ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

নবজাতককে অভ্যর্থনা জানাতে

নবজাতককে অভ্যর্থনা জানাতে

রোজী আরেফিন ন

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৪ | ২৩:১১

বজাতককে অভ্যর্থনা জানানো প্রতিটি পরিবারের জন্য অতি আনন্দময় এবং আবেগপূর্ণ মুহূর্ত। এ মুহূর্তকে স্মরণীয় করতে এবং নবজাতকের সুস্বাস্থ্য ও আরামের নিশ্চয়তার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতি নিতে হয়। সে ক্ষেত্রে নবজাতকের জামাকাপড়, প্রসাধনসামগ্রী থেকে শুরু করে আনুষঙ্গিক জিনিস কেনার সময়, নবজাতকের কথা মাথায় রেখে বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন জরুরি। পাশাপাশি ঘরের পরিবেশও সুরক্ষিত রাখা প্রয়োজন। 

নবজাতকের আগমনের আগে প্রস্তুতি
পরিষ্কার ও সুরক্ষিত পরিবেশ:  ঘরগুলোকে ভালোভাবে পরিষ্কার করুন এবং অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরিয়ে রাখুন। নবজাতকের রুমে বেশি ফার্নিচার না রাখাই ভালো। ফাইবার বা তন্তু উৎপন্ন করে এমন পর্দা বা কার্পেট নবজাতকের রুমে ব্যবহার করা যাবে না।
নবজাতকের জন্য আলাদা বিছানা: নবজাতকের বিছানা হতে পারে বড়দের খাটের মধ্যেই। আবার ঘরে আলাদা ছোট দোলনা, বেবি খাট রাখতে পারেন। এজন্য একটি ভালো মানের বেবি খাট, কট ও দোলনা কিনুন। খেয়াল করুন এর চারপাশ সুরক্ষিত এবং মাঝখানের পজিশনটা আরামদায়ক কিনা। বিছানার ম্যাট্রেস অবশ্যই নরম এবং সমান হতে হবে। রেক্সিন অবশ্যই ভালো মানের ব্যবহার করবেন। পাশাপাশি নরম এবং পরিষ্কার  চাদর, কম্বল ও বালিশ ব্যবহার করুন। 
প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহ: নবজাতকের জন্য কিছু প্রয়োজনীয় উপকরণ আগেই কিনে রাখতে হবে। যেমন– ন্যাপি ও ডায়াপার। ওয়েট টিস্যু, রেগুলার সফট টিস্যু। বেবি সোপ, বেবি শ্যাম্পু, বেবি লোশন, বেবি পাউডার ও বেবি অয়েল।
ডেটল, স্যাভলন (চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যবহার করবেন)। নবজাতককে গোসল দেওয়ার জন্য আলাদা বেবি গামলা, তোয়ালে ও গামছা। গরমে নবজাতকের জন্য পাতলা নরম কাপড়ের নিমা‍ কিনুন। নবজাতকের আগমন শীতে হলে সুতির কাপড়ের পাশাপাশি পশমের তৈরি টুপি, ফুল প্যান্ট, মোজা, সোয়েটার কিনে রাখুন এখন থেকেই। এ ছাড়া ফ্লানেলের পোশাকও কয়েক সেট অবশ্যই কিনে রাখতে পারেন। এগুলো বেশ হালকা। বৃষ্টির দিনে ফ্লানেল কাপড় ভীষণ কাজে আসে। ভালো ব্র্যান্ডের রেক্সিন, বেবি মশারি, বেবি বালিশ এবং বেবি কাঁথা কিনে রাখুন। সঙ্গে দুটি বেবি কোলবালিশ।
অন্যান্য অ্যাকসেসরিজ: নবজাতকের জন্য বেবি নেইল কাটার, ফিডিং বোতল, ফিডিং  নিপল, থার্মোমিটার ও স্যালাইন ড্রপার।
ফর্মুলা: নবজাতকের জন্য মায়ের দুধ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যদি কোনো কারণে মায়ের দুধ না পাওয়া যায়, তাহলে সঠিক ফর্মুলা দেওয়ার জন্য চিকিৎসের পরামর্শ নিয়ে সেটাও কিনে নিতে হবে।
পরিবারের প্রস্তুতি: পরিবারের নতুন সদস্য হয়ে যখন একজন নবজাতকের আগমন হয়, গোটা দায়িত্ব কেবল নতুন মা অথবা নতুন বাবার থাকে না। বরং পরিবারের সবাইকে মানসিকভাবে নবজাতকের বিভিন্ন দায়িত্ব নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়।
মানসিক প্রস্তুতি: নবজাতক আসার পর ঘরের রুটিনে কিছু পরিবর্তন আসবে; যা সবার মানিয়ে নিতে হবে। বিশেষ করে মা-বাবার মানসিক প্রস্তুতি এবং ধৈর্য ধরে নবজাতকের যত্ন নেওয়ার মানসিকতা থাকা জরুরি।
দায়িত্ব ভাগাভাগি: নবজাতক আসার পর পরিবারের মধ্যে দায়িত্ব ভাগাভাগি করা প্রয়োজন। মা-বাবা, দাদা-দাদি বা নানা-নানির মধ্যে কাজের ভাগ করে নেওয়া উচিত। নবজাতককে খাওয়ানো, গোসল করানো এবং ঘুম পাড়ানোর কাজগুলোকে সমানভাবে ভাগ করে নিন।
অতিথিদের অভ্যর্থনা: নবজাতকের আগমনের পর অনেক আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুবান্ধব নবজাতককে দেখতে আসবেন। তাদের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে রাখা ভালো; যাতে নবজাতক এবং মা-বাবার কিছুটা হলেও আরাম নিশ্চিত হয়।
অভ্যর্থনা উপকরণ: নবজাতকের আগমন উপলক্ষে বাসায় কিছুটা সাজসজ্জা করতে পারেন। যেমন–
ছোট ছোট বেলুন এবং ব্যানার লাগাতে পারেন। নবজাতকের নাম লেখা একটি প্ল্যাকার্ড লাগাতে পারেন।
চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরামর্শ: নবজাতকের স্বাস্থ্য পরামর্শ এবং নিয়মিত চেকআপের জন্য একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। নবজাতকের ভ্যাকসিনেশন শিডিউল ঠিক রাখুন। 
মায়ের স্বাস্থ্যের যত্ন: নবজাতকের সঙ্গে সঙ্গে মায়ের স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দিতে হবে। মায়ের পর্যাপ্ত বিশ্রাম, সঠিক পুষ্টি এবং মানসিক সাপোর্ট নিশ্চিত করুন। v

আরও পড়ুন

×