গাজায় ‘পুরো বিশৃঙ্খল’ ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী: সাবেক সেনা জেনারেল

ছবি: আনাদোলু
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ২১:২০ | আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ২১:২৭
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ‘পুরো বিশৃঙ্খল’ পরিস্থিতিতে রয়েছে। সেখানে যুদ্ধের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও লজিস্টিক পরিষেবার ভেঙে পড়েছে বলে জানান সাবেক ইসরায়েলি মেজর জেনারেল ইতজাক ব্রিক। তুরস্কের সরকারি বার্তা সংস্থা আনাদোলুকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানান তিনি।
ব্রিক বলেন, ইসরায়েলি দৈনিক মারিভকে সাবেক এক সামরিক জেনারেল বলেন, ‘আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, রসদ, খাবার এবং সবকিছুই কাজ করছে না। কারণ সেনাবাহিনী সবকিছু প্রাইভেট কোম্পানির কাছে অর্পণ করেছে। এতে পুরো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করেছে।’
মেজর জেনারেল ইতজাক ব্রিক বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে ট্যাঙ্কগুলো মেরামত করার কেউ নেই। গাজা উপত্যকায় কয়েক ডজন ট্যাঙ্ক প্রত্যাহারের অপেক্ষায় আটকে আছে।’ সাবেক ইসরায়েলি জেনারেল আরও উল্লেখ করেন, ‘অবশ্যই মিডিয়া এই বিষয়ে কথা বলে না। তবে সরঞ্জামগুলো কাজ করছে না।’
মিডল ইস্ট মনিটরের প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রিক উল্লেখ করেন, ‘৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ছয় বার দেখা করেছেন। কিন্তু তার কর্মীরা চাননি সে (নেতানিয়াহু) আসল কথা শুনুক। তাই তারা তাকে (প্রধানমন্ত্রী) আমার কাছ থেকে দূরে রেখেছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি নেতানিয়াহুকে বলেছিলাম, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী অবিলম্বে যুদ্ধে যেতে প্রস্তুত নয়। কারণ সেখানে এমন সৈন্য রয়েছে- যারা পাঁচ বছর ধরে প্রশিক্ষণ নেননি এবং তাদের যন্ত্রপাতির ঘাটতি রয়েছে। তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তুত করতে অনুরোধ করেছি।’ সৌভাগ্যবশত তিনি তা শুনেছিলেন। পরে প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে (ইয়োভ গ্যালান্ট) ডেকে দুই সপ্তাহের জন্য গাজায় ইসরায়েলি সৈন্যের প্রবেশ বিলম্বিত করেছিলেন, যোগ করেন রিক।
৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে মোট ৫৭৬ সেনা নিহত হয়েছেন। অপরদিকে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে ২৯ হাজার ৬০০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় ৬৯ হাজার ৭৩৭ জন আহত হন।
ইসরায়েলি হামলায় গাজার খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র ঘাটতির মধ্যে ভূখণ্ডের ৮৫ শতাংশ জনসংখ্যাকে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি হয়েছে। জাতিসংঘের মতে, ছিটমহলের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার দায়ে ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। জানুয়ারিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন রায়ে তেল আবিবকে গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদানের নিশ্চয়তা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।