উধাও এক-তৃতীয়াংশ বাস

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি চট্টগ্রাম ভবন। আগে ভবনের সামনে থাকত ‘মানুষের হাট’। তবে এখন সে চিত্র কিছুটা বদলেছে সমকাল
তৌফিকুল ইসলাম বাবর
প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৪ | ২৩:০৯
বিআরটিএ নিয়ে সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগের শেষ নেই। বর্তমানে সে চিত্র কিছুটা বদলেছে। তবে এখনও রয়ে গেছে অনিয়ম ও ভোগান্তি। পুরোপুরি দালালমুক্ত হয়নি প্রতিষ্ঠানটি। এ নিয়ে বিশেষ আয়োজন। প্রতিবেদন তৈরি করেছেন সিনিয়র রিপোর্টার তৌফিকুল ইসলাম বাবর
বিআরটিএ ১৮ রুটে ১ হাজার ৪০টি বাসের অনুমোদন থাকলেও চলছে সর্বোচ্চ ৭০০টি। সার্বিকভাবে সড়কে বিভিন্ন ধরনের পরিবহনের সংখ্যা বাড়লেও বাড়ছে না গণপরিবহন। নতুন নতুন রুটের অনুমোদন নিয়েও এখনও কয়েকটি রাস্তায় নামানো হচ্ছে না বাস-মিনিবাসসহ অন্যান্য গণপরিবহন।
বিআরটিএ’র তথ্যমতে, নগরীর ১৮ রুটে ১ হাজার ৫৪৫টি বাস মিনিবাস চলাচলের অনুমোদন দেওয়া হলেও রুট পারমিট রয়েছে ১ হাজার ৪০টির। আরও ৫০৫টি বাস-মিনিবাস চলাচল করতে পারবে রুটগুলোয়। একইভাবে নগরীতে অটো টেম্পোর রুট রয়েছে ২১টি। রুটগুলোতে ২ হাজার ৩৯৭টি গাড়ি চলাচলের অনুমতি দিয়েছে বিআরটিসি। সেখানে রুট পারমিট নিয়েছে ১ হাজার ৮৩৯টির। আরও ৫৫৮টি অটো টেম্পোর রুট পারমিট নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। ১৮টি রুটে ১ হাজার ৪৫৬টি হিউম্যান হলার চলাচলের রুট পারমিট অনুমোদন দিয়েছে আরটিসি। সেখানে চলাচল করছে ৯৯৪টি। আরও ৪৬২টি হিউম্যান হলার পারমিট নিতে পারবে।
বিআরটিএ ও গণপরিবহন মালিকদের দেওয়া তথ্যের পাশাপাশি সমকালের নিজস্ব অনুসন্ধানে জানা যায়, নগরীর রুটগুলোয় এক হাজারের ওপরে বাস-মিনিবাস থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে বাস-মিনিবাস চলাচল করছে সাড়ে ৬০০ থেকে ৭০০। প্রশ্ন হলো, অবশিষ্ট বাস-মিনিবাসগুলো গেল কোথায়? এ নিয়ে পাওয়া গেছে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য।
গণপরিবহন মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অবশিষ্ট গাড়িগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই নষ্ট হয়ে গেছে। কিছুসংখ্যক গাড়ি নষ্ট হয়ে গ্যারেজে পড়ে রয়েছে। অনুমোদন থাকলেও অর্থ সংকটসহ নানা কারণে নতুন করে গাড়ি তৈরি করে নামাতে পারছে না সংশ্লিষ্ট গাড়ি মালিকরা। ১ হাজার ৪০টি বাস-মিনিবাসের বাইরে ২০০টি বাস-মিনিবাসের অনুমোদন রয়েছে ইপিজেডের গার্মেন্টসহ বিভিন্ন শিল্প-কারখানার শ্রমিক আনা-নেওয়ার জন্য। কিন্তু এসব গাড়ির পাশাপাশি অনেক সাধারণ যাত্রীবাহী বাস-মিনিবাস সকাল-সন্ধ্যায় গার্মেন্টসহ শিল্প-কারখানার শ্রমিক আনা-নেওয়ায় ব্যস্ত থাকে। ফলে নগরীতে গণপরিবহনের সংকট দেখা দেয়। বিশেষ করে, সকাল ও সন্ধ্যায় এ সংকট প্রকট আকার ধারণ করে।
নাম প্রকাশ করার অনুরোধ জানিয়ে বিআরটিএ চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, ‘আমরা পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি, যেসব বাস-মিনিবাসের অনুমোদন রয়েছে, যদি সেগুলোও রাস্তায় যাত্রী পরিবহন করে তাহলে চট্টগ্রাম শহরে গণপরিবহন সংকট হওয়ার কথা নয়। বাস্তবে অনুমোদন নেওয়া এক তৃতীয়াংশ বাস-মিনিবাস রাস্তায় চলাচল করছে না। বেশকিছু সংখ্যক গাড়ি নষ্ট হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট গাড়ি মালিকরা নতুন করে
