ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে অচলাবস্থা

চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন হাজারো রোগী

চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন হাজারো রোগী

ফাইল ছবি

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫ | ২২:০৬

রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের অচলাবস্থা কোনোভাবেই কাটছে না। সোমবার ষষ্ঠ দিনের মতো বন্ধ রয়েছে সেবা কার্যক্রম। সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজারো রোগী ফিরে গেছেন চিকিৎসা না পেয়ে। 

চলমান অচলাবস্থার মধ্যে গতকাল হাসপাতাল পরিদর্শনে গেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি। তারা চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও জুলাই যোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলছেন। তবে গত ২৯ মে গঠিত কমিটিকে তিন কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে পারেনি।

আজ সকালে হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে দেখা মেলে মিরপুর থেকে আসা ৬০ বছরের পুষ্পা রানীর। চোখের তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে মেয়ের হাত ধরে এসেছেন তিনি। কিন্তু হাসপাতাল বন্ধ থাকায় ভেতরে ঢুকতে পারেননি। ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বাবা আমি চোখের ব্যথা সহ্য করতে পারছি না। তারা আমাকে ঢুকতে দিচ্ছে না।’ পরে ব্যর্থ হয়ে চলে যেতে হয় তাকে।

ঢাকা মেডিকেল থেকে রেফার হয়ে আসা মাকসুদা বেগমও জানতেন না হাসপাতাল বন্ধ। দু’দিন ধরে তিনিও ফিরে যাচ্ছেন। টঙ্গী থেকে আসা রোগী সারওয়ার আহমেদ বললেন, ‘এখানে অপারেশন করিয়েছি। এখন ফলোআপ দরকার। কিন্তু বন্ধ থাকায় অন্য হাসপাতালে গেলে বলে, দেশের সেরা হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে এখন আমাদের কাছে কেন আসলেন?’

হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় প্রতিদিন হাজারো রোগী চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। যদিও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে দুঃখ প্রকাশ করে দায়িত্ব শেষ করেছে এবং অন্য হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর বলেন, চক্ষু হাসপাতাল চিকিৎসা সেবা চালুর করতে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে আলোচনা হয়েছে। তবে এখনও কোনো সমাধান আসেনি। আশা করছি দুই একদিনের মধ্যে সেবা স্বাভাবিক হবে।

অবিলম্বে সেবা চালুর দাবি জনস্বাস্থ্য সংগ্রাম পরিষদের

জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল অবিলম্বে চালুর দাবি জানিয়েছে জনস্বাস্থ্য সংগ্রাম পরিষদ। আজ এক বিবৃতিতে সংগঠনের আহ্বায়ক ফয়জুল হাকিম বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা রেজিম উচ্ছেদ হলেও সরকারি হাসপাতালগুলোতে দুর্নীতিবাজ ডাক্তার, কর্মচারী ও নার্সদের সিন্ডিকেট এখনও সক্রিয়। এই সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে।’ 

তিনি বলেন, ‘চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি সংঘটিত হামলার তদন্তে পৃথক কমিটি গঠন করে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে।’ 

চিকিৎসাধীন জুলাই যোদ্ধাদের দুর্ব্যবহার, হামলা, ভাঙচুরের ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ তুলে ২৮ মে কর্মবিরতি পালন করেন ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা। কর্মসূচি চলাকালে অভ্যুত্থানে আহতদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে চিকিৎসক, কর্মচারীসহ বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার পর সবাই হাসপাতাল ত্যাগ করেন। পরদিন থেকে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে।


 

আরও পড়ুন

×