ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

প্রচ্ছদ

অরণ্যবাসের গান, নির্জনতা

অরণ্যবাসের গান, নির্জনতা

ইনাম আল হক

প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ২৪ আগস্ট ২০২৩ | ১৮:৪০

দীর্ঘ অরণ্যবাসের সুযোগ জীবনে আজও আসেনি। কিন্তু অরণ্যবাসের স্পৃহাটা মনের কোণে জেগে আছে সেই কৈশোর থেকে। তার অনেক কারণও আছে। শৈশবে শোনা কিংবা পড়া গল্প-গাথা আর কাব্য-কাহিনিতে নায়কমাত্রই অরণ্যবাস করতেন। মুনি-ঋষিরা অরণ্যবাস করতেন আজীবন; আর কথায় কথায় রাজপুত্ররা অরণ্যবাসে চলে যেতেন ১২ বছরের জন্য। প্রজাপালনের মহান কর্তব্য মাথায় নিয়ে লোকালয়ে ফিরলেও সেই রাজপুত্র চিরদিন মহীয়ান জ্ঞান করতেন অরণ্যবাসকে। অরণ্যবাস ছিল রাজন্যকুলের চিত্তশুদ্ধির আবশ্যিক অধ্যায়।
আমার কৈশোরে অরণ্যই হলো শান্তির, স্বস্তির আর সম্প্রীতির স্থান। অরণ্যে কোনো কোলাহল, কলহ কিংবা বিবাদ নেই। যুদ্ধের পরেই তো রাজপুত্ররা যান অরণ্যবাসে। যুদ্ধে হেরে গেলে তো বনবাস অবধারিত; আবার যুদ্ধে জিতেও তারা বনবাসে যান মন থেকে হত্যা আর হিংসার ক্ষত সারিয়ে ও সরিয়ে নিতে। অরণ্যে তেমনই নেই ধনী-দরিদ্রে পার্থক্য; আছে স্বর্গের সাম্য। অরণ্যে সবাই ধূলিতে আসীন অথবা দূর্বায় শয়ান। সম্পূর্ণ নিরাবরণ কিংবা কৌপীনপরা মুনি-ঋষিরাই হলো অরণ্যের সম্রাট। সেখানে কেউই মাথায় মণিমুক্তা খচিত সোনার মুকুট অথবা অপর কোনো বিজ্ঞাপন বহন করেন না।        
শিশুতোষ বইপত্রে এইসব অরণ্যের কিছু আঁকা-ছবিও দেখেছি। কিন্তু সত্যিকারের অরণ্য দেখার ভাগ্য হয়নি শৈশবে ও কৈশোরে। তাই অসামান্য সেইসব অরণ্যের ছবি মন থেকে মুছে গেছে ধীরে ধীরে।  সেকালে কিশোরের জন্য লেখা বইপুস্তকে নিজ দেশের অরণ্যের কথা লেখা হতো না। যদিও আমার জন্মের আগেই বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘আরণ্যক’ উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়েছে; মফস্বলের কম মানুষই তা পড়েছিলেন। ঘরের কাছেই যে সুন্দরবনের মতো অনন্য এক অরণ্য এই দেশটিকে আগলে দাঁড়িয়ে আছে, সে সংবাদটি শিশুকে দেওয়ার মতো পিতামাতা ও শিক্ষক তখন কমই ছিলেন।                 
