ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ২০ শতাংশে উন্নীত করতে ইরানে আইন পাস

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ২০ শতাংশে উন্নীত করতে ইরানে আইন পাস

ইরানের একটি পারমাণবিক কেন্দ্র

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২০ | ২২:১২ | আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২০ | ০২:৪৬

পরমাণু উৎপাদন কেন্দ্রে জাতিসংঘের পরিদর্শন বন্ধ করতে এবং ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ২০ শতাংশে উন্নীত করতে নতুন আইন পাস করেছে ইরান।

আগামী দুই মাসে ইরানের ওপর থেকে জারি করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা না হলে সরকার ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি অনুযায়ী সম্মত ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ বেশি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করবে বলে জানানো হয়। খবর বিবিসির

ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফখরিজাদেহকে হত্যার ঘটনার পর এই পদক্ষেপ নিল দেশটি। তবে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, তিনি এই আইন প্রয়োগের বিরোধিতা করেন। 

গত শুক্রবার ইরানের রাজধানী তেহরানে মোহসেন ফখরিজাদেহর গাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। ইরান দাবি করেছে, ইসরায়েল এবং  নির্বাসিত একটি বিরোধী গোষ্ঠী রিমোট-কন্ট্রোলের মাধ্যমে পরিচালিত অস্ত্র ব্যবহার করে ফখরিজাদেহকে গুলি করেছে।

তবে জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েল।

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে ফখরিজাদেহর। তবে দেশটির সরকার বারবারই বলে আসছে, তাদের পরমাণু কর্মযজ্ঞ পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ।

নতুন আইন ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে কী প্রভাব ফেলবে

ইরানের গার্ডিয়ান কাউন্সিলের অনুমোদিত আইন অনুযায়ী, ২০১৫ সালে পরমাণু চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী ইউরোপীয় দেশগুলোকে দুই মাস সময় দেওয়া হবে দেশটির তেল এবং অর্থনৈতিক খাতের ওপর থেকে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তি থেকে সরে এলেও ওই নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনরায় আরোপ করা হয়েছিল।

এই সময়ের মধ্যে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা না হলে সরকার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধি ২০ শতাংশ বাড়াবে এবং উন্নত সেন্ট্রিফিউজ বসাবে, যা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে কাজ করবে। দেশটির নাতান্জ এবং ফর্দো পরমাণু উৎপাদন কেন্দ্রে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এই উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে জাতিসংঘের পরিদর্শকদের প্রবেশাধিকারও বন্ধ করে দেওয়া হবে।

বুধবার ইরানের ফার্স সংবাদ সংস্থা জানায়, আজ এক চিঠিতে নতুন আইন কার্যকর করতে প্রেসিডেন্টকে আহ্বান জানিয়েছেন পার্লামেন্টের স্পিকার।  

আইনটি অনুমোদনের আগে প্রেসিডেন্ট রুহানি বলেছেন, তার সরকার এই প্রস্তাবের সঙ্গে একমত নয়। একে ‘কূটনীতির জন্য ক্ষতিকর’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালের মে মাসে ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে বের হয়ে আসেন এবং তেহরানের বিরুদ্ধে কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।

চুক্তি অনুযায়ী পরমাণু উৎপাদনের মাত্রা ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশে সীমিত রাখার শর্ত ২০১৯ সালের জুলাইতে ভঙ্গ করে ইরান। এরপর থেকে এই হার ৪ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত করে দেশটি। 

নিম্ন মাত্রায় পরমাণু উৎপাদন যাতে মূলত ৩-৫ শতাংশ ইউরেনিয়াম-২৩৫ থাকে, তা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অস্ত্র তৈরি করতে হলে ৯০ শতাংশের বেশি ইউরেনিয়াম থাকতে হয়।

পরমাণু বোমা তৈরির কর্মকাণ্ডকে ঢাকতেই ইরান পরমাণু কর্মসূচি পরিচালনা করত-এমন সন্দেহ থেকে ২০১০ সালে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘ দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ২০১৫ সালের চুক্তিটি ছিল এই কর্মসূচিকে সীমিত করা এবং তা নিশ্চিত হওয়ার মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা।

আরও পড়ুন

×