ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

দর্শক থাকা সত্ত্বেও সিনেপ্লেক্স থেকে নেমে গেল ঈদের সব ছবি!

দর্শক থাকা সত্ত্বেও সিনেপ্লেক্স থেকে নেমে গেল ঈদের সব ছবি!

গিয়াসউদ্দিন সেলিম, হিমেল আশরাফ ও মিশুক মনির

বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ মে ২০২৪ | ২০:৪৪ | আপডেট: ০১ মে ২০২৪ | ২০:৫৪

গেল ঈদে মুক্তি পায় মোট ১১টি সিনেমা! এগুলোর মধ্যে স্টার সিনেপ্লেক্স চালায় ৮টি ছবি। প্রথম সপ্তাহে বেশ কয়েকটা ছবি নেমে গেলেও শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলো ‘রাজকুমার’, কাজলরেখা, দেয়ালের দেশ, ওমর। কিন্তু চতুর্থ সপ্তাহে এসে আচমকা সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানায়, ঈদের কোনো ছবি শুক্রবার থেকে আর চলবে না!

যেখানে যোগ হচ্ছে ‘শ্যামা কাব্য’ ও ‘ডেড বডি’ নামে দুটি নতুন বাংলা ছবি এবং একাধিক হলিউড ও বলিউড ছবি। স্টার সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের এমন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ‘রাজকুমার’, ‘দেয়ালের দেশ’ ও ‘কাজলরেখা’ ছবির তিন নির্মাতা। সমাজমাধ্যমে তারা আলাদাভাবে সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের এমন আচরণের সমালোচনা করেন। কারণ ছাড়াই ‘হাউজফুল’ ছবি নামিয়ে দেয়ারও অভিযোগ তুলেন গিয়াস উদ্দিন সেলিম, হিমেল আশরাফ এবং মিশুক মনি।

নির্মাতারা তাদের প্রতিক্রিয়ায় একটাই অভিযোগ করেন- ৩ মে থেকে দেশের সবচেয়ে বড় মাল্টিপ্লেক্স চেইন স্টার সিনেপ্লেক্স ঈদের সবগুলো সিনেমা নামিয়ে দিচ্ছে তাদের শো-সিডিউল থেকে। বিনিময়ে তুলছে বিদেশি ছবি। তারা বলছেন, শো ভালো যাওয়ার পরেও এমন করা হয়েছে।

‘রাজকুমার’ নির্মাতা হিমেল আশরাফ প্রশ্ন রেখে বলেন, “ঠিক গত সপ্তাহে টিকিট বিক্রিতে ১ নাম্বারে ছিল যেই সিনেমা, সেই সিনেমার কোনও শো পরের সপ্তাহে নেই, ১টা শো-ও না! ঈদের সবগুলো বাংলা সিনেমা উধাও হয়ে গেল! প্রতিদিন ৫০টার ওপরে শো স্টার সিনেপ্লেক্সের। এর মধ্যে ১টা শো পাওয়ার যোগ্যতা নেই ঈদের কোনও সিনেমার?”

একইভাবে নিজ নিজ ছবির আজকের (১ মে) টিকিট বিক্রির উদাহরণ টেনে কাছাকাছি প্রতিক্রিয়া বা হতাশা ব্যক্ত করেছেন ‘কাজলরেখা’র নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিম এবং ‘দেয়ালের দেশ’ নির্মাতা মিশুক মনি।

ঈদের তিন সপ্তাহের মাথায় তিন নির্মাতার এমন জোটবদ্ধ প্রতিক্রিয়া অনেকটাই থমকে গেছে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি। বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন বাংলা সিনেমার দর্শকরা থেকে পরিচিত মুখরাও। বিপরীতে এটাও তো প্রশ্ন, কেন স্টার সিনেপ্লেক্স ‘হাউজফুল’ বাংলা সিনেমাকে ফেলে বিদেশের ছবি তুলবে! তাও আবার এরমধ্যে মুক্তি পাওয়া বিদেশি ছবিগুলোও পায়নি দর্শকপ্রিয়তা।

২৬ এপ্রিল স্টার সিনেপ্লেক্স মুক্তি দিয়েছিলো আলোচিত স্প্যানিশ ভাষায় নির্মিত আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জয়ের ডকুফিল্ম ‘মুচাচোস’। সেটি এরমধ্যে ভালো পায়নি দর্শক। বুধবার (১ মে) মাল্টিপ্লেক্সটি মুক্তি দিয়েছে হলিউডের আলোচিত নতুন ছবি ‘দ্য ফল গাই’। প্রথম দিনেই এটির টিকিট কাটতি হতাশাজনক। তাহলে কী কারণে স্টার সিনেপ্লেক্স ‘প্রায় হাউজফুল’ বাংলাদেশি ছবিগুলো নামিয়ে দিচ্ছে?

এমন প্রশ্ন কিংবা অভিযোগের জবাবে প্রতিষ্ঠানটির মিডিয়া ও মার্কেটিং বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রথমত আমরাও বাংলাদেশি। এই প্রতিষ্ঠান বিদেশি নয়। এই প্রতিষ্ঠান নিজেরাও বাংলা ‍ৃসিনেমা প্রযোজনা করে। দেশের প্রতিটি সিনেমার প্রতি আমাদের আন্তরিকতা ও সততা রয়েছে সবসময়। দেশের প্রতিটি নির্মাতা-প্রযোজকের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও আগ্রহ বরাবরই বেশি। অথচ আজ মে দিবসে যে অভিযোগটি উঠলো স্টার সিনেপ্লেক্সের বিরুদ্ধে, সেটি তুলতে আমরা কেউ একটিবারও ভাবিনি। এটাই আসলে খারাপ লাগার বিষয়। কিন্তু আবেগে তো আর ইন্ডাস্ট্রি চলে না। টানা তিন সপ্তাহ কেন, ছয় সপ্তাহ চালানোর পরেও যদি কোনও সিনেমার দর্শক থাকে, সেটি নামিয়ে দিলে আপত্তি বা অভিযোগ উঠবেই। সেই অভিযোগটাই তুলেছেন নির্মাতারা।

এদিকে ‌‘কাজলরেখা’ নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিমের আহ্বান, ‘‘বসুন্ধরায় আজকের ৪টা ৩০ এর শো হাউজফুল। তারপরও আগামী শুক্রবার থেকে বিদেশি ছবির জন্য ‘কাজলরেখা’র কোনও শো নাই। কেন? ঈদের অন্য সিনেমাগুলোও নামিয়ে দেয়া হচ্ছে। অন্তত ৪০% শো বরাদ্দ দেশি সিনেমার জন্য রাখার অনুরোধ করছি।’’

আরও পড়ুন

×