ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

সাক্ষাৎকার: নাহিদ ইসলাম

নির্বাহী বিভাগ চাইলে জারি করতে পারে নতুন পরিপত্র

নির্বাহী বিভাগ চাইলে জারি করতে পারে নতুন পরিপত্র

নাহিদ ইসলাম

 যোবায়ের আহমদ

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪ | ০০:২৭ | আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪ | ০১:২০

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল আদালতের বিষয় নয়। এখানে সরকারের নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপের সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন চলমান আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র নাহিদ ইসলাম।

গতকাল রোববার সমকালকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি, কোটা সংকট সমাধান সম্পূর্ণ সরকারের এখতিয়ারে। তারা চাইলে নতুন পরিপত্র জারি করতে পারে। আবার সংসদেও বিষয়টির সুরাহা করতে পারে।

সমকাল : আপনাদের এই কোটা সংস্কারের আন্দোলন কেন?

নাহিদ ইসলাম : প্রথমত, সংবিধানে বলা হয়েছে, সুযোগের সমতা থাকবে চাকরিতে এবং অনগ্রসর গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা থাকতে পারে। কোটা কোনো স্থির বিষয় নয়, বিভিন্ন দেশেও কোটা আছে তবে ৫৬ শতাংশ কোটা এই সময়ে এসে এক ধরনের বৈষম্য তৈরি করছে। এর ফলে মেধাকে অগ্রাধিকার না দিয়ে কোটাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। সার্বিক বিবেচনায় আমরা মনে করি, ৫৬ শতাংশ কোটা এক ধরনের বৈষম্য তৈরি করে। প্রশাসনে দুর্নীতি পরিস্থিতি তৈরি করে।

সমকাল : কোটা সংস্কার হলে কি এর পরিবর্তন হবে বলে মনে করেন? 

নাহিদ ইসলাম : আমরা এখন দেখতে পাই কী পরিমাণ দুর্নীতি চলছে। একটি নিরপেক্ষ, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন করতে হলে যোগ্যতা এবং মেধাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এজন্য আমরা আসলে কোটার বিরোধিতা করছি। আমরা চাই মেধা হবে অগ্রাধিকার। অনগ্রসর গোষ্ঠীকে কোটা দেওয়া যেতে পারে। আবার একটা সময় পর্যন্ত এটাকে পুনর্মূল্যায়ন করা উচিত। 

সমকাল : বলা হচ্ছে, কোটা সংস্কার আদালতের বিষয়। এ ব্যাপারে আপনি কী মনে করেন?

নাহিদ ইসলাম : সরকারের অনেকে বলছেন, এটি আদালতের বিষয়। তবে আমরা মনে করছি, বিষয়টি আদৌও আদালতের নয়। এখানে সরকারের নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপের সুযোগ রয়েছে। যদি এমন হয়, ২০১৮ সালের পরিপত্র বহালের দাবি পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাহলে সরকার চাইলে নতুন পরিপত্র জারি করতে পারে। কোটা প্রথা সংসদেও সুরাহা হতে পারে। এটি পুরোপুরি সরকারের এখতিয়ার।

সমকাল : দাবি আদায় হবে কিনা, শুরুতে কী ভেবেছিলেন?

নাহিদ ইসলাম : পরিপত্র পুনর্বহাল ও একটি কমিশন গঠন করা হলে দাবি একটা পর্যায়ে যেত। এখন আমাদের এক দফা দাবি, সংবিধানসম্মত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম কোটা রেখে সংস্কারের মাধ্যমে সংসদে আইন পাস করতে হবে। আমরা চাচ্ছি, আমাদের দাবি পূরণে সরকার উদ্যোগী হোক।

সমকাল : দাবি আদায়ে সরকারের সাড়া না পেলে কী করবেন?

নাহিদ ইসলাম : আমরা বর্তমানে অবরোধ, বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করছি। সামনে অবরোধ বৃদ্ধির চিন্তা রয়েছে। এতেও কাজ না হলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাব।

সমকাল : কোনো ছাত্র সংগঠন আপনাদের প্রতি সংহতি জানাচ্ছে কিংবা বাধা দিচ্ছে?

নাহিদ ইসলাম : বিভিন্ন সংগঠন নিজ অবস্থান থেকে আমাদের আন্দোলনে সংহতি জানাচ্ছে। তবে আমরা স্বতন্ত্র থেকে আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। হলগুলোতে আমাদের কর্মসূচিতে আসার চেষ্টা করলে বাধা দেওয়ার খবর পাচ্ছি। হল ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীরা এমন করছেন। এ ছাড়া কোনো সমস্যা এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে আসেনি।

সমকাল : চলমান আন্দোলন কি কোনো রাজনৈতিক রূপ নেবে? দাবি পূরণ হলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেরই ভবিষ্যৎ কী?

নাহিদ ইসলাম : আমাদের আন্দোলনে বিভিন্ন সংগঠনের লোকজন আছে এবং নেতৃত্ব পর্যায়েই। তবে আমরা সাংগঠনিক জায়গা থেকে অথবা দলীয় এজেন্ডা নিয়ে কেউই এখানে আসিনি। প্ল্যাটফর্মটা শুধুই কোটা নিয়ে তৈরি হয়েছে। এ ইস্যুর পরে এর কার্যকারিতা শেষ হয়ে যাবে। এজন্য আমরা বলছি, এ আন্দোলনে আসতে হলে শিক্ষার্থী পরিচয়ে আসতে হবে। কোনো দলীয় ব্যানার বা পরিচয়ে আসার সুযোগ নেই।

 

আরও পড়ুন

×