গাড়ি তৈরি করে রাস্তায় নামাচ্ছেন না। গণপরিবহন সংকট কাটাতে আমরা বাস-মিনিবাসের রুট পারমিট দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বিষয় ছাড় দেওয়া হয়। এরপরও পরিবহন মালিকদের আগ্রহী করা যাচ্ছে না।’
এক প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘রাস্তায় যেসব বাস-মিনিবাস চলাচল করছে সেগুলোর একটি অংশ ফিটনেস সার্টিফিকেট পাওয়ার মতো নয়। তারপরও কিছু ছাড় দিয়ে ফিটনেস সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। এটা করা না হলে রাস্তায় গণপরিবহন সংকট আরও বেশি প্রকট আকার ধারণ করবে।’
বিআরটিএ কর্মকর্তার বক্তব্যের সত্যতা পাওয়া যায় পরিবহন মালিকদের কথায়ও। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলাল সমকালকে বলেন, ‘অনুমোদিত বাস-মিনিবাসগুলো চলাচল নিশ্চিত করা গেলে নগরীর গণপরিবহন সংকট অনেকাংশে কেটে যাবে। এজন্য আমরা মালিকদের উৎসাহিত করার চেষ্টা করি।’
নগরে চলছে এসি বাস ‘চট্টলার চাকা’
সোয়া চার বছর পর চট্টগ্রাম নগরীর সড়কে চালু হলো নতুন গণপরিবহন সার্ভিস। তাও আবার কাউন্টারভিত্তিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) বাস। গত ১ জুলাই থেকে সড়কে ‘চট্টলা চাকা’ নামে নতুন বাস নামিয়েছে ‘শান্তি এক্সপ্রেস লিমিটেড’ নামে একটি সংস্থা। প্রথম ধাপে ২০টি বাস নামিয়েছে সংস্থাটি।
এর আগে ২০২১ সালের ২৬ মার্চে চালু করা হয় ‘সোনার বাংলা’ এবং তারও আগে ২০১৬ সালের ১৭ জানুয়ারি ‘মেট্রো প্রভাতী’। দুটিই কাউন্টার সার্ভিস। অভিন্ন পরিবহন মালিকরা এই দুটি বাস সার্ভিস চালু করেন। নগরীর কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে বহদ্দারহাট ও আগ্রাবাদ হয়ে হালিশহর বড়পোল এলাকা পর্যন্ত চলাচল করে ‘সোনার বাংলা’ বাস সার্ভিস। কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে বহদ্দারহাট ও আগ্রাবাদ হয়ে কাঠগড় পর্যন্ত চলাচল ‘মেট্রো প্রভাতী’ সার্ভিস। আর সর্বশেষ চালু হওয়া শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ‘চট্টলার চাকা’ সার্ভিস চলাচল করছে কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে বহদ্দারহাট ও আগ্রাবাদ হয়ে কাঠগড় পর্যন্ত।
জানা যায়, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার যাত্রী ও পণ্য পরিবহন কমিটি (আরটিসি) তিন শর্তে বাসগুলো নামানোর অনুমোদন দেয়। শর্তগুলো হলো, প্রতিটি গাড়ি ৪০ সিটের হতে হবে। গাড়ি ছাড়ার শুরু এবং শেষ প্রান্তে অর্থাৎ কাপ্তাই রাস্তার মাথা এবং কাটগড় প্রান্তে বাস রাখার নিজস্ব ডিপো থাকতে হবে, ডিপো ভাড়া নেওয়ার চুক্তিপত্র বিআরটিএর কাছে জমা দিতে হবে এবং কাউন্টার ছাড়া লোকাল যাত্রী নিতে পারবে না।
শান্তি এক্সপ্রেসে লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘আরটিসির সভায় আমরা ২০টি বাস চলাচলের অনুমোদন পেয়েছি। আরটিসির শর্ত মেনে গত ১ জুলাই থেকে সড়কে ২০টি বাস নামানো হয়েছে। সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করে ইতোমধ্যে যাত্রীদের মন জয় করে নিয়েছে– চট্টলার চাকা। কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে কাঠগড় পর্যন্ত বাসগুলো চলাচল করছে। যাত্রী চাহিদা থাকায় সামনে আরও নতুন বাস যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।’
