চীনের তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের অনুমোদন হাঙ্গেরির

রাকিব হাসান রাফি, স্লোভেনিয়া থেকে
প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২১ | ০৫:৩৫
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রথম সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে চীনা ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সিনোফার্মের তৈরি করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগের অনুমতি দিল হাঙ্গেরি। শুক্রবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দেশটির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ফার্মাসি জরুরি ভিত্তিতে ভ্যাকসিনটি ব্যবহারের জন্য আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করে।
এর আগে গত সপ্তাহে দেশটির প্রধানমন্ত্রী অর্বান ভিক্টর এক রেডিও সাক্ষাৎকারে বলেন, ইইউভুক্ত অন্যান্য দেশের মতো হাঙ্গেরিও ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে করোনা প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে, যদিও আমি এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে পারিনি। তিনি আরো বলেন, কেউ যদি এ মূহুর্তে আমাকে করোনার ভ্যাকসিন নিতে বলে তাহলে সবার প্রথমে আমি চীনের তৈরি টিকাকে অগ্রাধিকার দিবো।
প্রধানমন্ত্রী অর্বান বলেন, করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল ছিল চীন। এ কারণে অন্যান্য দেশের তুলনায় করোনা বিষয়ক কোনো গবেষণার ক্ষেত্রে চীন সবার ওপরে। তাই আমি মনে করি, যে কোনো করোনার ভ্যাকসিনের তুলনায় চীনের তৈরি ভ্যাকসিন করোনা প্রতিরোধে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হবে।
বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে চীনা ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সিনোফর্মের তৈরি ভ্যাকসিনকে জরুরিভিত্তিতে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে পূর্ব ইউরোপের এ দেশটি। এমনকি গত সপ্তাহে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রথম সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে রাশিয়ার তৈরি করোনা ভ্যাকসিন স্পুটনিক ভিকেও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছিল দেশটির প্রশাসন। তবে ইইউভুক্ত অন্য কোনো দেশ এখনো ইউরোপিয়ান মেডিসিন্স অ্যাসোসিয়েশনের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে এককভাবে ফাইজার ও বায়োএনটেক কিংবা মডার্না ও অক্সফোর্ড এবং অ্যাস্ট্রোজেনকা উদ্ভাবিত করোনার টিকা ছাড়া অন্য কোনো টিকার অনুমোদন দেয়নি।
হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিজারতো বলেছেন, চূড়ান্তভাবে করোনা নির্মূল করতে দেশের শতকরা ৬৫ থেকে ৭০ ভাগ মানুষকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে চান। কিন্তু শুধুমাত্র ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ওপর নির্ভর করলে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন না এটাও জানান। তিনি বলেন, কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনের স্বার্থে রাশিয়া ও চীনসহ ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী যে কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে করোনার ভ্যাকসিন কিনতে চাই। কোন দেশে কোন টিকা উৎপাদিত হলো সেটি আমাদের কাছে বিবেচ্য বিষয় নয়।
অন্যান্য ভ্যাকসিনের সাথে সিনোফার্মের তৈরি করোনার ভ্যাকসিনের পার্থক্য হলো এখানে প্রধান কাঁচামাল হিসেবে ভাইরাল ভেক্টর কিংবা এমআরএনএর পরিবর্তে সরাসরি নিষ্ক্রিয় ভিরিয়েড কণা ব্যবহার করা হয়েছে। চীনের বাইরে তুরস্ক, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, বাহরাইন ও সার্বিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশে এ ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন গবেষণা থেকে প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী এ ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ৫০ দশমিক ৪ থেকে ৭৮ শতাংশ।
- বিষয় :
- প্রবাস
- স্লোভেনিয়া