'বিপিএল খেলোয়াড় তৈরির জায়গা না'

ছবি: ফাইল
...
প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০১৯ | ০১:০১ | আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৯ | ০১:০৯
টি২০-তে ভারতের বিপক্ষে কখনোই জেতেনি বাংলাদেশ। ভারতের মাটিতেই এবার মনস্তাত্ত্বিক সে বাধা ভেঙে দিতে চান সাকিব আল হাসান। তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজ জিততে চান তিনি। এক বছর পর টি২০ বিশ্বকাপ। এই বিশ্বকাপ সামনে রেখে দল গোছানোর পরীক্ষা-নিরীক্ষাও সেরে ফেলতে চান এই সিরিজে। গতকাল সমকালের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে জাতীয় দলের পাশাপাশি ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়েও কথা বলেছেন। যেমন বিপিএলের সপ্তম আসরের নতুন কিছু নিয়ম পছন্দ হয়নি তার। অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতাকে দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে বাধা হিসেবেই দেখছেন তিনি। শুধু জাতীয় দলকেন্দ্রিক ফোকাস না রেখে ক্রিকেট সংগঠকদের এই জায়গাগুলোয় দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সাকিবের এই একান্ত আলাপনে ছিলেন আলী সেকান্দার
সমকাল :নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ইউনিসেফের পুরস্কার মঞ্চে থাকতে পারাটা কতটা গর্বের?
সাকিব :আমি ইউনিসেফের পক্ষ থেকে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে ছিলাম, যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। আমরা একই স্টেজ শেয়ার করেছি। আমার জন্য এটা অনেক গর্বের ও বড় প্রাপ্তি। আমার ধারণা, এ রকম আগে কখনও হয়নি। সুতরাং সেদিক থেকে গর্ব করার মতোই।
সমকাল :আইপিএলে দু'বার এবং সিপিএলে দু'বার চ্যাম্পিয়ন হলেন। এই অর্জনগুলো জাতীয় দলে ভালো খেলতে আপনাকে কি উজ্জীবিত করে?
সাকিব :খুবই আনন্দ লাগে। অবশ্যই উজ্জীবিত করে। কারণ ক্রিকেট খেলুড়ে দেশের মধ্যে আইপিএল, সিপিএল বড় দুটি টি২০ টুর্নামেন্ট। স্বাভাবিকভাবে চ্যাম্পিয়ন দলের অংশ হতে পারা অনেক আনন্দের ও গর্বের বিষয়। কারণ চ্যাম্পিয়নশিপ জিততে আমারও কিছু অবদান রাখার সুযোগ থাকে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেটা করতে পারি। এর প্রভাব অবশ্যই জাতীয় দলের খেলায়ও ফেলে।
সমকাল :বিশ্বকাপের আগে যে কিকের কথা বলেছিলেন, তার খোলাসা তো করেননি। আইপিএলে এবার ম্যাচ খেলতে না পারাই কি কিক?
সাকিব :আইপিএলে গত বছরের আগের বছরই কেবল সব ম্যাচ খেলেছি। এ ছাড়া কোনো আসরেই সব ম্যাচ খেলা হয়নি। তাই ম্যাচ না খেলা বড় কোনো কারণ না। সেটা কিকও নয়। খেলা না-খেলা নিয়ে খুব বেশি ম্যাটার করে না। এর আগেও কোনো এক জায়গায় আমি বলেছি- মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একদিন কথা হচ্ছিল। কথায় কথায় তিনি বলছিলেন, আগে আমরা শচীন, ইমরান খান বা অন্যান্য দেশের বড় ক্রিকেটারদের নিয়ে বলতাম। এখন তোমাকে নিয়ে কথা বলতে পারি। ওই জিনিসটা আসলে আমাকে অনেক বেশি উজ্জীবিত করেছে। তখন থেকে আসলে চিন্তা ছিল বিশ্বকাপে বড় কিছু করে দেখাতে হবে। ভালো কিছু করে দেখানোর একটা তাড়না ছিল। মানুষের প্রত্যাশা ও প্রধানমন্ত্রীর কথায় নিজের প্রতি ওই বিশ্বাস তৈরিই হয়েছিল। বিশ্বকাপের আগের ছয় মাস ওটা আমাকে খুব সাহায্য করেছে।
সমকাল :টি২০ বিশ্বকাপের এক বছর আছে। টিম ম্যানেজমেন্টের অংশ হিসেবে তার প্রস্তুতি কি শুরু করে দিয়েছেন?
