ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

জনগণ সরকারের কাছে আইনের শাসন প্রত্যাশা করে: রিজভী

জনগণ সরকারের কাছে আইনের শাসন প্রত্যাশা করে: রিজভী

রুহুল কবির রিজভী- ফাইল ছবি

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫ | ১৬:৩১ | আপডেট: ২৫ জুন ২০২৫ | ১৬:৩৪

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‌‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে মানুষ আইনের শাসন প্রত্যাশা করে। আপনারা দৃষ্টান্ত রেখে যাবেন যাতে করে নির্বাচিত সরকার আসলে আপনাদের ভালো দৃষ্টান্তগুলো চিহ্নিত করে আরও ভালো কিছু করার চেষ্টা করে। কেনো এই সময়ে এসে এত খুন ও জখম হবে, কেন এত ডাকাতি, চুরি হত্যাকাণ্ড ঘটবে- এসব বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আরও বেশি তৎপর হতে হবে।’

বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘আমরা বিএনপি পরিবারের’ প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা সহায়তা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার আন্দোলনের পটভূমি রচনার প্রধান নায়ক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আমরা দেখেছি যখন ছাত্র জনতা বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তখন তিনি দলের সকল নেতাকর্মীকে নির্দেশ দিয়েছেন তাদের সঙ্গে আন্দোলনে সক্রিয় থাকার জন্য। কখনও তিনি লন্ডন থেকে বক্তব্যের মাধ্যমে কখনও আমাদের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পাশে থাকা নির্দেশ দিয়েছেন। এই আন্দোলনে আমাদের ছাত্রদলের অনেক নেতা কর্মী বিএনপির সমর্থক অনেকেই আত্মহুতি দিয়েছেন গণতন্ত্রকে ফেরানোর জন্য।’

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা বিডিআর হত্যাকাণ্ডের যে ঘটনাগুলো দেখছি, সেখানে আমরা শুনতে ও জানতে পাচ্ছি- যারা তদন্তে আছেন তারা নানা কারণেই গোপনীয়তা রক্ষা করছেন। যদিও তারা বলেছিলেন রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, হয়তো বিশেষ কারণে নামগুলো এখনও বলছেন না। কিন্তু রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতায় যে হয়েছে, এটা বলছেন তারা। তার মানে পরিকল্পিতভাবে পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল। হয়তো কারও স্বার্থে, প্রভুদের স্বার্থে অথবা অন্য কোনো স্বার্থে এই ঘটনা ঘটিয়েছিল তৎকালীন যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল।’

রিজভী বলেন, ‘আজকে একটি সংবাদ পড়ে একদিকে যেমন বেদনার্ত হয়েছি অন্যদিকে আশাবাদী হয়ে উঠেছি, অনেক পুলিশ কর্মকর্তাকে গুম করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে অনেকেই অস্বীকার করেছেন এবং যারা অস্বীকার করেছেন তাদের নামসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে এ ধরনের নথিও পাওয়া গেছে। আর যারা রাজি হয়েছেন তারা তো গুম ও খুন করেছেন। শেখ হাসিনার আস্থাভাজন তার নৈকট্য লাভের জন্য তারা কাজ করেছেন। এর মধ্যেও কিছু কিছু পুলিশ অফিসার অস্বীকার করেছেন, তাদেরকে ডিপার্টমেন্টের পুরস্কৃত করা উচিত। কারণ তারা শেখ হাসিনার হিংস্রতার মধ্যেও গুম করতে অস্বীকার করেছেন। আমরা যতটুকু জেনেছি তাতেই তো আমাদের রক্ত হিম হয়ে যায়।’

তিনি বলেন, ‘পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডসহ ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হওয়া উচিত। আর যারা শেখ হাসিনার হিংস্রতার মধ্যেও অন্যায় কাজ করেনি তাদেরকে পুরস্কৃত করা উচিত। এটা করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অনুরোধ করব।’

রিজভী বলেন, ‘৫ আগস্টের পর থেকে এই পর্যন্ত নানাভাবে নানা কারণে ১৭৭ জন মানুষের হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। যারাই এ সমস্ত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তারা যে দলেরই হোক, যে মতেরই হোক সরকারের উচিত আইনের মাধ্যমে তাদেরকে বিচার করা।’

আমরা বিএনপি পরিবারের সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুনের সভাপতিত্বে জাহিদুল ইসলাম রনির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফউদ্দিন বকুল, প্রকৌশলী মোস্তফা-ই জামান সেলিমসহ অনেকেই।

আরও পড়ুন

×