সাক্ষাৎকার: নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারি ও সামান্তা শারমিন
আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়া উচিত

কোলাজ
সমকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ০০:২৮ | আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ০৩:০২
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে গড়ে ওঠা জাতীয় নাগরিক কমিটির অভিমত–সংসদের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়া উচিত। সংস্কার প্রয়োজন স্থানীয় সরকারেও। রাজনৈতিক দলে রূপান্তর, সংবিধানে পরিবর্তন ও নির্বাচনী পদ্ধতির বদল দরকার। সমকালকে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক মুহাম্মদ নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারি এবং মুখপাত্র সামান্তা শারমিন। দু’জনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রাজীব আহাম্মদ
সমকাল: জাতীয় নাগরিক কমিটি রাজনৈতিক দলে রূপান্তরিত হতে পারে?
নাসীরুদ্দীন: আমরা আসলে রাষ্ট্রের কথা বলছি, রাজনৈতিক দলের নয়। তরুণ সমাজকে সংগঠিত করছি; যাতে তারা ব্যবসা, তথ্যপ্রযুক্তি, সাংবাদিকতাসহ সব খাতে নেতৃত্ব নিতে পারে। কেউ যদি রাজনীতি করতে চায়, বা তেমন যদি পরিস্থিতির উদ্ভব হয়, তাহলে তখন ভাবব।
সমকাল: এই ধারণা নতুন নয়। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় থাকাবস্থায় প্রথমে জাগদল পরে বিএনপি গঠন করেন। যুবক, কৃষকদের সংগঠিত করার কথা বলেছিলেন। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতা দখলের পর জাতীয় ফ্রন্ট তৈরি করেন। পরে সামনে আসে জাতীয় পার্টি। জাগদল, জাতীয় ফ্রন্ট সবই ছিল ক্ষমতায় থেকে রাজনৈতিক দল গড়ার ধাপ। সেই পথেই এগোচ্ছেন?
নাসীরুদ্দীন: জাতীয় নাগরিক কমিটির রাজনৈতিক অভিলাষ নেই। বাংলাদেশের জনসংখ্যার অধিকাংশ তরুণ। যাদের গত ১৫ বছর দমিয়ে রাখা হয়েছে, তাদের এখন উঠে আসার সুযোগ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশকে পুনর্নির্মাণে তাদের দরকার।
সমকাল: জিয়াউর রহমান এবং এরশাদ এই একই কথা বলেছিলেন দল গঠনের আগে।
জিয়াউর রহমান দল গঠনের আগেই ‘যুব উন্নয়নের’ স্লোগান দিয়েছিলেন। এরশাদ জাতীয় পার্টির জন্মের তিন বছর আগে যুব সংগঠন তৈরি করেন।
নাসীরুদ্দীন: তারা তাহলে সেই তরুণদের পাননি।
সমকাল: ক্ষমতায় থেকে দল গঠনে সমালোচনা তাদের নিতে হয়েছে। আপনরাও কি রাষ্ট্র ক্ষমতার ব্যবহার করে দল করছেন?
নাসীরুদ্দীন: আমরা কিন্তু রাষ্ট্র ক্ষমতার কাছে যাচ্ছি না। জনগণের কাছে রয়েছি। জাতীয় নাগরিক কমিটি নইলে ক্ষমতাতেই থাকত। আমাদের কেউই সরকারি পদে নেই।
সমকাল: আপনারা কী সমান্তরাল সরকার নন?
নাসীরুদ্দীন: অবশ্যই না।
সমকাল: সমন্বয়করা সরকারি পদে নেই, কিন্তু সুবিধা ভোগ করছেন। নাগরিক কমিটি কি তা করবে না?