সাকিব :দেখুন, নতুন কোচ একটি মাত্র সিরিজ দেখেছেন। তিনি এখনও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর্যায়েই আছেন। টি২০ বিশ্বকাপ নিয়ে অনেক বেশি ফোকাসও করছেন। আমার কাছে মনে হয়, আরও আগে থেকে টি২০ দল গোছানোর সুযোগ পেলে ভালো হতো। ২০১৯ বিশ্বকাপ শেষে মাত্র এক বছর পাচ্ছি। আমরা আর একটা সিরিজ সামনে খেলব। এর পর পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময় থাকবে না। বিশ্বকাপের জন্য দল তৈরি হতে হবে।
সমকাল :গতকাল (বৃহস্পতিবার) ভারতের বিপক্ষে সিরিজের জন্য টি২০ দল ঘোষণা করেছে। দলটা কি আপনার প্রত্যাশামতো হয়েছে?
সাকিব :আমার তো মনে হয় দলটা অবশ্যই ভালো। তবে আমার ধারণা, সবাই হয়তো চিন্তা করেছে পরীক্ষা-নিরীক্ষার সিরিজ হিসেবে দল গড়া। কারণ এটাই খেলোয়াড়দের পরখ করে দেখার শেষ সুযোগ। এর পর থেকে আমাদের দলকে ফিক্স করে ফেলতে হবে। প্রত্যেক ক্রিকেটারের রোল এবং স্কিল নিয়ে কাজ করার দরকার হতে পারে। তাই এবারের দলেও এক-দুটি জায়গায় কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে।
সমকাল :এখন পর্যন্ত ভারতের বিপক্ষে টি২০ না জিতলেও ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। সেদিক থেকে এবার কি ম্যাচ জেতা সম্ভব হবে?
সাকিব :আমি তো চাইব সিরিজ জিততে। যদিও ভারতের মাটিতে ভারতের সঙ্গে খুব কম দেশই ভালো করে। যেহেতু ছোট পরিসরের খেলা, এখানে অনেক কিছুই করা সম্ভব। টেস্টে খুবই কঠিন। গত চার-পাঁচ বছরে ভারতে খেলতে এসে কোনো দলকে জিতে যেতে দেখিনি। স্বাভাবিকভাবেই টেস্ট সিরিজ হবে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে টি২০ ছোট সংস্করণের খেলা, একটা দিন যদি আমাদের সেরা যায় এবং ওরা ওদের সেরাটা না খেলতে পারে, তাহলে সুযোগ তো থাকবেই।
সমকাল :রুবেল, সাব্বিররা টি২০ দলে নেই। এটা কি রোটেশন পদ্ধতিতে খেলানোর সিদ্ধান্ত। না, অন্য কিছু?
সাকিব :কোন পলিসিতে দল গড়া হচ্ছে, আমার জন্য এটা বলা কঠিন। আমি বলব, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর্যায়ে আছে। এর পর থেকে যখন দল তৈরি হবে তখন বিশ্বকাপকে ফোকাস করেই হবে। তখন এগুলো নিয়ে বিস্তারিত বলা যাবে। এই সিরিজ পর্যন্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যেই থাকবে এবং অনেক কিছু পরিবর্তন হতে পারে।
সমকাল :লেগ স্পিনার নিয়ে বিসিবিকে খুব ফোকাসড দেখা যাচ্ছে। জাতীয় লিগ, বিপিএল সব জায়গায় লেগ স্পিনার খেলানো বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে? সর্বত্র লেগ স্পিনার ইস্যুতে ফোকাসটা বেশি হয়ে যাচ্ছে কী?
