ফুটবলারদের জন্য ইউনিক আইডি

ছবি: ফাইল
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২২ | ০১:০৬ | আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২২ | ০১:০৬
জাতীয় ফুটবল দলে সর্বাধিক ম্যাচ খেলা নিয়ে বিতর্ক পুরোনো। গত মাসে সেই বিতর্ক নতুন করে সামনে আসে। বিভিন্ন মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ৬৬ ম্যাচ খেলা জামাল ভূঁইয়া দেশের জার্সিতে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা ফুটবলার। কিন্তু মামুনুল ইসলাম, আলফাজ আহমেদ ও হাসান আল মামুনের দাবি, তাঁদের ম্যাচ সংখ্যা আরও বেশি।
শুধু কি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সংখ্যা, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন কোনো তথ্য সংরক্ষণ করেনি বলে সর্বোচ্চ গোলদাতার নাম নিয়েও আছে বিতর্ক। অনেকের মুখের কথায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে ম্যাচ এবং গোলের সংখ্যা উল্লেখ করলেও এ ব্যাপারে প্রামাণ্য কোনো দলিল নেই বলে সন্দেহটা থেকেই যাচ্ছে।
তাই তো ভবিষ্যতে যেন ম্যাচ, গোলসংখ্যাসহ আরও বেশ কিছু বিষয় নিয়ে বিতর্ক না হয় সেজন্য ফুটবলারদের জন্য ডাটাবেজ সফটওয়্যার করছে ঢাকা মহানগরী ফুটবল লিগ কমিটি। এই ডাটাবেজে প্রত্যেক ফুটবলারের একটি করে ইউনিক আইডি থাকবে। সেই আইডিতে গিয়ে প্লেয়ারের নাম সার্চ করলে তাঁর সব ডাটা চলে আসবে।
সবকিছু ঠিক থাকলে নতুন মৌসুমে দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় বিভাগ ফুটবল থেকেই ডাটাবেজ সফটওয়্যারের কাজ শুরু করার আশা মহানগরী ফুটবল লিগ কমিটির চেয়ারম্যান মো. ইমরুল হাসানের।
বিশ্ব ফুটবলের ঠিক উল্টো পথে বাংলাদেশের ফুটবল। লিওনেল মেসি-ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মতো মহাতারকার নাম সার্চ করলেই উঠে আসবে তাঁদের ব্যক্তিগত জীবন এবং ফুটবল ক্যারিয়ারের সব পরিসংখ্যান। ফুটবল যাঁদের কাছে 'ধর্মের' মতো, সেই লাতিন এবং ইউরোপের দেশগুলোতে খেলোয়াড়দের তথ্য সংরক্ষণ রাখাটা স্বাভাবিকই।
প্রতিবেশী দেশ ভারত, নেপাল এমনকি মালদ্বীপের ফুটবল ফেডারেশনেরও আছে ডাটাবেজ সফটওয়্যার। আধুনিক ফুটবলে যখন সবকিছুই প্রযুক্তিনির্ভর, সেখানে বাফুফে পড়ে আছে অ্যানালগ যুগে! আন্তর্জাতিক ম্যাচে বর্তমানে বাংলাদেশ দলের কোনো ফুটবলার গোল করলে সংখ্যাটা তাঁর মুখ দিয়েই শুনতে হয়। সঠিক তথ্য যাচাই করার কোনো উপাত্ত না থাকায় ফুটবলারদের গল্পের মতো শোনা কথাগুলোকে পাঠকদের সামনে উপস্থাপন করে আসছে সংবাদমাধ্যমগুলো।
সন্দেহ, বিতর্কের অবসান ঘটাতেই ব্যক্তিগত উদ্যোগে দেশের ফুটবলে প্রযুক্তির ছোঁয়া আনতে যাচ্ছেন বলে সমকালকে জানান বাফুফে সহসভাপতি ও বসুন্ধরা কিংস সভাপতি ইমরুল হাসান, 'জাতীয় দলের পেছনে কোনো তথ্য জানতে চাইলে আপনাকে স্মৃতি হাতড়ে বের করতে হয়। সঠিক কোনো ডকুমেন্ট নেই। আমরা চাই, প্রত্যেক প্লেয়ার যখন ক্যারিয়ার শুরু করবেন, তখন থেকে তাঁর একটি ইউনিক আইডি থাকবে। ওই প্লেয়ারের ইউনিক আইডিতে সার্চ করলেই তাঁর সব তথ্য চলে আসবে। মোটামুটি সফটওয়্যার তৈরি হয়ে গেছে। আমাদের বসুন্ধরা গ্রুপের নিজস্ব আইটি ডিপার্টমেন্টের দ্বারা এই সফটওয়্যার করা হয়েছে।'
দেশের ফুটবলে নতুন এ ডাটাবেজটি আন্তর্জাতিক মানের। বিশ্বের তারকা ফুটবলারদের নাম সার্চ করলে যেভাবে সব তথ্য চলে আসে, ঠিক তেমনটিই দেখা যাবে নতুন এই সফটওয়্যারে। তবে নতুন এই সফটওয়্যারে বতর্মান জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের ডাটাবেজ করা সম্ভব নয়। যে ফুটবলার তৃতীয় বিভাগ থেকে খেলাটা শুরু করবে, সেই ফুটবলারের থাকবে ইউনিক আইডি।
জাতীয় দলে গেলেও তাঁর সেই আইডিতে সার্চ করলে অতীতের যা আছে সবকিছু পাওয়া যাবে। কোন দলে খেলেছে, কয়টা গোল করেছে, কয়টা অ্যাসিস্ট ছিল, কত মিনিট খেলেছে, জাতীয় দলে কত ম্যাচ খেলেছে- সব চলে আসবে ইউনিক আইডিতে। নতুন এই সফটওয়্যার কার্যকর হলে ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ম্যাচ এবং গোল সংখ্যা নিয়ে কিছুটা হলেও বিতর্কের অবসান ঘটবে বলে বিশ্বাস ফুটবলবোদ্ধাদের।