নাসীরুদ্দীন: না।
সমকাল: অতীতে ক্ষমতায় থেকে যেসব দল গঠিত হয়েছে, তাতে অন্য দল ভেঙে নেতা ভাগিয়ে আনা হয়েছে।
নাসীরুদ্দীন : আমরা এ ধরনের প্রচেষ্টা চালাব না।
সমকাল: অন্য দলের কেউ তাহলে নাগরিক কমিটির দলে আসতে পারবে না?
নাসীরুদ্দীন: অন্য কোনো দলের সদস্যকে আপাতত নিচ্ছি না। বারবার বলছি, আমরা রাষ্ট্র পুনর্গঠনের কাজ করব। এর ছোট্ট একটি অংশ রাজনৈতিক দল। আমরা রাজনৈতিক দলের পুনর্গঠনেও কাজ করব। আমরা তরুণদের জন্য পথ সহজতর করব। বান্দরবান, খাগড়াছড়ির যে ছেলেটা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা রাখে, সেই নেতৃত্বকে তুলে ধরার চেষ্টা করব।
সমকাল: খোলাসা করে বললে, নাগরিক কমিটির প্রার্থী হবে তৃণমূলের তরুণরা?
নাসীরুদ্দীন: তরুণরাই তরুণদের প্রার্থী হবেন। গ্রামে রাস্তার পাশে যে মানুষটি রয়েছেন, তিনি যতক্ষণ পর্যন্ত সেই তরুণকে নেতা হিসেবে না মানবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তুমি নেতা নও–এই বার্তা দিয়েছি।
সামান্তা: আমরা যে রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অভ্যস্ত, তা যদি ভালো হতো, তাহলে গণঅভ্যুত্থানের প্রয়োজন হতো না। বিদ্যমান ব্যবস্থা রাখা যাবে না, এতে পুরো দেশ একমত।
সমকাল: জনগোষ্ঠীর একটি অংশ শেখ হাসিনার সমর্থক। তাদের কী অস্বীকার করবেন?
সামান্তা: থাকতে পারে। রাজনীতিকে যেভাবে ক্ষমতার লেজুড় হিসেবে দেখানো হয়, তা বদল করতে চাই । জনগণের কাছে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করতে চাই।
সমকাল: বিকেন্দ্রীকরণের পদ্ধতি কী?
সামান্তা: সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান নতুন করে গড়তে হবে। এগুলোর সঙ্গে জনগণের কী সম্পর্ক হবে, তা পুনঃসংজ্ঞায়িত করতে হচ্ছে। আর পদ্ধতি কী হবে, তা নিয়ে গণআলোচনার প্রয়োজন।
সমকাল: প্রতিষ্ঠান আইন অনুযায়ী চললেই জনগণের ক্ষমতায়ন হবে?
সামান্তা: এই জন্যই জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি করার কথা বলেছি।
সমকাল: সেটা তো নাগরিক কমিটির কমিটি।
সামান্তা: নাগরিক কমিটিকে রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দেখছেন বলেই, এমন মনে করছেন। আসলে তা হবে জনগণের কমিটি। তারা যেভাবে সিদ্ধান্ত নেবে, সেভাবেই চলবে।
সমকাল: তার মানে একদলীয় ব্যবস্থা?
সামান্তা: নাগরিক কমিটি রাজনৈতিক দলই নয়, একদলীয় ব্যবস্থা কেন হবে? গণঅভ্যুত্থানের প্রতিশ্রুত রাষ্ট্র সংস্কারে নাগরিক কমিটি এর ঊর্ধ্বে ওঠার কথা বলছে।
সমকাল: তাহলে সংস্কারের কাজ সবাইকে আপনাদের সঙ্গে একমত হয়ে করতে হবে?
