আঁটিলে পরিণাম এমনই হইয়া থাকে। কাজেই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এই দুর্ঘটনার দায় এড়াইতে পারে না। কর্মীকে বরখাস্ত করিলেই নিজেদের অপরাধ আড়াল করা যাইবে না। শাক দিয়া মাছ ঢাকিবার মানসিকতা পরিহারকরত সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দায়ীদের শনাক্ত করিয়া আইনি বেষ্টনীতে আনয়ন জরুরি। বেশ কয়েক বৎসর ধরিয়া রেলের আধুনিকায়ন হইয়াছে। বিনা টিকিটে রেল ভ্রমণকারীদের ধরিতেও হাতে ছাই লাগানো হইতেছে। এই সকল উদ্যোগ ধন্যবাদার্হ। কিন্তু লেভেলক্রসিং অরক্ষিত রাখিয়া এই খাতকে নিরাপদ করা যাইবে না।

সীতাকুণ্ডের দুর্ঘটনা আমাদের চক্ষে আঙুল দিয়া দেখাইয়া দিল, লেভেলক্রসিং সুরক্ষিত করিতে না পারিলে মুহূর্তের মধ্যে কীভাবে তাজা প্রাণ ঝরিয়া যাইতে পারে। সীতাকুণ্ডে গেটম্যান না আসিলে স্থানীয়রা আকার-ইঙ্গিত ও আওয়াজ দিয়া যানবাহন ও পথচারীকে সতর্ক করিত। ইহা খুবই অগ্রহণযোগ্য পদ্ধতি। দেশের ৮৫ শতাংশ লেভেলক্রসিংই অরক্ষিত। ইহার মধ্যে অবৈধ ক্রসিংও সংখ্যায় অল্প নহে।

কর্তৃপক্ষের জরুরি কর্তব্য অবৈধ ক্রসিং বন্ধ এবং সকল বৈধ ক্রসিংকে সুরক্ষিত করা। উহার ব্যর্থতায় দুর্ঘটনার লাগাম টানিয়া ধরা কঠিন হইবে।

আরও পড়ুন

×