আড়িয়ল বিলের জীববৈচিত্র্য হুমকিতে

অলিউর রহমান ফিরোজ
প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২৪ | ০০:৩৩
প্রাণ-প্রকৃতির বিচিত্র জলাধারের নাম আড়িয়ল বিল। এ বিলে যেমন প্রচুর মাছ পাওয়া যায়, তেমনি এটি কৃষির জন্য উর্বর ভূমি। বর্ষায় মাছের বিপুল সমাহার আর শুকনো মৌসুমে ফসলের দিগন্তজোড়া মাঠ। এ বিলের হলুদ কৈ বিখ্যাত। সেখানে একেকটি মিষ্টিকুমড়ার ওজন এক থেকে দেড় মণ।
১৩৬ বর্গকিলোমিটারের বিস্তীর্ণ এ বিলে ফুল-ফল, লতা-গুল্ম সবই আছে। ৫ হাজারের মতো রয়েছে মাছের খাঁড়ি। একেকটি খাঁড়ি ৬ একরজুড়ে। বর্ষায় পানি টান দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একেক খাঁড়ি থেকে ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকার মাছ পাওয়া যায়। পদ্মা এবং ইছামতী নদীর মাঝে অবস্থানের কারণে মিঠাপানির জলাধার হিসেবে বেশ খ্যাতি রয়েছে এ বিলের। বর্ষায় যখন বিল পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে, তখন খাঁড়ি থেকে সব মাছ ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রাকৃতিক খাদ্য খেয়ে মাছ বড় হতে থাকে। বর্ষার পর পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যার যার খাঁড়িতে আবার মাছ চলে আসে। বিলের শাপলা বিক্রি করেও যথেষ্ট অর্থ আয় করেন স্থানীয়রা। পদ্মা এবং ইছামতীর পলি জমে এ বিলের মাটির উর্বরতা বেশি থাকায় এখানে বীজ বুনলেই ফসলের ক্ষেত ভরে ওঠে। কোনো প্রকার রাসায়নিক
সার ছাড়াই সোনার ফসল কৃষকের মুখে
হাসি জোগায়।
মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগরে অবস্থিত আড়িয়ল বিলে ৭ হাজার ৯৭০ হেক্টর কৃষিজমি রয়েছে। এখানে উৎপাদন অনেক বেশি হয়। তবে শঙ্কার বিষয়, ভেসাল ও কারেন্ট জালের দৌরাত্ম্যে আগের মতো এখন আর মাছ বড় হতে পারছে না। প্রাকৃতিক জলাধারে মাছের প্রাচুর্য স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়েও ঢাকায় পাঠানো হতো আড়িয়ল বিলের মাছ। কিন্তু আবাসন খাতের থাবায় আড়িয়ল বিলের সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য এখন হুমকিতে। বিলের পানি এখন কালচে ভাব ধারণ করেছে। মানুষের বাড়িঘরও বিলের পরিবেশ নষ্টের অন্যতম কারণ। এমন প্রাকৃতিক সম্পদে ভরা বিলের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পদক্ষেপ নিতে হবে।
nঅলিউর রহমান ফিরোজ:
রিকাবীবাজার, মুন্সীগঞ্জ
- বিষয় :
- জীববৈচিত্র্য