নাসীরুদ্দীন: গণঅভ্যুত্থানে বৈষম্যবিরোধীর প্ল্যাটফর্মে সবাই অংশ নিয়েছে। কাউকে কিন্তু বলে দিতে হয়নি, কী করতে হবে। বাড্ডা, মিরপুরে গিয়ে কেউ নেতৃত্ব দেয়নি। সবাই নিজস্ব বোধ থেকে অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছে। অভ্যুত্থানের এই বোধ গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে দিতে চাই। তাই কমিটি করার কথা বলছি, মানুষকে সংঘবদ্ধ করতে।
সমকাল: এই কাজটা কে করবে সরকার নাকি নাগরিক কমিটি? যদি নাগরিক কমিটি করে, তাহলে মেনে নিতে হবে নাগরিক কমিটি সরকারি দল।
নাসীরুদ্দীন : সরকার করবে।
সমকাল: ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে হয়েছে বলেই অগ্রহণযোগ্য। ধরুন, দুই বছর পর নির্বাচন হলো, তাতে নাগরিক কমিটির নেতারা অংশ নিলেন, তাহলে ব্যাপারটা দাঁড়াবে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন।
নাসীরুদ্দীন: নাগরিক কমিটির কেউ নির্বাচন করবে, তা কিন্তু কেউ বলেনি।
সমকাল: তাহলে নির্বাচন করবেন না?
নাসীরুদ্দীন: তা বলিনি।
সমকাল: তাহলে ঘোষণা দিন, নির্বাচনে অংশ নেবেন না।
নাসীরুদ্দীন: কেন এ ঘোষণা দেব?
সমকাল: ধরে নিলাম, নাগরিক কমিটি নির্বাচন থেকে দূরে থাকবে। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা জেলা-উপজেলায় যাচ্ছেন। এতে স্পষ্টত দল গঠনের পূর্ব প্রস্তুতি।
সামান্তা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার ব্যবহার করে নানান মানুষ নানান বিতর্কিত কাজ করছে। দল হোক বা না হোক, ব্যানারকে বিতর্কিত না করার চেষ্টা তো থাকবে।
নাসীরুদ্দীন: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার নিয়ে অনেকে বিপজ্জনক কাজ করছে, তা রোধ করতেই সমন্বয়করা যাচ্ছেন। তারা সরকারি নিরাপত্তা চাননি। জনগণ আমাদের শক্তি। তারা যদি আমাদের রক্ষা করতে পারেন, করবেন। নইলে মারা যাব।
সমকাল: হাসনাত আবদুল্লাহ চট্টগ্রামে শহীদ ছাত্রদল নেতা ওয়াসিম, শহীদ শিবির নেতা প্রান্তের বাসায় যাননি। এ নিয়ে কথা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, অভ্যুত্থানের শরিক রাজনৈতিক শক্তিকে অস্বীকার করছেন।
নাসীরুদ্দীন: ছাত্রদলের কর্মী হিসেবে একজন মানুষের পরিচয় হওয়া উচিত নয়। শহীদেরা গণঅভ্যুত্থানের। কোনো দলের নন।
সমকাল: কিন্তু এ নিয়েতো কথা হচ্ছে। এটা তো তাদের সঙ্গে দূরত্বের আলামত।
নাসীরুদ্দীন: এটা দূরত্ব নয়। এটা ইতিহাসের নির্মম বাস্তবতা।
সমকাল: বিএনপির দেড় শতাধিক, জামায়াতের শতাধিক নেতাকর্মী অভ্যুত্থানে প্রাণ দিয়েছেন। বিজয়-পরবর্তী সময়ে তাদের অংশীদারিত্ব অস্বীকার করছেন?
নাসীরুদ্দীন: অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সময় সব দলকে বলেছি, অংশ নিতে। সবাই স্পষ্ট করে বলেছে, ‘আমরা নির্বাচন করব। সরকারে অংশ নেব না’।
সমকাল: নাগরিক কমিটির আট দফার একটি গণপরিষদের মাধ্যমে নতুন সংবিধান। কীভাবে হবে গণপরিষদ?
