ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

অস্তিত্ব সংকট ছাপিয়ে টিকে থাকার লড়াই

অস্তিত্ব সংকট ছাপিয়ে টিকে থাকার লড়াই

অলংকরণ :: দেওয়ান আতিকুর রহমান

কুসুম তাহেরা

প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২৪ | ২৩:০৩

মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাসের মধ্যে সৈয়দ শামসুল হক রচিত ‘নিষিদ্ধ লোবান’ উল্লেখযোগ্য। উপন্যাসটি ‘গেরিলা’ নামে চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের ভয়াবহতা ও নির্মমতার চিত্র অনেকাংশেই তুলে ধরে ‘নিষিদ্ধ লোবান’। আর তা উপলব্ধি করার জন্য উপন্যাসটি অবশ্যপাঠ্য। মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সদস্যদের অত্যাচারী মনোভাবের অংশটুকু দিয়ে শুরু হলেও বিলকিসের অস্বাভাবিক সাহসিকতা, নারীত্বই উপন্যাসের মুখ্য বিষয়। ‘নিষিদ্ধ লোবান’ নামটি শুনেই প্রশ্ন জাগে, কৌতূহল হয়। লোবান নিষিদ্ধ ঠিক কেন? এর উত্তর পেতে বইটি পড়ার আগ্রহ তীব্র হলো। পড়ার পর মনে হলো, আমি নিজেই প্রত্যক্ষভাবে আপাদমস্তক নিষিদ্ধ লোবানে স্নান সারলাম। ঘিনঘিনে এক ঘৃণার অনুভূতি। এই ঘৃণা সেসব বীভৎস চেতনাধারী অত্যাচারীদের প্রতি, যারা এক সময় ‘বাঙালি’ নামটিকে নিশ্চিহ্ন করতে উদগ্রীব হয়েছিল।
মুক্তিযুদ্ধে ধর্ম কেমন মূল্যহীন ছিল, কত শত মুসলমান চিতায় পুড়েছে, আবার কত শত হিন্দুর কবর হয়েছে– একটি যুদ্ধ মানুষের অস্তিত্বের সংকটকে ভয়াবহভাবে প্রকাশ করে। দেশে নানা সংকট ঘনীভূত হতে থাকে, বৈষম্য চরম  আকার ধারণ করে, মানুষ কোনঠাসা হয়ে পড়ে, তখন কিছু মানুষের অগ্রণী ভূমিকায় আমরা এক হয়ে আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে প্রস্তুত হই। চমৎকার লিখনশৈলী সৈয়দ শামসুল হকের। দারুণ সব শব্দ চয়ন তাঁর! ভাষার ওপর প্রবল দখল এবং বর্ণনায় সর্বাধিক সতেজতা ছোট্ট বইটিকে অনবদ্য করে তুলেছে। কুড়িগ্রামের মানুষ সৈয়দ শামসুল হক শায়িত রয়েছেন সেখানেই। এই সব্যসাচী লেখকের লেখা পড়ে মুগ্ধ হই, বিস্মিত হই তাঁর দর্শন ভেবে। তিনি টিকে থাকবেন যতদিন টিকে থাকবে বাংলা সাহিত্য। বর্তমানে আমরা পাঠকরা ঋদ্ধ হচ্ছি তাঁর মতো লেখক ছিলেন বলে। 
সুহৃদ, ঢাকা

আরও পড়ুন

×