তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঠেকাতে প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর: দুদু

জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রতিবাদ সভায় শামসুজ্জামান দুদু। ছবি: সমকাল
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৩ | ০৮:৫৩ | আপডেট: ০৪ মে ২০২৩ | ০৯:৪৯
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঠেকানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশ সফর শুরু করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেন, চলতি বছরের শেষে অথবা আগামী বছরের শুরুতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হবে। আপনি এবং আপনার দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করবেন কিনা তা ভেবে দেখতে পারেন। কিন্তু আপনার অধীনে এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপার্সন ‘খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে’ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাটি আয়োজন করে ইয়ুথ ফোরাম।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে ভয় পেয়েছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঠেকানোর জন্য বিদেশ সফর শুরু করেছেন। কিন্তু কোনো লাভ হবে না।
দেশ আজ ভয়াবহ রাজনৈতিক সংকটে পড়েছে দাবি করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতীয় সংসদ থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত নির্বাচন ব্যবস্থায় ধ্বংস হয়েছে। কোনো পেশাজীবী সংগঠনের স্বাভাবিকভাবে নির্বাচন হয় না, এমনকি মসজিদ কমিটি নির্বাচনের দলীয়করণ হয়।
ছাত্রদলের সাবেক এ নেতা বলেন, মানুষের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে। সরকারের বাইরে কোনো পত্রিকায়, টিভি নে। সম্প্রতি ‘দৈনিক দিনকাল’ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তার আগে ‘আমার দেশ’ পত্রিকা, ‘দিগন্ত টেলিভিশন’, ‘চ্যানেল ওয়ান’ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বে গণতন্ত্রের প্রতীক হচ্ছেন খালেদা জিয়া। বলা হয় বেগম খালেদা জিয়া এতিমের টাকা মেরে খেয়েছেন। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, যে টাকার কথা বলা হয়েছে সেই টাকা বিদেশ থেকে এতিমের টাকা হিসেবে আসেনি। জিয়ার নামে প্রতিষ্ঠান করার জন্য কুয়েত সরকার টাকা দিয়েছিল। সেই টাকা এখন ব্যাংকে কয়েকগুণ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী, রাজনীতিবিদসহ সরকারের মিডিয়া এই টাকার মিথ্যা বয়ান জাতি ও বিশ্ববাসীকে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১৬-১৭ বছর দেশে থাকেন না। আইন করে তার কণ্ঠরোধ করা হয়েছে। তার বক্তব্য সংবাদপত্র বা টেলিভিশনে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তারেক রহমানকে আওয়ামী লীগ ভয় পেয়েছে। যার কারণে তার মুখোমুখি হওয়ার সাহস সরকারের নেই। তার নাম শুনছে আপনারা আতঙ্কিত হন। তিনি দেশে আসলে আপনারা কীভাবে থাকবেন, কী করবেন, কীভাবে চলবেন এই আতঙ্কে তারেক রহমানকে বিদেশে থাকতে বাধ্য করছেন। তারেক রহমানের স্ত্রী হওয়ার কারণে মেধাবী চিকিৎসক ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। শুধু মামলা নয়, এমন কোনো কুৎসা নেই, যা আপনারা তার বিরুদ্ধে করেননি।
বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ, সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, ফোরামের উপদেষ্টা এম নাজমুল হাসান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাংগাঠনিক সম্পাদক লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, কৃষকদরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলম, জাতীয়াতাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সভাপতি আমির হোসেন বাদসা, মৎসজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সারাজী, দেশ বাঁচাও-মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কেএম রকিবুল ইসলাম রিপন। সঞ্চলনায় ছিলেন শরিফুল ইসলাম শরিফ।