ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

সাহিত্যের অদেখা ভুবন

সাহিত্যের অদেখা ভুবন

প্রতীকী ছবি

রাফিক হারিরি

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ০০:০৬

একটি গল্প দিয়ে ম্যাজিক্যাল রিয়েলিটি বা জাদুবাস্তবতার বিষয়টা শুরু করা যাক। 
দুই হাজার বছর আগে প্রাচীন জাহেলি যুগে আরবদের কোনো গোত্রে যখন এমন কোনো ছেলেসন্তান বা মেয়েসন্তান জন্মগ্রহণ করত যে আকাশের দিকে তাকিয়ে বানিয়ে বানিয়ে ছন্দবদ্ধ বাক্য বলতে পারত আর সেই বাক্যে থাকত অদেখা জগতের নানান কিছু এবং একই সাথে তাদের প্রাত্যহিক পরিচিত জগতের সাথে এমন সব খেয়ালি জগতের বর্ণনা; যা সাধারণ মানুষের পক্ষে কল্পনাতীত ছিল, তখন লোকেরা সেই ছন্দবদ্ধ বর্ণনাকারীকে খুব ভয়ে ভয়ে সমীহ করে চলত। লোকেরা বলত এর মাথায় জিন ভর করেছে, ও একজন কাহ্হান বা ছন্দবদ্ধভবিষ্যৎ বক্তা কিংবা এই ব্যক্তি একজন শায়ের বা কবি। প্রাচীন আরবের এইসব ছন্দবদ্ধ কবি কিংবা ছন্দবদ্ধ গদ্যকারগণ বাস্তব দুনিয়ার উপাদানের সাথে জিন-পরী, মরুদানব আর আকাশের শয়তানদের উপস্থিত করে বাস্তব আর অবাস্তবের মিশেলে তাদের বয়ানের মাজেজা দিয়ে এমন এক জাদুবাস্তব জগৎ তৈরি করত, যে সাধারণ মানুষ ভয় পেয়ে তাদের কাছ থেকে দূরে থাকত কিংবা তাদের মাথায় তুলে রাখত, সমীহ করে চলত তাদের। মূলত সাহিত্য কিংবা শিল্পের জাদুবাস্তবতার আদি রূপটি নিহিত ছিল মানুষের অতি কাল্পনিক ধারণার ভেতর, যখন শিল্প-সাহিত্যের বিশেষ মানুষগুলো একই সাথে বাস্তব ও অবাস্তবের ভেতর ঘুরে বেড়াতেন; যার অস্তিত্ব পাওয়া যায় প্রাচীন আরবের সেই শায়ের, কাহ্হান অর্থাৎ কবি ও ছন্দবদ্ধ গদ্য শিল্পিদের বর্ণনায়। 

সাহিত্যে ম্যাজিক্যাল রিয়েলিটি বা জাদুবাস্তবতার ব্যবহার চিত্রশিল্পে প্রথম শুরু হয়; যা পরবর্তী সময়ে গল্প, উপন্যাস, কবিতায় ছড়িয়ে পড়ে। 
ম্যাজিক্যাল রিয়েলিটি বা জাদুবাস্তবতা বিষয়টি আসলে কী? কেনইবা একে নিয়ে লেখক-গবেষক-পাঠক সর্বমহলে এত কৌতূহল। 
গত শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে চিত্রশিল্পে প্রথম ব্যবহৃত হলেও পরবর্তী সময়ে জাদুবাস্তবতার বিষয়টা সাহিত্যের মূল আঙ্গিক হিসেবে ব্যবহার শুরু হয় এবং পরিচিতি পায়। আর্জেন্টিনার লেখক হোর্হে লুইস বোর্হেস, জার্মানির গুন্টার গ্রাস, ইংল্যান্ডের জন ফাউলস, কিউবার আলেহো কারপেনতিয়রের রচনাতে এর উপাদান পাওয়া যায়। তবে কলম্বিয়ান লেখক গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের লেখার ভেতর দিয়ে সাহিত্যের এই নতুন আঙ্গিকের পূর্ণতা পায় ও জনপ্রিয়তা লাভ করে। 
ম্যাজিক্যাল রিয়েলিটি বা জাদুবাস্তবতা হলো সাহিত্যের এমন এক বর্ণনারীতি, যেখানে বর্ণনার মূল উপাদান, বিষয়, চরিত্র, কাহিনি– সবকিছুর উৎসমূল হলো জাদু বা কল্পনার অলৌকিক জগতে কিন্তু তার বিস্তর বয়ান আর তাফসির থাকে বাস্তব জগতে। 