নাসীরুদ্দীন: এটা গণআলোচনার বিষয়। বাহাত্তরের সংবিধানের ঘোষণাপত্র থেকে সব কিছু একদলীয়। এই সংবিধান এমন বিতর্কিত জায়গায় উপনীত হয়েছে, ন্যূনতম পরিবর্তন আনলেও ১৯টি অনুচ্ছেদ বদল করতে হচ্ছে। এই সংবিধানের কারণেই জনগণ ১৫ বছর জুলুমের শিকার হয়েছে। এই সংবিধানের পক্ষে বলা মানে জুলুমের পক্ষে বলা।
সমকাল: গণআলোচনা আসলে হবে কার সঙ্গে?
নাসীরুদ্দীন: সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে হবে। প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে, প্রান্তিকজনের সঙ্গে হবে। গ্রামে গিয়ে উঠান বৈঠক করব।
সমকাল: আওয়ামী লীগ বাদ দিয়ে গণপরিষদ অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে?
নাসীরুদ্দীন: আওয়ামী লীগকে রাখব না বলিনি। দুইটা শব্দ বলেছি redemption (দায়মোচন) এবং reconciliation (মিটমাট)। দায়মোচনের পর মিটমাটে যাব।
সমকাল: reconciliation এর পদ্ধতি কী হবে?
নাসীরুদ্দীন: একক সিদ্ধান্তের বিষয় নয়। যে লোকটা ছাত্রলীগ করেছে, শুধু নৌকায় ভোট দিয়েছে, সে এসে বলুক, আমাকে ভোট দিতে জোর করেছে, কারচুপি করতে বাধ্য করেছে। সে যখন জনসমক্ষে এসে এ কথা বলবে, তখন মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে, কোন পদ্ধতিতে reconciliation হবে।
সমকাল: তার মানে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ঢালাও ধরপাকড় হবে না?
সামান্তা: বিচারিক প্রক্রিয়া শুধু গণঅভ্যুত্থানকেন্দ্রিক নয়। ১৫ বছরের ইতিহাস আছে। যদি মামলা হয়, পুলিশকে নিতে হবে। সব মামলাই আদালতে যেতে হবে। তারপর না মানুষ ঠিক করবে, তারা গ্রহণ করবে কী করবে না।
সমকাল: বিএনপির শাসনামলে যেসব অপরাধ হয়েছে, এর ক্ষমা চাইতে হবে না? জামায়াত একাত্তরে যা করেছে, এর জন্য ক্ষমা চাইতে হবে না?
সামান্তা: নাগরিক কমিটি এ জন্যই মানুষের কথা বলার জায়গা তৈরি করতে চায়।
সমকাল: বিএনপি কী এই মুহূর্তে আপনাদের প্রতিদ্বন্দ্বী, প্রতিযোগী নাকি সহযোগী?
নাসীরুদ্দীন: দল হিসেবে বিএনপির সঙ্গে সহযোগিতার জায়গা রয়েছে। তরুণরা কী চাইছে, তাদের এ বার্তা দিতে পারি; যাতে বিএনপি তরুণদের সঙ্গে কানেক্ট করতে পারে। যদি বিএনপি তা না করে, আমাদের কিছু করার নেই।
সমকাল: গত কিছু দিনের বক্তৃতা বিবৃতি অনুসরণ করলে স্পষ্ট, বিএনপি আপনাদের প্রতি খুব ইতিবাচক নয়। আপনারা জামায়াতের প্রতি বেশি সহানুভূতি দেখাচ্ছেন–এমন কথা রয়েছে।
নাসীরুদ্দীন: বিএনপি বৈঠকে এমন কিছু বলেনি। জামায়াত-বিএনপি এমন রাজনৈতিক binary তে যাচ্ছি না। বিএনপি ও জামায়াতের সম্পর্কে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি সমান। আমাদের সহানুভূতি একমাত্র তরুণদের প্রতি।
সমকাল: বিএনপি বাদে অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া সব শক্তিকে এক জোটে আনার চেষ্টা চলছে। জামায়াতসহ অন্যান্য দল এতে রয়েছে। নাগরিক কমিটি ভবিষ্যতে যে দল গঠন করবে, এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। এমন গুঞ্জন রয়েছে।
নাসীরুদ্দীন: ভবিষ্যতে যদি তরুণদের কোনো দল হয়, বাংলাদেশের জন্য কাজ করে, তখন দেখা যাবে। বিএনপির তরুণরাও যদি করে, সমর্থন করব।
নির্বাচনের সময় নিয়ে সবার মধ্যে প্রশ্ন ঘুরপাক করছে। আমরা বলি, যত দ্রুত দরকার এটা (নির্বাচন) করা উচিত।
সমকাল: এই ‘যত দ্রুত’ আসলে কতদিন?