২০১৬ সালে প্রিমিয়ার ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস লিমিটেড নামের একটি কোম্পানি নগরীর ১৪ নম্বর রুটে ছয়টি পরিবহন নিয়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস সার্ভিস চালু করেছিল। সেটি স্থায়ী হয়নি। কয়েক মাসের মধ্যে সড়ক থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল। ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন নগরীর তিনটি রুটে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস চালুর উদ্যোগ নেন। সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে এসব বাস চালুর জন্য করপোরেশনের ৫২তম সাধারণ সভায় সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছিল। প্রথম দিকে তিনটি রুটে ১০০টি বাস নামানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এর মধ্যে কালুরঘাট থেকে পতেঙ্গা, ভাটিয়ারী থেকে লালদিঘি এবং নিউমার্কেট থেকে ফতেয়াবাদ রুটে বাসগুলো নামানোর কথা ছিল। পরে এ উদ্যোগ সফল হয়নি। আট বছর পর আবারও নতুন করে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস নামানো হলো।
দালাল নিয়ন্ত্রণে
তৎপর বিআরটিএ
বিআরটিএ চট্টগ্রাম কার্যালয়। ৪ অক্টোবর দুপুর ১২টা। অঝোরে বৃষ্টি ঝরছিল। এর মধ্যেই সেবাপ্রার্থী মানুষ গাড়ির কাগজপত্র-সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজে এ কার্যালয়ে প্রবেশ করছিলেন। তবে অন্যান্য দিনের চেয়ে কম। মূল ফটকের সঙ্গেই রয়েছে ‘অনুসন্ধান ও তথ্যসেবা কেন্দ্র’। এ কেন্দ্রের বাইরে বসে জাহিদুল নামে একজন পুলিশ কনস্টেবল যারা প্রবেশ করছেন তাদের দিকে নজর রাখছিলেন। কাউকে সন্দেহ হলে থামিয়ে প্রবেশের কারণ জানতে চাইছেন। আর কেন্দ্রের দেয়ালে সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে একটি ছোট ডিজিটাল ব্যানার, যাতে সেবাপ্রত্যাশীদের উদ্দেশ্যে লেখা রয়েছে তিনটি কথা– ‘দালাল দ্বারা প্রতারিত হবেন না’, নিজের কাজ নিজে করুন’ ও অবৈধ লেনদেন থেকে বিরত থাকুন’।
পুলিশ কনস্টেবল জাহিদল সমকালকে বলেন, ‘এখন বেশ কড়াকড়ি। চিহ্নিত কোনো দালাল তো বটেই, অপ্রয়োজনে ভেতরে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। কাউকে সন্দেহ হলে কাগজপত্র দেখে তারপরেই ঢুকতে দিচ্ছি।’ এরপরও দেখা গেল, নানা ফাঁকফোকরে বিআরটিএ কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে পড়ছেন দালাল। তবে এক সময় বিআরটিএ চট্টগ্রাম কার্যালয় দালালে গিজগিজ করলেও এখন নিয়ন্ত্রণের ফলে তা কিছুটা কমে এসেছে। তবে এ জন্য অবশ্য গলদঘর্ম হতে হচ্ছে বিআরটিএ কর্মকর্তাদের।
বিআরটিএ’র এক নম্বর ভবনে দেখা গেল ড্রাইভিং লাইসেন্স ও নবায়নকৃত লাইসেন্স নিতে সেবাপ্রত্যাশীদের ভিড়। নোয়াখালীতে বাড়ি হলেও কর্মসূত্রে চট্টগ্রাম নগরীতে বসবাস করেন হেলাল উদ্দিন নামে ত্রিশোর্ধ এক ব্যক্তি। তিনি লাইসেন্স নবায়নের পাশাপাশি ‘হালকা’ থেকে ‘ভারী’ লাইসেন্সের জন্য কাগজপত্র জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু লাইসেন্স নবায়ন হলেও ‘ভারী’ লাইসেন্স হয়নি। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হেলাল। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সমস্যার কথা জানতে চাইলে তিনি সমকালকে বলেন, ‘বেশ কিছুদিন আগে আমি পরিচিত এক ব্যক্তির মাধ্যমে একজন দালাল ধরে ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন ও সেই লাইসেন্স ‘হালকা’ (লাইট) থেকে ‘ভারী’ (হেভি) হিসেবে নবায়ন করতে দিয়েছিলাম। দালাল আমার কাছ থেকে এ কাজের জন্য ১৪ হাজার টাকা নিলেও একটি কাজ করে, আরেকটি করে দেননি। এখন সেই দালালকে খুঁজেও পাচ্ছি না। আমাকে নতুন করে কাজ করতে হবে।’