সাকিব :আমি মনে করি, লেগ স্পিনাররা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলবে, অনেক ওভার বোলিং করবে, ধারাবাহিক হবে এবং আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। টি২০ সংস্করণ বা বিপিএল হলো আন্তর্জাতিক মানের প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্রিকেট। বিপিএলে খেলোয়াড় তৈরি করার জায়গা না। বিপিএলে বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটাররা থাকেন। তাদের সঙ্গে একই ড্রেসিংরুম শেয়ার করে অনেক কিছু অর্জন করবেন খেলোয়াড়রা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কী ধরনের পরিস্থিতির মুখে পড়তে হতে পারে, সেগুলো মোকাবেলা করবে বিপিএলে। বিপিএল কখনোই খেলোয়াড় তৈরির জায়গা হতে পারে না। এত বছর আমরা জাতীয় লিগে লেগ স্পিনার খেলাতে পারলাম না। হঠাৎ করে বিপিএলের সাতটা দলে লেগ স্পিনার খেলানোর পরিকল্পনা করা হলো। এই সিদ্ধান্তগুলো একটু হলেও বিস্ময়কর। এর পরও বলব, বোর্ড যেটা ভালো মনে করবে, সে সিদ্ধান্ত নেবে।
সমকাল :বিসিবির সঙ্গে বসতে চেয়েছিলেন। বসা হয়েছে কী?
সাকিব :বসা হয়নি। আসলে 'ডিসিশনমেকার'রা যদি কখনও মনে না করেন আমাদের সঙ্গে বসা বা পরামর্শ করা প্রয়োজন, সেখানে তো যাওয়ার সুযোগ খুব একটা থাকে না। আমি মনে করি, খেলোয়াড়দের সঙ্গে বা খেলোয়াড়দের একটা প্রতিনিধি দলের সঙ্গে নিয়মিত আলাপ করা হলে তা দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে খুব ভালো ভূমিকা পালন করবে। একটা জিনিস ভালো লাগছে, এখন সবাই অন্তত খেলার উন্নয়নের জন্য ফোকাস করছে। যেমন ফিটনেস নিয়ে চিন্তা করছে। এই জিনিসগুলো আরও আগে থেকে বলে দিলে অবশ্যই আরও ভালো হতো। যেটা পাপন ভাই বলেছেন, পরবর্তী সময়ে আরও আগে থেকে বলে দেওয়া হবে এবং কঠিন হবে। একইভাবে সুযোগ-সুবিধাগুলো তৈরি করে দেওয়াও কর্মকর্তাদের দায়িত্ব।
সমকাল :দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নের জায়গাগুলো কোথায়?
সাকিব :আমার কাছে মনে হয়, কাঠামোগত উন্নয়নও অনেক বেশি জরুরি। ত্রিদেশীয় সিরিজে সম্ভবত তিনবার বিদ্যুৎ চলে গেছে। এই জায়গাগুলোতে উন্নয়ন দরকার। ঢাকার বাইরেও যে ক্রিকেট আছে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। শুধু ঢাকা বা চিটাগাং বাংলাদেশের ক্রিকেট না। খুলনা, সিলেট বা অন্যান্য ভেন্যুতে যেসব বিদেশি দলকে নেওয়ার সুযোগ আছে, সেই সিরিজগুলো ওই ভেন্যুতে হতে পারে। এতে ওই জায়গার অবকাঠামোর উন্নতি হবে। শুধু জাতীয় দলকে নিয়ে ফোকাস করা আমার মনে হয় সংগঠকদের মূল কাজ না। খুলনা, রাজশাহী, চিটাগাং, সিলেটে যে স্টেডিয়ামগুলো আছে, সেখানে একটা প্রপার জিম, রানিং ট্র্যাক এবং মানসম্পন্ন ইনডোর সুবিধা গড়ে তোলা। মিরপুরে জাতীয় দলের ইনডোর সুবিধা ভালো নয়। গ্রীষ্মকালে ওখানে ১৫ মিনিটের বেশি ব্যাটিং করা যায় না, এত গরম। ১০ বছর ধরে বলার পরও মিরপুরের ইনডোরে এসি লাগেনি। আমরা যখন অন্যান্য দেশের ইনডোরগুলো দেখি... ফকফকা লাইটের আলো, এসি লাগানো। এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক।
সমকাল :নির্বাচকরা বলছেন, ভবিষ্যতে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে না খেললে বিপিএল খেলতে দেওয়া হবে না। ভারতেও এই নিয়ম আছে। আপনি কি এই নিয়মের সঙ্গে একমত?