গল্পের জাদুকরি সেইসব চরিত্র আর উপাদানগুলো বাস্তব জগতে এতটাই সত্য আর বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয় যেন মনে হয় সেইসব আদিভৌতিক জাদুকরি চরিত্রগুলো আমাদেরই কোনো পরিচিত কেউ।  
জাদুবাস্তবতায় যে জগতের কথা বলা হয় সেই জগৎ হলো আমাদের পরিচিত জগৎ কিন্তু এই পরিচিত জগতেই যত অবাস্তব আর অতিকল্পনীয় উপাদানেরা খুব স্বাভাবিক চরিত্র হিসেবে হাজির হয়। যাদুবাস্তবতার গল্প-উপন্যাসগুলোতে বাস্তব আর অতি কাল্পনিক জগতের সীমানাকে এতটাই হাল্কা করে দেয়া হয় যে সেটা আর পাঠকের নজরে পড়ে না। সালমান রুশদি বলেন, লোকেরা যখন ম্যাজিক রিয়েলিজম টার্মটা ব্যবহার করে তখন তারা শুধু ম্যাজিকটাকেই বোঝায়, এর সাথে বাস্তববাদ বিষয়টাকে উপেক্ষা করে যায়। এটাকে তারা উপলব্ধি করতে পারে না, যদিও জাদুবাস্তববাদের মূল লুকিয়ে থাকে বাস্তবে এবং দুটোই একসাথে বিবেচ্য। এটা রূপকথার গল্প না শুধু। এটা এমন এক পরাবাস্তববাদ; যার উৎসমূল হলো বাস্তব জগৎ। 
আলবার্তো রাইওর মতে, জাদুবাস্তবতায় জাদু ‘বিস্ময়কর’ অর্থে ব্যবহৃত হয়, জাদুবাস্তব গল্পের কাহিনি যে কোনো বাস্তব জায়গার পটভূমিতে তৈরি হতে পারে। এই গল্পের জরুরি উপাদান হলো চমকপ্রদ বৈশিষ্ট্য; যা বাস্তব সময় কাল-স্থানের সাথে মিশে থাকতে পারে। 

ম্যাজিক রিয়েলিজম বা জাদুবাস্তববাদ সাহিত্যের এই উপাধিটি উত্তর ঔপনিবেশিক লেখালেখির একটা স্বাভাবিক ফলাফল। গত শতাব্দীর সাহিত্যের সবচেয়ে স্বতন্ত্র ও পরিচিত শৈলী হলো জাদুবাস্তববাদ; যা পরিচিতি পেয়েছিল লাটিন আমেরিকান ঔপন্যাসিকদের মাধ্যমে। পরে বিশ্বব্যাপী লেখকদের লেখায় জাদু বাস্তববাদের প্রশংসা ছড়িয়ে পড়ে এবং বিশ্বসাহিত্যের এক ঐশ্বর্যমণ্ডিত ও বৈচিত্র্যময় লেখনশৈলী হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা পায়। প্রতিটা জাদুবাস্তববাদ উপন্যাস ভিন্ন ভিন্ন রকমের হলেও তাদের উপাদানগত বৈশিষ্ট্যের মধ্যে এক ধরনের মিল পাওয়া যায়। যেমন জাদুবাস্তববাদ উপন্যাসগুলোর ময়দান হলো আমাদের বাস্তব পৃথিবী; যার সাথে পাঠক খুব সহজেই পূর্বপরিচিত। কিন্তু এই বাস্তব জগতে লেখক যখন তার গল্পের উপাদানগুলো ঢোকানো শুরু করেন, তখন সেই উপাদানগুলো হয় পরাবাস্তব বা অলৌকিক; যাদেরকে সাধারণত আমাদের পৃথিবীতে দেখা যায় না। লেখক এখানে বাস্তব জগতের পূর্ণ বয়ান দেবেন কিন্তু সেখানে অলৌকিক উপাদানগুলোর বিস্তর পরিচয় থাকবে না, লেখক এমনভাবে বাস্তবতার পরিচয়ের ভেতর দিয়ে অলৌকিক উপাদানগুলো নিয়ে আসেন যে মনে হয় এরা সত্যিই আমাদের চারপাশেরই অংশ। 