যৌবনের প্রারম্ভে আমার মনে আবার অরণ্যবাসের তাগিদ নতুন করে জেগেছিল ‘ওয়াল্ডেন’ শিরোনামে একটি বই পড়ার পর। হেনরি ডেভিড থরোর লেখা ক্ষুদ্র এ বইটি যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে এবং তার প্রায় দুইশত বছর পর আজও বইটির নতুন নতুন সংস্করণ প্রকাশিত হয়েই চলেছে। এই অতি-প্রকাশনার ফলেই বাংলাদেশের একটি মফস্বল শহরে বাস করেও তারুণ্যে আমি সে বই একদিন নাগালে পেয়েছিলাম এবং বইটি পড়ে আমি পত্রপাঠ অরণ্যবাসের জন্য মনে মনে প্রস্তুত হয়েছিলাম।    
ম্যাসাচুসেটস রাজ্যের কনকর্ড এলাকায় ওয়াল্ডেন নামের একটি বিশাল জলাশয়ের পাড়ে গহিন বনে একটি কাঠের ঘর বানিয়ে হেনরি ডেভিড থরো একাকী বসবাস করেছিলেন সোয়া দুই বছর। নিজ হাতে গড়া দশ ফুট প্রস্থ ও পনেরো ফুট দীর্ঘ সে ঘর বানাতে তাঁর ব্যয় হয়েছিল ২৮ ডলারের মতো; তার মধ্যে ছিল আট ডলারের লাকড়ি আর চার ডলারের পেরেক। সেই অরণ্যবাস নিয়েই লেখা তাঁর বই ‘ওয়াল্ডেন’। বিশ্ব থেকে মুনি-ঋষিরা বিদায় হয়ে যাওয়ার হাজার বছর পর তিনি যেন নতুন করে অরণ্যবাসের মাহাত্ম্য মানুষের কাছে তুলে ধরার সংকল্প করেছিলেন।                
একাকী অরণ্যবাসের মাহাত্ম্যটা আসলে কী, সেটা মুনি-ঋষির মুখে শুনলেই বোধ করি শোভন মনে হয়; আমরা বললে কানে বাজে। তবু এখানে সেটা বলার একটা দায় আছে বলেই পণ্ডিতজনের পুস্তক থেকে ধারকর্জ করে সে কথা কিছুটা লিখছি; কিন্তু মনে রাখবেন, ভিক্ষার চাল কাঁড়া ও আকাঁড়া, মেশামেশি একাকার। মোদ্দা কথাটা হলো, একাকিত্ব মিললে তবেই আত্মোপলব্ধি ও আত্মশুদ্ধির সহজ সুযোগ মেলে; এবং অরণ্যবাসে গেলে মেলে একাকিত্বের বিশাল সুযোগ। বাড়তি লাভ হলো প্রকৃতির সাথে একাত্ম বোধ করার অপার তৃপ্তি এবং সম্ভবত মনের প্রসারতার বিপুল এক সম্ভাবনা। লোকালয় লোককে শুধু যে আলয় দিয়েছে তা নয়; তাকে বানিয়ে ফেলেছে আলয়ের কৃতদাস।         
রলফ ওয়াল্ডো এমারসন লিখেছিলেন, ‘একাকী হওয়ার জন্য মানুষকে যেমন নিজ কক্ষ ছাড়তে হয়, তেমনই ছাড়তে হয় সামাজিক পরিমণ্ডলটিও। আমি যখন পড়ি অথবা লিখি তখন আমার পাশে কেউ না থাকলেও তো আমি একাকী নই। কেউ যদি সত্যিই একাকী হতে চায় তো তাকে আকাশের তারার দিকে তাকিয়ে থাকতে দাও।’
দুই বছর ধরে থরো তাকিয়ে ছিলেন ওয়াল্ডেন জলাশয়ের জমাট বাঁধা পানির দিকে, নীরবে দাঁড়ানো অরণ্যের অন্তহীন পত্রপল্লবের দিকে, আর ছায়াপথের অগুনতি তারার দিকে। দুই বছর পর লোকালয়ে ফিরে তিনি লিখেছেন ক্ষুদ্র সেই বই, যার নাম ‘ওয়াল্ডেন’।