সাকিব :এটা নির্ভর করে আলাদা আলাদা খেলোয়াড়ের ওপর। আমি বিদেশে টুর্নামেন্টগুলো খেলি। দেশের সেভাবে খেলতে পারি না। এজন্য আমাকে জাতীয় দলে খেলতে দেবে না, তা তো নয়। আমি মনে করি, এই লিগগুলোকে এমন আকর্ষণীয় করে তোলা উচিত যাতে ক্রিকেটাররা খেলতে বাধ্য হয়। অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররা কেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলে? কারণ ওদের প্রথম শ্রেণির লিগ অনেক বেশি আকর্ষণীয়। আমাদের দেশে ৩৫-৪০টি টিভি চ্যানেল আছে। লিগের খেলাগুলো যদি টিভিতে ফ্রি দেখানোর উদ্যোগ নেওয়া হয় তাহলে দেখবেন অন্যরকম হবে।
সমকাল :প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের ম্যাচ ফি ৩০-৪০ হাজার টাকা। এটা কি যথেষ্ট। একজন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারের জন্য হতাশাজনক কি-না?
সাকিব :অবশ্যই হতাশাজনক। খুবই হতাশাজনক। বাংলাদেশের বর্তমান জীবনযাত্রায় একজন খেলোয়াড়কে চলতে হলে এই টাকা খুবই নগণ্য। প্রতি বছর জিনিসের দাম বাড়ছে। সরকারি চাকরিজীবীদের ইনক্রিমেন্ট হয়। যে যেখানে চাকরি করে প্রতিবছর ইনক্রিমেন্ট হয়। আমরা এই জায়গায় দেখি, সব সময় একই থাকি। আরও কমানো হয়। বিপিএল এবং ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ এর বড় উদাহরণ। একটা জিনিস আমি খুব ভালোভাবে ফিল করি, এখানে দেশি ক্রিকেটারদের দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়। যেটা খুবই খারাপ। আমার কথা হচ্ছে, সবার জন্যই সমান সুযোগ থাকা উচিত। যে খেলোয়াড় যেটার প্র্যাপ্য মনে করে, তাকে সেটা অর্জনের জন্য ছেড়ে দেওয়া হোক। এরপর কোনো দল যদি তাকে না নেয় সেটা সে খেলোয়াড় বুঝে নেবে। এভাবে আটকে রাখাটা আমার কাছে মনে হয় না কখনোই ভালো।
সমকাল :জাতীয় দলের ড্রেসিংরুম কি ঠিক হয়েছে?
সাকিব :সম্প্রতি আফগানিস্তান ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে যে সিরিজ গেল, তখন আমার ধারণা, ড্রেসিংরুমে সবাই স্বচ্ছন্দে ছিল। এটা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারব। নতুন কোচিং স্টাফ এসেছে। তারা খুবই হেল্পফুল। সবাই ওপেন মাইন্ডে কথা বলে। যার মনে যে কথাটা আছে সরাসরি বলে। আমার কাছে মনে হয়, খুবই ভালো একটা ড্রেসিংরুমের আবহ ছিল। এটা আমার ব্যক্তিগত ধারণা। এটা একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম হবে, খুব স্বাভাবিক। আমার কাছে মনে হয়, ড্রেসিংরুমে যে ভালো একটা আবহ তার জন্য অবশ্যই কোচের একটা বড় ভূমিকা আছে।
সমকাল :দেশের অন্য খেলাগুলো ফলো করেন? সম্প্রতি ফুটবল দল খুব ভালো খেলছে, দেখেছেন?