জাদুবাস্তব গল্পের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো এটার বয়ান রীতি। বর্ণনার বিষয় যখন অতি মাত্রায় অলৌকিক হয় তখন ভাষা আর বর্ণনার স্বর হয় খুব স্বাভাবিক, যেন এগুলো সব সময়ই হয়ে থাকে। আবার তুচ্ছ বিষয়ের বর্ণনা হয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ, গুরুগম্ভীরভাবে যেন বাস্তব পৃথিবীই তখন অবাস্তব আর অলৌকিক এক জগৎ। 
জাদুবাস্তববাদ উপন্যাস ও গল্পগুলোতে লেখক তার সময়ের বাস্তব জগতের এমন কিছু বিষয়ের ওপর আলোকপাত করার চেষ্টা করেন, যেটা লেখক বা ঔপন্যাসিককে সব সময় পীড়া দেয়। কিন্তু রাজনৈতিক চাপ বা শাসকের ভয়ে তার বর্ণনাকে জাদুবাস্তবতার ছত্রছায়ায় বর্ণনা করতে হয়। ফলে একদিক থেকে বলা যায় জাদুবাস্তববাদ হলো মিথ্যা শাসনের বিরুদ্ধে মুখোশ পরিহিত সত্য বয়ানের কৌশল। এর সন্ধান মেলে লাটিন আমেরিকান সাহিত্যে যখন সমগ্র লাতিন আমেরিকার অর্থনীতি, সমাজনীতি, ক্ষমতা পশ্চিমের ঔপনিবেশিক শাসনের ওজনে পিষ্ট তখন শাসকের রক্তচক্ষুর বিপরীতে অতি সহজেই গল্পের ভেতর দিয়ে জাদুবাস্তববাদ ভীষণ এক পরিচিত শৈলী হিসেব আবির্ভূত হয় এবং সেই সাহিত্য উপন্যাস পৃথিবীজুড়ে প্রশংসা কুড়াতে থাকে। 

তবে এটাই জাদুবাস্তববাদ সাহিত্য বিস্তারের মূল কারণ নয়। লেখক বা শিল্পী যেহেতু কল্পনা করতে ভালোবাসেন, কল্পনা জগৎই তার বস্তুজগতের বাইরে আরেক আরাধ্য দুনিয়া। ফলে লেখনীর বৈচিত্র্যময় জগতে তিনি অতি কাল্পনিক বিষয়কে সহজেই নিয়ে আসতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।   
ম্যাজিক রিয়ালিজমের গল্পগুলোতে দেখা যায় লেখক তার চরিত্রদের এমনভাবে উপস্থাপন করেন, যেন মনে হয় পুরো ঘটনাটি একটা বাস্তব ঘটনা। এই লক্ষ্যে পৌঁছতে গিয়ে তিনি কিছু বিষয়ের ওপর স্থির থাকেন। ম্যাজিক রিয়েলিজমে অতি অলৌকিক বিষয়গুলো এমনভাবে নিয়ে আসা হয় যেন তারা সত্যিকারের পৃথিবীতে বিদ্যমান। ফলে পাঠক গল্পের চরিত্রগুলো খুব সহজেই তার চারপাশের চরিত্র হিসেবে গ্রহণ করে, এমনকি সেই চরিত্রগুলোর দুঃখ বেদনার সাথে পাঠক অংশগ্রহণ করে। তাদের আনন্দ বেদনা চোখের জল হয়ে ওঠে পাঠকের ব্যক্তিগত অনুষঙ্গে।

সাহিত্যে জাদুর বাস্তবতা কোনো মতবাদ নয় বা একক লেখকের নির্ধারিত কোনো পদ্ধতি নয় বরং জাদুবাস্তবতা হলো প্রকৃত সত্যের বা বাস্তবতা সন্ধানের একটা পথ যেই পথে সহজেই সত্য অনুষঙ্গগুলোকে চিত্রিত করে একই সাথে ক্ষমতাসীনদের ক্ষোভ থেকে কিংবা সেই গল্পের বিরূপ প্রতিক্রিয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করা যায়। উদাহরণস্বরূপ ইশপের গল্পগুলো যেখানে পশুপাখিরা খুবই বাস্তবসম্মতভাবে কথা বলে। যেমন– একটি গল্পে দেখা যায়, এক শেয়াল ছোট্ট একটা ডোবায় পড়ে গেলে তাকে একদল জোঁক ছেকে ধরে। শেয়াল তার থাবা দিয়ে জোঁকগুলো সরিয়ে দিলে তখন আরেক দল জোঁক তার মুখের ওপর এসে পড়ে। এভাবে শেয়াল যখন কোনোভাবেই নিজেকে রক্তচোষা জোঁকদের থেকে রক্ষা করতে পারছিল না তখন জীবনযুদ্ধে অভিজ্ঞ আরেক বৃদ্ধ শেয়াল ডোবার পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় পরিস্থিতি বুঝতে পেরে ডোবার শেয়ালকে মানুষের মতোই কথা বলে উপদেশ দিল যে রক্তচোষা জোঁকদের খেতে দাও, ওরা খেয়ে আপনাআপনিই ঝরে যাবে, নয়তো যত তাড়াবে আবার নতুন আরেক দল এসে নতুন করে রক্তচোষা শুরু করবে। ইশপ মূলত এই গল্পে সেই সময়ের দেশের রাজনীতিবিদদের তুলনা করেছিলেন। 

