বিসিবির উপেক্ষায় সরে যাচ্ছে ক্লাব

প্রিমিয়ার ডিভিশন মহিলা ক্রিকেটের দলবদল। ছবি: সংগৃহিত
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ১৭ মে ২০২৩ | ০৬:৪৯
নারী ক্রিকেটে অস্থিরতা কমছেই না। জাতীয় দলের নানা ইস্যুতে জেরবার ‘বিসিবি ওম্যান্স উইং’ নতুন সমস্যায় ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের দলবদল নিয়ে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের দলবদলে অংশগ্রহণ করছে না দুটি ক্লাব– অ্যাজাক্স স্পোর্টিং ও শেখ রাসেল ।
ক্লাব কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বিসিবির উপেক্ষার শিকার তাঁরা। কাউন্সিলরশিপ না থাকা, ক্লাবকে মূল্যায়ন না করা এবং লিগে অনিয়মের অভিযোগ এনে দলবদল থেকে সরে দাঁড়িয়েছে শেখ রাসেল। এ অভিযোগের পাশাপাশি আর্থিক কারণে দলবদল করছে না অ্যাজাক্স ক্লাব। যদিও এ ক্লাব দুটির লিগে অংশগ্রহণ না করার কারণ জানা নেই বিসিবি নারী বিভাগের সমন্বয়ক তৌহিদ মাহমুদের। বরং তিনি আশাবাদী আজ শেষ দিন দলবদল করবে অ্যাজাক্স ও শেখ রাসেল।
বিসিবি থেকে ১১ মে চিঠি দিয়ে ১১টি দলকে জানানো হয়, ১৫ থেকে ১৭ মে তিন দিনব্যাপী দলবদল হবে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে বলা হয়। এর জবাবে সাতটি ক্লাব একাট্টা হয়ে দলবদল পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে ১৩ মে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী ও নারী বিভাগের চেয়ারম্যান শফিউল আলম নাদেল বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে বল জানান কাজল।
বিসিবির দিক থেকে এ ব্যাপারে কোনো সাড়া না পাওয়ায় অ্যাজাক্স দলবদল না করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই ক্লাব কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা মূলত হকিভিক্তিক ক্লাব। নারী ক্রিকেটে এসেছিলাম খেলাটির উন্নয়নের সঙ্গে থাকতে। কিন্তু বিসিবি আমাদের সুবিধা-অসুবিধা দেখে না। তারা যেটা মনে করে, তাই করে। তাই আমরা বলে দিয়েছি, এবার লিগে অংশগ্রহণ করব না। সাতটি ক্লাব এক হয়ে চিঠি দিয়েছিলাম দলবদল পেছাতে। অথচ তারা চিঠির জবাব দেওয়ারও প্রয়োজন বোধ করেনি।’
শেখ রাসেলের টিম ম্যানেজার জাকির আহমেদের অনুযোগ অনেক। তিনি বলেন, ‘আমরা ৭০ থেকে ৭৫ লাখ টাকা খরচ করে লিগে খেলি। অথচ বিসিবির কাছে আমাদের কোনো গুরুত্ব নেই। ছেলেদের ক্রিকেটে তৃতীয় বিভাগ থেকে শুরু করে প্রিমিয়ার লিগ পর্যন্ত কাউন্সিলর রয়েছে। বিসিবি তাদের অনুদানও দেয়। আন্তর্জাতিক খেলা থাকলে টিকিট দেয়। নারী ক্রিকেটে এসবের কিছুই নেই। ১০টি টিকিট দিলেও তো ক্লাব কর্মকর্তারা খুশি হতেন। আমরা বড় বাজেটের দল বানিয়ে মাঠে বৈষম্যের শিকার হই। গত বছর ভেজা মাঠে খেলিয়ে পয়েন্ট ভাগাভাগি করার ব্যবস্থা করেন সিসিডিএমের সদস্য সচিব আলি হোসেন। আমরা লিখিত দিয়েও কোনো পতিকার পাইনি। এ রকম বৈষম্য থাকলে লিগে খেলার কোনো মানে হয় না। আমরা তাই সরে দাঁড়িয়েছি।’
অ্যাজাক্স ও শেখ রাসেল দলবদল থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেওয়ায় এবারের নারী প্রিমিয়ার লিগ হবে ৯ দলের মধ্যে। এতে করে ৩০ ক্রিকেটারের লিগ খেলা হবে না। এ মৌসুমে ৩০টি পরিবার আয় বঞ্চিত হলো। রুটিরুজির পাশাপাশি তাদের ক্রিকেট ক্যারিয়ারও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
যদিও বিসিবি কর্মকর্তা তৌহিদ মাহমুদ ১১টি দল নিয়ে লিগ আয়োজনের ব্যাপারে আশাবাদী, ‘ক্লাব থেকে আমাদের মৌখিক বা লিখিতভাবে জানায়নি দলবদলে অংশগ্রহণ করবে না। আমার সঙ্গে অ্যাজাক্স ক্লাবের সভাপতি কাজল ভাইয়ের কথা হয়েছে, আশা করি কাল (আজ) শেষ দিন তারা দলবদল করবে।’ বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের মতো নারী ক্রিকেটকে দেখা হলে অন্য ক্লাবগুলোরও বিদায় নেওয়ার শঙ্কা বাড়বে।