‘ওয়াইল্ড ওয়াক’ থেকে পরিবেশ রক্ষার আহ্বান

জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে ‘ওয়াইল্ড ওয়াক’
সৈয়দ মো. ইয়াছিন
প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২০:২১
এই আয়োজনে জনসাধারণের মধ্যে জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের বন্যপ্রাণী, জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ, দূষণমুক্তকরণে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়। পাশাপাশি প্রকৃতি ও পরিবেশ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা ও দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে উঠে আসে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে, যুগোপযোগী জীব বৈচিত্র্য ও বন্যপ্রাণী বিষয়ে স্বতন্ত্র বিভাগ প্রতিষ্ঠার বিষয়টিও।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তিতুমীর কলেজ, ঢাকা কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বদরুন্নেসা কলেজ, হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজ, ভাওয়াল সরকারি কলেজ, নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজসহ ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন কলেজ থেকে প্রায় আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থী এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী ও পরিবেশবাদী সংগঠনও এই আয়োজনে সহযোগিতা করেছে। সার্বিক সহযোগিতায় ছিল জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান কর্তৃপক্ষ।
ওয়াইল্ড ওয়াক শেষে শিক্ষার্থীরা উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেয় এবং সেখানে নিজেদের প্রত্যাশা তুলে ধরেন। তারা জীববিজ্ঞানের বিষয়গুলোকে বইয়ের মুখস্থ বিদ্যায় সীমিত না রেখে প্রায়োগিক বিষয় আকারে তুলে ধরার আহ্বান জানান। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সংশ্লিষ্ট বিষয় স্কুল পর্যায়ের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব তোলা হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রাণিবিদ্যা প্ল্যাটফর্মের মডারেটর মো. মোস্তফা আদনান। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন– জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের পরিচালক মো. শওকত ইমরান আরাফাত, বন্যপ্রাণী পরিবেশবিদ গবেষক ও লেখক আশিকুর রহমান সমী, প্রাণিবিদ্যার শিক্ষক আফতাব উদ্দীন সুজন, পাখিবিদ ও আলোকচিত্রী মো. তারিক হাসান, বন্যপ্রাণী বিষয়ক লেখক সরোয়ার পাঠান, লেখক বাপ্পি খান, ডিপ ইকোলজি এন্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশনের সভাপতি এবং প্রাণী সংরক্ষণবিদ মাহফুজুর রহমান, বন্যপ্রাণী বিষয়ক সাংবাদিক ও লেখক, বেঙ্গল ডিসকাভারের এডিটর ইন চিফ আমিনুল ইসলাম মিঠু, প্রজাপতি বিশেষজ্ঞ দীপ্ত বিশ্বাস।
বক্তারা জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানকে প্রাকৃতিক পরিবেশে সমৃদ্ধ, দূষণমুক্ত, প্লাস্টিক বর্জমুক্ত, জীববৈচিত্র্য ও বন্যপ্রাণীর বসবাস উপযোগী এক উদ্যানে পরিণত করার আহ্বান জানানো হয়। পাশাপাশি এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জলাশয় গুলোকে আরও জীব বৈচিত্র্যের বসবাস উপযোগী করার জন্য তুলে ধরা হয়। উদ্ভিদ উদ্যানের প্রবেশ ফি কমানোর জন্যও দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি উদ্ভিদ উদ্যানে দূষণকারী ব্যক্তিবর্গকে উপযুক্ত জরিমানা প্রদানের দাবি জানানো হয়। প্রতি জেলায় এমন একটি উদ্যান রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়।
উদ্ভিদ উদ্যানের পরিচালক মো. শওকত ইমরান আরাফাত জানান, উদ্ভিদ উদ্যানটিকে তিনি শিক্ষার্থী ও সব পরিবেশবাদী, গবেষকদের নিয়ে একটি আদর্শ সংস্থায় পরিণত করতে চান এবং এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
গবেষক আশিকুর রহমান সমী বক্তব্যে জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের জীববৈচিত্র্যের তথ্য এবং এর ঝুঁকি উপস্থাপনের পাশাপাশি এর জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণের নানা দিক তুলে ধরেন। এক দশকের ব্যবধানে এখানকার জীব বৈচিত্র্য অর্ধেকে নেমে এসেছে, প্রাকৃতিক পরিবেশ বিনষ্ট হয়েছে বলে জানান তিনি।
- বিষয় :
- পরিবেশ
- জীববৈচিত্র্য