সাহিত্যের আঙ্গিকে ম্যাজিক্যাল রিয়েলিটি বা জাদুবাস্তবতার সেরা কীর্তি হলো মহাত্মা গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের হান্ড্রেড ইয়ারস অব সলিচিউড যেই উপন্যাসে মাকোন্দো গ্রাম হলো একটা কাল্পনিক জায়গা। সেই গ্রামের অধিবাসী বুয়েন্দিয়া পরিবারের বংশগত পরিক্রমাও কাল্পনিক। উপন্যাসের কাহিনি সম্পূর্ণ বানোয়াট কিন্তু সেই মাকোন্দো অঞ্চলের ইতিহাস, রাজনৈতিক পটভূমি, ভৌগোলিক অবস্থা সবকিছু অতি কাল্পনিক হওয়ার পরও মনে হবে এ সবকিছু আমাদের পরিচিত বাস্তব জগতের। আর এই অতি পরিচিত বাস্তব জগতের চরিত্রগুলোর দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই কর্নেল বুয়েন্দিয়ার ষোলোটি ছেলে যাদের কপালের ছাইয়ের টিপ কোনোভাবেই মোছা যায় না। সেই মাকন্দো গ্রামে আরও দেখা যায় নির্ঘুম দিবস আর রাত্রির অদ্ভুত এক মহামারির কথা যে মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে মাসব্যাপী গ্রামের মানুষ ঘুমহীন তাদের সময় কাটায়। এরপর সালমান রুশদির মিডনাইট চিলড্রেন ম্যাজিক্যাল রিয়েলিটি বা জাদুবাস্তবতার আরেকটা উদাহরণ। এই উপন্যাসে মধ্যরাতে সালিম সিনাই নামে এক বালক জন্মগ্রহণ করে, যে উপন্যাসের মূল নায়ক। সে অদ্ভুত ক্ষমতার টেলিপ্যাথি নিয়ে জন্মগ্রহণ করে, একই সাথে সে জন্মগ্রহণ করে সেই সময়– যখন ইন্ডিয়া ব্রিটিশরাজ থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাধীন হয়। 

হারুকি মুরাকামির দ্য উইন্ড আপ বার্ড ক্রনিক্যাল জাদুবাস্তবতার আরেকটি উদাহরণ। এই উপন্যাসে এক লোক টোকিওর তলানি জগতে তার হারিয়ে যাওয়া বেড়ালকে তালাশ করতে থাকে। একই সাথে তার হারিয়ে যাওয়া স্ত্রীকেও খোঁজ করতে থাকে। 
বাংলাদেশের সাহিত্যে আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ‘খোয়াবনামা’ উপন্যাস বিষয়বৈচিত্র্যে আঙ্গিকে ম্যাজিক রিয়ালিজমের সেরা উদাহরণ। এই উপন্যাসের নায়ক তমিজ যে কিনা মাঝির ছেলে, সে বাস করে বগুড়ার কাতলাহার বিলে। সে তার ঐতিহ্যগত পেশা ছেড়ে দিয়ে চাষ করতে চায়। তমিজের বাপ মারা যাওয়ার পরও নিয়মিত তমিজের সৎমা কুলশুমের সাথে দেখা করতে আসে। তমিজদের পূর্বপুরুষ বরকতুল্লাহ মুন্সী ইংরেজদের সাথে যুদ্ধ করে মরে গিয়ে তার দুই ভাগে বিভক্ত শরীর নিয়ে গাছের মাথায় বসে এলাকার মাছ আর মানুষকে কাবু করতে থাকে। 

ম্যাজিক রিয়েলিজম বা জাদুবাস্তববাদের ঢেউ ইউরোপ থেকে শুরু হয়ে লাতিন আমেরিকাতে বিস্তার লাভ করেছিল। তার তরঙ্গ এই ভারতীয় উপমহাদেশে এসে পৌঁছলেও বাংলাদেশের সাহিত্যে সেই ঢেউয়ের আঘাত বেশ সময় নিয়ে পৌঁছায়। তবে জাদুবাস্তববাদের আঘাত বাংলাদেশের সাহিত্যে দেরিতে এসে পৌঁছলেও তার পূর্ণতা পেতে খুব একটা সময় নেয়নি। বরং বাংলাদেশের প্রতিভাবান সাহিত্যিকদের জাদুকরি দক্ষ ছোঁয়ায় ম্যাজিক রিয়েলিজম আরও বৈচিত্র্যময়তা লাভ কর। 

আরও পড়ুন

×