ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

ত্বকের যত্নে ‘ক্লে মাস্ক’

ত্বকের যত্নে ‘ক্লে মাস্ক’

ত্বক

কে এন দেয়া

প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৩:১২

বর্তমান সময়ে সৌন্দর্যচর্চার দুনিয়ায় গালভরা একটি নাম হলো ‘ক্লে মাস্ক’। ত্বক ও চুলের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে ক্লে মাস্ক অথবা মাড মাস্ক ব্যবহার করেন অনেকেই। বিশেষ করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি, তৈলাক্ততা দূর এবং ব্রণের সমস্যা কমিয়ে আনতে বিভিন্ন ক্লে মাস্কের জনপ্রিয়তার কথা আর নতুন করে বলার কিছু নেই। 
ক্লে মাস্কের ব্যবহার করতে চাচ্ছেন, তাই বলে যে কোনো ক্লে মাস্ক ব্যবহার শুরু করে দিলেই কিন্তু আপনি উপকার পাবেন না। আপনার ত্বকের ধরন ও সমস্যাভেদে ক্লে মাস্কের ধরন বেছে নিতে হবে। শুধু তাই নয়, ক্লে মাস্ক ব্যবহারের সঠিক নিয়ম মানতে হবে। তবেই পাবেন উপকার।
ক্লে মাস্কের ধরন
ক্লে মাস্ক বা মাড মাস্ক কিন্তু কাদা দিয়ে তৈরি হয় না! বরং মিহি পলি, খনিজ উপাদান, এমনকি অগ্ন্যুৎপাত থেকে তৈরি ছাই থাকতে পারে ক্লে মাস্কের উপাদান হিসেবে। দুই ধরনের ক্লে মাস্ক বা মাড মাস্ক বেশি ব্যবহার হয় ত্বকের যত্নে– বেনটোনাইট ক্লে ও ক্যাওলিন ক্লে।
lক্লে মাস্কগুলোর মাঝে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো বেনটোনাইট ক্লে। একে সবচেয়ে শক্তিশালী এবং সবচেয়ে কার্যকরী ক্লে মাস্ক বলেও ধরা হয়। ত্বক থেকে দূষণ দূর করতে, ব্রণের উপদ্রব কমাতে, এমনকি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ কমাতেও এই ক্লে ব্যবহার করা হয়।
অগ্ন্যুৎপাত থেকে তৈরি ছাই রয়েছে বেনটোনাইট ক্লের উপাদানের মাঝে। মুখের ত্বকের পাশাপাশি শরীরের ত্বকের যত্ন নিতেও ব্যবহার করা যায় এই ক্লে।
তবে বেনটোনাইট ক্লে ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা ভালো। আপনার ত্বক যদি সেনসিটিভ হয়ে থাকে, তবে এই ক্লে ব্যবহার করলে ত্বক খুব শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, এমনকি জ্বালাপোড়াও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ক্যাওলিন হতে পারে আপনার জন্য উপকারী।
lত্বকে নিয়মিত ব্যবহারের জন্য ক্যাওলিন ক্লে একটি আদর্শ উপাদান। বেনটোনাইট ক্লের মতো খুব কার্যকর না হলেও এর উপকারিতার তালিকা নেহাত ছোট নয়। এতে মূলত ক্যাওলিনাইট এবং অন্যান্য খনিজ থাকে। ত্বককে শুষ্ক না করেই ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করতে পারে এই ক্লে। এমনকি দীর্ঘদিন নিয়ম মেনে ব্যবহার করলে ত্বকে বলিরেখা কমাতেও তা প্রভাব রাখতে পারে। 
ক্লে মাস্কগুলো মূলত তৈলাক্ত বা কম্বিনেশন ত্বকের জন্য উপকারী। এক ধরনের ক্যাওলিন ক্লে রয়েছে যা শুষ্ক ত্বকেও ব্যবহার করা যায় তা হলো, পিঙ্ক ক্লে। তবে অবশ্যই তা ব্যবহার করতে হবে সঠিক নিয়মে।
lএ পর্যায়ে স্বাভাবিকভাবেই আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, মুলতানি মাটি তাহলে কী ধরনের ক্লে মাস্ক? মুলতানি মাটির ইংরেজি নাম হলো ফুলারস আর্থ। এতে অন্যান্য খনিজের পাশাপাশি বেনটোনাইট ক্লে থাকে। এর নামটি এসেছে পাকিস্তানের মুলতান অঞ্চল থেকে। ভারতীয় উপমহাদেশের নারীরা সৌন্দর্যচর্চায় চন্দন, বেসন, হলুদ বাটার পাশাপাশি মুলতানি মাটিও ব্যবহার করে আসছেন যুগ যুগ ধরে। মূলত ত্বকের তৈলাক্তভাব দূর করতে মুলতানি মাটির মাস্ক উপকারী। 
ব্যবহার করবেন যেভাবে
ক্লে মাস্ক তৈরি এবং ব্যবহার দুটিই বেশ সহজ। অনেক ক্লে মাস্ক পেস্ট হিসেবে টিউব অথবা টাবে কিনতে পাওয়া যায়। এ ছাড়া যেসব ক্লে মাস্ক গুঁড়া হিসেবে পাওয়া যায়, সেগুলোও সহজেই ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করে নিতে পারেন–
lএক টেবিল চামচ ক্লে মাস্ক তিন টেবিল চামচ পানির সঙ্গে মিশিয়ে মিহি পেস্ট তৈরি করে নিন। পানির বদলে গ্রিন টি, গোলাপজল অথবা অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন। কখনোই লেবুর রস বা ভিটামিন সি জাতীয় তরল মেশাবেন না। এতে মাস্কের কার্যকারিতা কমে যাবে। ত্বকের ব্রণের উপদ্রব থাকলে কয়েক ফোঁটা টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে নিতে পারেন। ত্বকে আর্দ্রতার ঘাটতি থাকলে ব্যবহার করতে পারেন আমন্ড অয়েল। যাদের ত্বক শুষ্ক, তারা গ্লিসারিন বা মধু ব্যবহার করে পেস্ট তৈরি করে নিতে পারেন। 
lমাস্ক তৈরির পাত্র এবং চামচ যেন ধাতব না হয়। কাচ, সিরামিক, কাঠ বা মাটির পাত্র ও চামচ ব্যবহার করুন। 
lমুখ পরিষ্কার করে সমানভাবে পুরো মুখে পেস্টটি মেখে নিন। অবশ্যই চোখ, ঠোঁট এবং চুলের আশপাশের ত্বক এড়িয়ে চলুন।
l১০-১৫ মিনিট মাস্কটি মুখে রাখুন। এর পর ধুয়ে ফেলুন। যাদের ত্বক শুষ্ক, তাদের মনে রাখতে হবে, মাস্কটি যেন একেবারে শুকিয়ে না যায়। মাস্ক শুকিয়ে ত্বকে টান টান ভাব আসার আগেই তা ধুয়ে ফেলুন ঈষদুষ্ণ পানি দিয়ে।
lত্বক হালকা ভেজা থাকা অবস্থাতেই নিজের পছন্দের ময়েশ্চারাইজার ক্রিম মেখে নিন। v

আরও পড়ুন

×