তবে, থরোর ‘ওয়াল্ডেন’ তো যে সে বই নয়। এ বই সম্বন্ধে কবি রবার্ট ফ্রস্ট লিখেছেন, ‘আমরা সবাই আমেরিকায় লেখালিখি যা কিছু করেছি তিনি তার সবকিছু অতিক্রম করে গেছেন এই একটি বইয়ে। ‘একটি বই দিয়ে কী এমন অতিক্রম করা যায়! অন্তর্নিহিত সত্যগুলোর মুখোমুখি না হয়েই যদি গড্ডলিকার স্রোতে আমাদের জীবন ভেসে যেতে থাকে তা কি ঠেকাতে পারে একটি ক্ষুদ্র বই! না, বই তা পারে না। নিজের জীবনে থরো যা করেছিলেন সে অভিজ্ঞানটুকু তিনি লিখেছিলেন তাঁর বইটিতে। সে বই পড়ে অরণ্যবাসীর গভীর জীবনের দীপ্তি যদিওবা এক ঝলক আমাদের চোখে পড়ে; তাতে আমাদের জীবন বদলে যায় না।
ব্যাপ্তি ও লক্ষ্যে থরোর অরণ্যবাসের মতো কিছু না হলেও শৌখিন অরণ্যবাসের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সুযোগ আমি পেয়েছি জীবনে বহুবার। তবে আমার সেই নাতিদীর্ঘ অরণ্যবাসের উদ্যোগগুলো ছিল বিলাসী মানুষের প্রকৃতি সম্ভোগের অঙ্গমাত্র। এর মধ্যে আছে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত, শ্রীলঙ্কা, মাদাগাস্কার, কেনিয়া, উগান্ডা ও দক্ষিণ-আফ্রিকার কয়েকটি বনে কিছু দিন ও রাত্রি যাপনের অমূল্য অভিজ্ঞতা। অ্যান্টার্কটিকা, উত্তর মেরু ও অস্ট্রেলিয়ার ঊষর প্রান্তরে অবস্থানেরও ভাগ্য হয়েছে আমার। তবুও ঘরের কাছে সুন্দরবনের গহিনে থাকার অভিজ্ঞতাগুলো আমি অনায়াসে জীবনের শ্রেষ্ঠ আহরণ বলে মনে করি।
ছোট ছোট দলে অসংখ্যবার সুন্দরবন ভ্রমণ করলেও এই বনের গহিনে একাকী দশ দিন থাকার একটিই সুযোগ পেয়েছিলাম আমি। সেটা ছিল আইলা ও সিডর আঘাত হানার আগের সুন্দরবন। একটি ট্যুরিস্ট-বোট আমাকে কটকা জেটিতে নামিয়ে দিয়ে পরবর্তী ট্রিপে ফেরত নিয়ে যেতে রাজি হয়েছিল। আমার রাতের আস্তানা ছিল বন বিভাগের পরিত্যক্ত একটি কাঠের ঘর এবং সেখানে জমা ছিল আমার স্লিপিং-ব্যাগ, ১০ দিনের জন্য শুকনো খাবার আর বোতলের পানি। থরোর মতো জলাশয়ে মাছ শিকার করা, শিম ক্ষেতে পানি দেওয়া কিংবা পাস্তা রান্না করার বালাই ছিল না বলে কটকায় আমার সেইসব দিন সম্ভবত ছিল ওয়াল্ডেনের দিনগুলোর চেয়েও ধীরস্থির, নিবিড় ও প্রশান্ত।             
আমি সারাদিন কেওড়া বনে হেঁটে হেঁটে জোয়ারের জোরালো ধারাকে সশব্দে তেড়ে আসতে আর ভাটার পানিকে নীরবে নেমে যেতে দেখতাম। সব তর্জন-গর্জন উপেক্ষা করে হরিণের দল পানিতে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকত; জোয়ারের দৌড় কত দূর তা ওদের ঠিক জানা আছে। কেওড়ার ডালে যতক্ষণ বানরের বাহিনী পাতা খাচ্ছে ততক্ষণ হরিণের দল গাছের নিচ থেকে নড়বে না। কেওড়ার বনে বাটিছাঁট দেওয়ার মতো করে যতদূর নাগালে আসে হরিণেরা ততখানিই পাতা খেয়ে শেষ করেছে। এখন অপেক্ষা কেবল বেখেয়ালি বানরের হাত ফসকে পড়া পাতাপুতিগুলোর।
