ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

আমরা যদি থেমে থাকি তাহলে আমাদেরই ক্ষতি: তারিক আনাম

আমরা যদি থেমে থাকি তাহলে আমাদেরই ক্ষতি: তারিক আনাম

ছবি: সংগৃহীত

বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৪ | ১৭:৪০ | আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৪ | ১৮:৪২

‘সিনেমা সত্য জানার প্রশস্ত একটি পথ। সেই সিনেমা এখন ভয়াবহ দিকে রূপ নিচ্ছে। দেশের প্রেক্ষাপটে নানা প্রতিবন্ধকতা ভেবে আমরা যদি থেমে থাকি তাহলে আমাদেরই ক্ষতি। কারণ পুরো বিশ্বে সিনেমা কিন্তু থেমে নেই। বাংলাদেশে টিভি নাটক আগের তুলনায় অনেক কম। তাই বলে নাটক কি বন্ধ হয়ে গেছে? এখন ইউটিউবসহ ওটিটির নানা মাধ্যম এসেছে। সঙ্গে বাজেটও বেড়েছে। সেগুলোতে শিল্পী-কলাকুশলীরা কাজের সুযোগ পাচ্ছে। এটা সত্য, সংস্কৃতি তার পথ খুঁজে নেয়। কিন্তু আমাদের কাজের মান বাড়ছে না। চলচ্চিত্রে আমরা যদি কাজের মান বাড়াতে পারি তাহলেই আমরা আমাদের কাঙ্খিত জায়গায় পৌছাতে পারবো।’

শনিবার দুপুরে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমীর চিত্রশালায় টেলিভিশন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন (টেজাব) আয়োজিত চলচ্চিত্র বিষয়ক সংলাপে এসব কথা বলেন অভিনেতা তারিক আনাম খান।

টেজাবের সভাপতি নাজমুল আলাম রানার সভাপতিত্তে ও সাধারণ সম্পাদক বুলবুল আহমেদ জয়ের সঞ্চালনায় ‘চলচ্চিত্রের চাঁদমারি : প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ’ শিরোনামের প্রবন্ধ পাঠ করেন চলচ্চিত্র সমালোচক বিধান রিবেরু।

সংলাপে তারিক আনাম খান আরও বলেন, ‘আমরা যদি ভারতীয় শিল্পীদের কথা বলি তাহলে রাজনীকান্তের কথা বলতেই হয়। কীভাবে তিনি এই বয়সেও কাজ করে চলেছে। তাদের নিয়ে গল্প হচ্ছে। সেগুলো গল্প আবার সুপারহিট তকমা পাচ্ছে। এখনো তার সিনেমা দেখার জন্য ভোর চারটায় মানুষ লাইন ধরে টিকিট কাটছে। কী আছে সেই সিনেমায়? আমাদের এমন জয়গা তৈরি করতে হবে।’

সংলাপে অতিথি ছিলেন পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াত, শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, সিনেপ্লেক্স এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর খালেদ আহমেদ শাম্মি, রায়হান রাফি, গিয়াস উদ্দিন সেলিম আরিফুর রহমান (সদস্য, চলচ্চিত্র বিষয়ক জাত পরামর্শক কমিটি, নির্মাতা ও প্রযোজক) তিতাস জিয়া (অভিনেতা, শিক্ষক, সদস্য- পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদান কমিটি), মো. মনিরুজ্জামান খান (নির্বাহী প্রকৌশলী, বিএফডিসি)।

কাজী হায়াৎ বলেন, ‘আমি পদাধিকার বলে চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্য। সেই সুবাদে দুই-আড়াই ঘণ্টা বসে থেকে প্রত্যেকটি সিনেমা দেখতে হয়। আজকের চলচ্চিত্রের যে অবস্থা তা দেখে মাঝে মাঝে খুব কষ্ট পাই। যেখানে নান্দনিক কিছুই খুঁজে পাইনা। প্রচুর ছবি হচ্ছে কিন্তু ভালো ছবি হচ্ছে না। ঈদের দুই/একটা ছবি বাদে কোনো ছবিই ব্যবসা করছে না।  ফলে পুরো বছর দর্শক থাকছে না। আমরা দর্শক ধরে রাখতে পারছি না। দর্শক থাকলে সিনেমা হল, ডাবল স্ক্রিন, সিনেপ্লেক্স থাকবে। কিন্তু সেই দর্শকদের জন্য তো আমরা কিছু করতে পাচ্ছি না। তাদের তো আমরা ভালো ছবি দিতে পারছি না। সিনেমা বাঁচাতে হলে আমাদের ভালো আমাদের ভালো কন্টেন্ট দরকার। তাহলেই সব সমস্যা দূর হয়ে যাবে।’

দেশে সিনেমার মার্কেট আছে শত কোটি টাকার। যেসব সিনেমা হল চালু আছে, সেগুলোতে যদি টানা দুই মাস যদি মুক্তি প্রাপ্ত ছবি ভালো চলে তবে শত কোটি টাকা ব্যবসা করা সম্ভব বলে বলে মনে করেন প্রযোজক শাহরিয়ার শাকিল।

তিনি বলেন, ফিল্মে কিছু পলিসি আছে এগুলো অতি দ্রুত চেঞ্জ করা উচিত। যদি চেঞ্জ করা যায়, তবে যে কোন সিনেমা মোটামুটি ভাবে রেভিনিউ তুলে আনা সম্ভব। গল্পের প্রয়োজনে অনেক ভায়োলেন্স বা সত্যটা দেখাতে গেলে সেটা দেখানো যায় না। নতুন যে সার্টিফিকেশন বোর্ড হয়েছে আগের থেকে এখানে কি কি পার্থক্য এবং 'ল' আছে সে বিষয়গুলো ভালোভাবে জানানো উচিত।  বাংলাদেশের যে সিঙ্গেল স্কিম গুলাতে আছে সেগুলোতে কত টাকা টিকিট বিক্রি হচ্ছে তা ঠিকঠাক হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না। হলে প্রতিনিধি পাঠানো হয় প্রতিনিধিকে পাহারা দেয়ার জন্য আরেকজন প্রতিনিধি পাঠাতে হয়। এতে করে সরকার ঠিকভাবে ট্যাক্স পাচ্ছে না। সরকার যদি বক্স অফিস ও ই টিকেটিং ব্যবস্থা করে দেয়, তাহলে সঠিক ট্যাক্স পাবে এবং আমরা ব্যবসা করতে পারব। 

প্রযোজক আবদুল আজিজের কথায়, ‘সরকার প্রতিবছর বিশ কোটি টাকা সিনেমায় অনুদান দিচ্ছে। এটা বন্ধ করে তিনটি সিনেপ্লেক্স করে দেয়া উচিত। এতে ইন্ডাস্ট্রি ঠিকবে। যেভাবে অনুদান দেয়া হয় এতে ইন্ডাস্ট্রির কোনো লাভ হয় না। পাশাপাশি যৌথ প্রযোজনার নিয়ম গুলো চেঞ্জ করা উচিত। এতে করে দুধ এসে বড় বাজেটের সিনেমা নির্মাণ করা সম্ভব হবে। যৌথ প্রযোজনার সিনেমাগুলো দিয়েই আমরা অতীতে দেখেছি দর্শকের দল নেমেছে।’

আরও পড়ুন

×