সাকিব :আমাদের শুটাররা সব সময় ভালো করে। যে কোনো আন্তর্জাতিক গেমসে তারা পদক জেতে। আমার ধারণা, শুটাররাই বড় কিছু অর্জন করেছে এখন পর্যন্ত। সম্প্রতি আরচারিতে রোমান সানা পদক জিতেছে। জুনিয়র পর্যায়ে আমাদের মেয়ে ফুটবলাররা অনেক ভালো করছে। ছেলেদের ফুটবলে নতুন করে ভালো করায় মানুষ অন্তত সামর্থ্যটা বুঝতে পারছে। যে যে খেলায় ভালো করার সুযোগ আছে সেগুলোকে ফোকাস করলে ভালো করব। যেমন শুটিং, আরচারি। আমার ধারণা, ব্যাডমিন্টনেও অনেক ভালো করতে পারবে।
সমকাল :ক্রিকেটকে পেছনে ফেলে ফুটবল আবার জনপ্রিয়তায় ফেরার সুযোগ তৈরি হচ্ছে কি-না?
সাকিব :আমি এখনও মনে করি না, দেশে ক্রিকেট সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। আমরা অনেক বেশি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলি, মাঠে দর্শক আসে, টিভিতে খেলা দেখায়, সারাক্ষণ ক্রিকেট নিয়ে কথা হয়- এ কারণে জনপ্রিয় মনে হয়। দেখুন, সম্প্রতি বাংলাদেশ মাত্র দুটি ফুটবল ম্যাচ খেলেছে, তাতেই কিন্তু মানুষের মুখে মুখে ফুটবলের আলোচনা। তবে একটা জিনিস আমার কাছে খারাপ লাগে- একটার সঙ্গে আরেকটার তুলনা করা। এটা উদার মনের পরিচয় দেয় না। কারণ দিন শেষে আমরাই বাংলাদেশ। এখানে কাউকে ছোট করে কাউকে বড় করার দরকার নেই। সেটা উচিতও নয়। আমরা মনে হয়, যার যার জায়গা থেকে সবার দায়িত্ব আছে- দেশকে এগিয়ে নেওয়ার। সেটা ফুটবল বা ক্রিকেট, রাজনীতিবিদ, আমলা, বিজ্ঞানী যেখানেই হোক। ফুটবল তো একটা গ্লোবাল ইভেন্ট। অলিম্পিকের পরে সবচেয়ে বড় আসর হয় ফুটবলে। ওটার সঙ্গে ক্রিকেটের তুলনাই করা উচিত নয়। ক্রিকেট খেলে ১২-১৪টি দেশ। তার ভেতরে ছয়-সাতটি দেশ দাপট দেখায়। বাকিরা অত শক্তিশালী নয়। হয়তো একসময় গ্লোবাল স্পোর্টস হবে, যদি টি১০ বা টি২০ অলিম্পিকের খেলা হয়। তবে আমি মনে করি, একটি খেলার সঙ্গে আরেকটি খেলার তুলনায় যাওয়ার উচিত নয়।
সমকাল :আইকনরা সোশ্যাল ওয়ার্ক করে। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে স্কুলে স্কুলে যায়, ছেলেমেয়েদের উজ্জীবিত করে। এ ব্যাপারে আপনার পরিকল্পনা কী?
সাকিব :কিছু পরিকল্পনা করে রেখেছি। এজন্য সময় দরকার। আসলে বছরে ছয় থেকে আট মাস থাকি দেশের বাইরে। বাকি যে চার-পাঁচ মাস দেশে থাকি তার ভেতরে তিন মাস থাকে খেলা। এরপর সোশ্যাল ওয়ার্ক করা কঠিন। আর এগুলো নিজে থেকে করতে হয়। কারও ওপর দায়িত্ব দিয়ে করা যায় না। সেটা ভালো হবে না। যখন খেলা কমিয়ে দেবো, তখনই এগুলোয় ফোকাস করা যাবে।
- বিষয় :
- খেলা
- ক্রিকেট
- বাংলাদেশ
- সাকিব
- সাক্ষাৎকার