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফুলের হাফ শার্ট পরিহিত আনুমানিক চল্লিশোর্ধ এক ব্যক্তিকে সন্দেহ হলে তার পিছু নেয় সমকাল। কিছু সময় পর বিআরটিএ ভবন সংলগ্ন মসজিদের পাশে এক সেবাগ্রহীতার সঙ্গে কথা বলছিলেন। তাদের কথা শেষ হলে পরিচয় গোপন করে কথা হয় তার সঙ্গে। কীভাবে দ্রুত ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যায়, সেই ব্যবস্থা করা যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন এটা কঠিন। তবে করে দেওয়া যাবে। এ জন্য ১০ হাজার টাকা লাগবে।’ কথাবার্তার এক পর্যায়ে নাম ও মোবাইল নম্বর চাইলে তিনি কিছু একটা অনুমান করে ব্যস্ততার কথা বলে সটকে পড়েন। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল তিনি একজন দালাল।
তবে ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে আসা নাছির উদ্দিন নামে একজন চালক সমকালকে বলেন, ‘আগে সব কাজে দালাল লাগত। এখন আমি নিজেই সব প্রক্রিয়া শেষ করে ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করেছি। লাইনে দাঁড়িয়ে নবায়নকৃত লাইসেন্স নিয়েছি। এতে একটু হয়তো সময় লেগেছে।’ কাজের প্রক্রিয়া আরও সহজ করা হলে সেবাপ্রত্যাশীরা নিজেদের কাজ নিজেরাই করতে পারবেন বলে সমকালকে জানিয়েছেন আরও কয়েকজন সেবাগ্রহীতা।
অনুসন্ধান করে জানা গেছে, কেউ কেউ কৌশলে বিআরটিএ ভবনে প্রবেশ করে দালালির কাজ করে গেলেও কড়াকড়ির ফলে অনেক চিহ্নিত দালাল ভেতরে প্রবেশ করতে পারছেন না। তারা অবশ্য থেমে নেই। বাইরে থেকে তারা বিভিন্ন প্রক্রিয়া করে দিচ্ছেন সেবাপ্রত্যাশীদের। বিআরটিএ’র একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে এসব কাজ করে দিচ্ছেন তারা। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে চলছে তাদের দালালি।
বিআরটিএ চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক মো. মাসুদ আলম সমকালকে বলেন, ‘আগে কী হয়েছে জানি না। এখন কোনো দালালকে বিআরটিএ কার্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। সেবাপ্রত্যাশীরা যাতে নিজেদের কাজ নিজেরাই করেন, সে জন্য তাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছি, উৎসাহিত করছি। এমনকি খবর পেলে আশপাশের দোকানপাটেও আমরা অভিযান চালাচ্ছি। যাতে বাইরে থেকেও কেউ দালালি করতে না পারে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘একজন শিক্ষানবিশ চালক হিসেবে লাইসেন্স পেতে কোনো সেবাগ্রহীতাকে কেবল পরীক্ষা দেওয়ার দিন ছাড়া এখন আর তাকে বিআরটিএ কার্যালয়ে আসতে হচ্ছে না। অনলাইনে আবেদন করে, অনলাইনের মাধ্যমেই ফি প্রদান করতে পারছেন। ডাকযোগে পেয়ে যাচ্ছেন লাইসেন্স। এছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা স্বচক্ষে দেখা ছাড়া গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেটও দেওয়া হচ্ছে না। সেবাগ্রহীতারা যাতে কোনো কাজে কোথায় যেতে হবে– সেটাও জানতে পারেন, সে জন্য হেল্পডেস্কও রাখা হয়েছে।’
গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, মালিকানা বদলি, ফিটনেস সার্টিফিকেট, লাইসেন্স প্রদান ও নবায়ন, ডিজিটাল নম্বর প্লেট প্রদানসহ বিভিন্ন মোটরযানের আরও নানা ধরনের কাজে যেতে হয় বিআরটিএ কার্যালয়ে। এসব কারণে বিআরটিএ কার্যালয়ে সেবাপ্রত্যাশীদের ভিড় লেগেই থাকে। এ নিয়ে হয়রানির শিকারও হতে হয়। এ সুযোগে গড়ে উঠে দালালচক্র। যারা বিআরটিএ কার্যালয়ের অসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে সেবাপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ও পরবর্তী পরিস্থিতিতে এটা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন বিআরটিএ’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
- বিষয় :
- বাস চলাচল বন্ধ