দিন গড়িয়ে গেলে আমি সেই ভাঙা ঘরের উঁচু পাটাতনে উঠে যেতাম। যদিও কটকা এলাকার বাঘ কস্মিনকালেও কোনো মানুষকে আক্রমণ করেনি, তবুও সন্ধ্যার পর গর্বভরে মাটিতে হেঁটে বেড়িয়ে তার সম্মানহানি তো করা যায় না! তাছাড়া, ধীরে হাঁটলেও সারা দিনের ক্লান্তি অবশেষে সাঁঝে মানুষের দেহে এসে ভর করে বৈকি। মেঘ না থাকলে পাটাতনের সামনে তারার আলোয় রহস্যময় সৈকত দেখা যায়। ভাটায় পানি নেমে গেলেই পরিষ্কার দেখা যায় কাদামাটিতে হাঁটছে হরিণের দল। মাটি থেকে হরিণেরা খুঁটে খাচ্ছে জোয়ারে ভেসে আসা পাতা আর ফল।      
চমৎকার এক চাঁদনী রাতে দেখি হরিণের পাশে হেঁটে যাচ্ছে দুটি সুগোল শূকর ও একটি বেঢপ মদনটাক। শূকর আর মদনটাক উভয়েই মাংসাশী। তারা খুঁজে বেড়াচ্ছে ভেসে আসা মাছ, সাপ কিংবা সমুদ্রের অন্য কোনো প্রাণীর মৃতদেহ। সবজিভোজী হরিণের সাথে তাদের না আছে কোনো বিরোধ; না আছে সংঘাত। তবুও তারা হরিণের সাথে সম্মানজনক দূরত্ব বজায় রেখেই কাদায় হাঁটছে। মনে হয় মর্দা-হরিণের মাথার শিংটিকে সবাই সমীহ করে।     
পাটাতনে বসে রাতের আকাশ দেখে আমার কিছুটা হলেও ধারণা হয়েছিল, এমারসন কেমন করে তারার দিকে তাকিয়ে থাকার সাথে দর্শকের একাকিত্ব-বোধের সমীকরণটি জানতে পেরেছিলেন। আকাশে চলমান মেঘ থাকলে আমি তার ফাঁকে ফাঁকে মজা করে চাঁদ ও তারার কনস্টিলেশনগুলো খুঁজে বেড়াতাম। সামনে গেওয়া বনের মগডাল থেকে হঠাৎ কোন বনমোরগ হাঁক ছাড়ত। তখন বনের দিকে টর্চের আলো ফেলে সেই হাঁকডাকের কারণ আবিষ্কারের ব্যর্থ চেষ্টা চালাতাম। সারাদিন মাটিতে হাঁটলেও রাতে বনমুরগি যে গাছে থাকে সেটা সুন্দরবনে সেই প্রথম দেখেছিলাম।                   
অরণ্যে একদা আদি-মানুষের নিবাস ছিল বলেই কি আজও বনের প্রতি আমাদের এই রহস্যজনক টানটুকু টিকে আছে? কিন্তু অরণ্যের সে নিবাস তো লুপ্ত হয়েছে ৫০ লাখ বছর আগে! তখন থেকে আদি-মানুষেরা খোলা প্রান্তরে বাস করে আসছে। তারপর মাত্র ১০ হাজার বছর ধরে মানুষ হয়েছে গৃহী। গৃহে বাস করে করে অবশেষে বিবাগি হলে কিংবা বৈরাগ্য সাধনে মন গেলে তো মানুষের উন্মুক্ত প্রান্তরে গিয়ে দাঁড়ানোর কথা। তার আবার বনের আচ্ছাদনের নিচে যাওয়ার ইচ্ছে করে কেন? এ প্রশ্নের উত্তর কারও জানা নেই। তবে উন্মুক্ত প্রান্তরের চেয়ে বনের দিকে টান যে মানুষের অনেক বেশি তাতে কারও সন্দেহ নেই।    