নাসীরুদ্দীন: এ সিদ্ধান্ত তো সরকারের।
সামান্তা: জনগণ ঠিক করবে নির্বাচন কবে হবে এবং তার মনোনীত প্রার্থী কে।
সমকাল: বিএনপি চায় শিগগির নির্বাচন, জামায়াত চায় সংস্কারের পর নির্বাচন। যেহেতু নাগরিক কমিটির দল গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে, তাই আপনাদের কী চাওয়া।
সামান্তা: আমরা একবারও বলেছি যে রাজনৈতিক দল গঠনের অভিলাষ রয়েছে?
সমকাল: অতীতে যারা ক্ষমতায় থেকে দল করেছিলেন, তারাও আত্মপ্রকাশের আগ পর্যন্ত স্বীকার করেননি।
নাসীরুদ্দীন: সেই অতীত থেকে শিক্ষা না নিয়ে, কেউ যদি চব্বিশে এসে সেই কৌশল প্রয়োগ করতে চায়, সেখান থেকে বের হয়ে তরুণদের সঙ্গে একাত্ম হতে না পারে, এটা আমাদের সমস্যা না।
সমকাল: নাগরিক কমিটি রাজনৈতিক দলে রূপান্তরিত হলে কেমন নির্বাচন চাইবেন? আনুপাতিক হারে নাকি বিদ্যমান সংসদীয় আসন পদ্ধতিতে?
নাসীরুদ্দীন: যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাসহ আরও কিছু প্রস্তাবনা এসেছে। কী হওয়া উচিত, তা সমাজের সকল বিজ্ঞজনের সঙ্গে আলাপটা জারি রাখব।
সমকাল: সংসদের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চান?
নাসীরুদ্দীন: আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়া উচিত। সমাজের নিচুতলা থেকে কাঠামো ঠিক হয়ে আসা উচিত।
সমকাল: স্থানীয় সরকারেও তো সংস্কার প্রয়োজন।
নাসীরুদ্দীন: স্থানীয় সরকারকে শুধু নির্বাচনে সীমাবদ্ধ দেখি না। সমাজ পচে গেছে। শুধু নির্বাচন দিয়ে এর সমাধান হবে না।
সমকাল: স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে হলে, জাতীয় নাগরিক কমিটির অংশগ্রহণ থাকবে?
নাসীরুদ্দীন: নির্বাচন যদি বিশ্বাসযোগ্য হয় এবং তরুণ সমাজ অংশগ্রহণের প্রয়োজন মনে করলে, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে। তবে তাদের কাছে আহ্বান থাকবে, গত ১৫ বছরে যেভাবে সব কিছু ধ্বংস করা হয়েছে, তা ঠিক না হওয়া পর্যন্ত কিছুতেই অংশ নেওয়া উচিত হবে না। কোনো ক্ষত ভেতর থেকে না সারিয়ে উপরে ব্যান্ডেজ দিয়ে লাভ নেই। সমাজে যত ব্যাকটেরিয়া আছে তা রিমুভ করতে হবে। তরুণরা তা করবে, বয়োজ্যেষ্ঠদের পরামর্শে এবং ছাত্রদের সৃজনশীলতায়।
- বিষয় :
- সাক্ষাৎকার