ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে ৫ চুক্তি ভেঙেছে চীন

ভারত ও চীনের পতাকা
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ জুন ২০২০ | ০৩:৩২
দুই প্রতিবেশি ভারত ও চীন সীমান্ত নিয়ে ১৯৬২ সালে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়ায়। এরপর বিতর্কিত সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে বিভিন্ন সময়ে বেশ কিছু চুক্তি করেছিল দুইদেশ। কয়েক দশকে দেশ দুটির মধ্যে আর কোনো অশান্তি হয়নি। তবে গত সোমবার সেই শান্তি ভঙ্গ হয়েছে ফের দুই দেশের সেনাবাহিনীর সংঘর্ষে। লাদাখ সীমান্তের গালওয়ানে ওই সংঘর্ষে ভারতের অন্তত ২০ সেনা নিহত হয়েছে। চীনের সেনাবাহিনী হতাহতের শিকার হলেও তারা স্পষ্ট কিছু প্রকাশ করেনি। সংঘর্ষের জন্য দুই দেশই একে অপরকে দোষারোপ করছে।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, লাদাখের রক্তপাত দুই দেশের মধ্যকার চুক্তিগুলোকে ব্যর্থতায় পর্যবসিত করেছে। চীনা সেনাবাহিনী এই সংঘাতের মধ্য দিয়ে অন্তত পাঁচটি চুক্তির শর্ত লঙ্ঘণ করেছে। চীনে নিযুক্ত ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত গৌতম বামবওয়ালে বলেন, সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি ও প্রশান্তি বজায় রাখতে ১৯৯৩ সাল থেকে চীন ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত প্রতিটি চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেছে। কৌশলগত লক্ষে দ্বন্দ্ব হলে চীন এসব চুক্তির কোন ধার ধারে না। চীন যেসব সীমান্ত চুক্তি লঙ্ঘন করেছে, তা তুলে ধরেছে স্ট্রাট নিউজ গ্লোবাল।
১. ভারত চীন সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বা এলওসি বরাবর শান্তি ও স্থিতিবস্থা চুক্তি ( ৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৩): এ চুক্তি অনুযায়ী বলা হয়েছে, নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর কোন সমস্যা বা সংঘর্ষের সম্ভাবনা দেখা দিলে দেশ দুইটি আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নিবে।
২. সামরিক মাঠে আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর ব্যবস্থা নিয়ে চুক্তি (২৯ নভেম্বর, ১৯৯৬): দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের যদি কোন কারণে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর মুখোমুখি অবস্থার মত পরিস্থিতি হয়, তাহলে তাদের আত্মসংযমের চর্চা করতে হবে বা উত্তেজনা কমাতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৩. সামরিক ক্ষেত্রের আত্মবিশ্বাস ব্যবস্থা বাস্তবায়নের পদ্ধতি ( ১১ এপ্রিল ২০০৫): যদি কোন কারণে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর দুই দেশের সীমান্তরক্ষীরা মুখোমুখি অবস্থানে হয়, তাহলে কোনপক্ষই কারো বিরুদ্ধে কোন বাহিনী ব্যবহার করবে না বা একে অপরকে হুমকি দিবে না।
৪. ভারত- চীন সীমান্ত বিষয়ক পরামর্শ ও সমন্বয়ের ওয়ার্কিং মেকানিজম প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে চুক্তি (১৭ জানিয়ারি, ২০১২): উভয় পক্ষের যুগ্ম-সচিব স্তরের কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে এবং কূটনৈতিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে এই চুক্তির লক্ষ্য ঠিক করা হয় যে, সীমান্ত পরিস্থিতি যথাযথভাবে পরিচালনার জন্য সীমান্তের সব ঘটনার তথ্য সরবরাহ।
৫. সীমান্ত প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বিষয়ক চুক্তি (২৩ অক্টোবর ২০১৩) : দুই দেশই একমত হয় যে, উভয়পক্ষের সীমান্তবাহিনী যদি এমন অঞ্চলে সামনের মুখোমুখি অবস্থানে আসে যেখানে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণের রেখা সম্পর্কে ধারণা নেই, সেখানে উভয়পক্ষই সর্বোচ্চ আত্ম-সংযমে থাকবে। উস্কানি, শক্তি প্রয়োগ বা একে অপরকে হুমকি দেওয়া থেকে বিরত থাকবে। সেখানে একে অন্যের সঙ্গে সৌজন্যমূলক আচরণ করবে।
- বিষয় :
- ভারত ও চীন সীমান্ত
- বিতর্কিত সীমান্ত
- এলওসি