সুন্দরবনে একাকী কাটানো সেই দশটি দিনে আমার অনেকটা সময় কেটেছে থরোর ‘ওয়াল্ডেন’ পড়ে। ভেবে মজা পেয়েছি যে সুন্দরবনে একা অতদিন কী করেছিলাম তা কোনো কৌতূহলী বন্ধু জানতে চাইলে বলতে পারব, ওয়াল্ডেন পড়েছিলাম। সেই মন্থর দিনে পুরোনো বইয়ের ওই সুনিবিড় পাঠটি ছিল অত্যন্ত আনন্দের আর অপূর্ব উপলব্ধির এক পুনঃপঠন। মনে হয়েছিল যেন ‘ওয়াল্ডেন’ আমি আগে কখনও ভালো করে পাড়িনি। কনকর্ডের গহিন বনে একাকী কাটানো সেই দুটি বছর থরোর নিজের কথায় একটি ‘এক্সপেরিমেন্ট’ ছিল। তিনি লিখেছেন, ‘এই এক্সপেরিমেন্ট থেকে আমি বুঝেছি যে, কেউ যদি আত্মবিশ্বাস নিয়ে তার স্বপ্ন-পূরণের পথে হাঁটে এবং তার কল্পনার জীবনটিই যাপনের প্রচেষ্টা চালায় তাহলে সে যে সাফল্য পাবে, সেটা হবে সাদামাটা জীবনে আশার অতীত।’             
পৃথিবীর লোকালয়ে মানুষের সাদামাটা ও গতানুগতিক জীবন কিন্তু ভালোই চলে। তাই তো মানুষ লোকালয় সৃষ্টি করেছিল। তবে অনেক মানুষই নিজের মনের মতো করে জীবন গড়ে নেওয়ার কোনো সুযোগই পায় না। তাই অনেকের মনেই নীরবে জমা হতে থাকে অতৃপ্তি, হতাশা ও ক্ষোভ। অনেকের জীবনজুড়েই জমে ওঠে নীরব ক্ষোভ। থরোর কথায় ‘কোয়াইয়েট ডেস্পেরেশন’। যেচে দীর্ঘ অরণ্যবাসে গেলেও থরো কিন্তু মোটেই সমাজবিমুখ, আত্মমগ্ন কিংবা উদাসীন মানুষ ছিলেন না। বরং তার উল্টো। দেশে দাস প্রথা চালু রাখার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে তিনি কর দেওয়া বন্ধ করে জেলও খেটেছিলেন। সেই বিষয়টি নিয়ে ‘সিভিল ডিজওবিডিয়েন্স’ শিরোনামে তাঁর যে লেখাটি প্রকাশিত হয়েছিল তা দেশকালের গণ্ডি পেরিয়ে পৃথিবীর সর্বত্র গণমানুষের প্রতিবাদের ক্রোড়পত্র হিসেবে আজও ব্যবহৃত হচ্ছে।            
মনে আছে, সুন্দরবনে একাকী সেই অরণ্যবাসে পাখির গান আর বানরের কোলাহলে আমার ভোর হতো। অ্যালার্ম দেওয়ার জন্য কোনো ঘড়ি ছিল না; এবং এর কোনো প্রয়োজনও ছিল না। সেসব দিনের জন্য খুব জুতসই ছিল থরোর এই কথাগুলো : ‘নিজেদেরকে আমাদের জাগিয়ে রাখতে ও পুনর্জাগরিত করতে শিখতে হবে, যন্ত্রের সাহায্য নিয়ে নয় বরং প্রত্যুষের অন্তহীন প্রত্যাশা দিয়ে যে প্রত্যাশা আমাদের গভীর ঘুমের মধ্যেও জেগে থাকে। সজ্ঞান প্রচেষ্টায় নিজের জীবনকে উন্নততর করার ক্ষেত্রে মানুষের প্রশ্নাতীত ক্ষমতার চেয়ে গভীরতর উদ্দীপনার কোনো বিষয় আমার জানা নেই।’

আরও পড়ুন

×