ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

চেন্নাইয়ের ‘রজনীকান্ত’ ধোনি

চেন্নাইয়ের ‘রজনীকান্ত’ ধোনি

চেন্নাইয়ের অধিনায়ক এমএস ধোনি। ছবি: এএফপি

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ২৫ মে ২০২৩ | ০৬:১৫

ছোট্ট শহর রাঁচি থেকে বেড়ে উঠে ভারতের হয়ে ২০১১ বিশ্বকাপ জয়। ধোনির আত্মজীবনী নিয়ে নির্মিত বলিউডের সিনেমা এম. এস. ধোনি : দ্য আনটোল্ড স্টোরিতে এ পর্যন্তই শেষ হয়েছে। কিন্তু ধোনির জীবনে তাঁর পরবর্তী অধ্যায়ে জড়িয়ে থাকবে শুধুই চেন্নাই। আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে ১০ বার ফাইনালে ওঠা, দক্ষিণের এই ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে যেন আত্মার বন্ধন তাঁর।

এ কারণেই ৪১ বছর বয়সেও চেন্নাই সমর্থকদের কাছে তিনিই আইপিএলে তাদের ‘রজনীকান্ত’। তামিল সিনেমায় রজনীকান্ত যেমন সব অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলেন, তেমনি ধোনিও যেন আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে একের পর এক সব কঠিন পথ সহজ করে তুলেছেন। এ কারণেই রজনীকান্তের মতো ধোনিকেও চেন্নাইয়ের সমর্থকরা ‘থালাইভা’, ছোট করে ‘থালা’ বলে ডাকে। তামিলে যার অর্থ, ‘নেতা’।

তা চেন্নাইয়ের এই থালা আগের মতো হয়তো ব্যাট হাতে দলকে সেভাবে কিছু দিতে পারছেন না। কিন্তু তাঁর তুখোড় মস্তিষ্ক, তাঁর ইশারায় ভরা চোখের চাহনি– সবকিছুতেই যে জড়িয়ে আছে নীরব ঘাতকের সব অস্ত্র। সেদিন কোয়ালিফারে গুজরাটের বিপক্ষে দলের লঙ্কান পেসার মাথিসা পাথারানা ১৬তম ওভারে বোলিং করার আগে মাঠের বাইরে গিয়েছিলেন।

নিয়ম অনুযায়ী, মাঠের বাইরে থেকে কেউ এসে নির্দিষ্ট সময় পর বোলিং করার অনুমতি পান। পাথারানা মাঠে ফেরার পর ধোনি সেই সময়ক্ষেপণ করেছিলেন আম্পায়ারের সঙ্গে অযথা গল্প করে! এ নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে বটে, কিন্তু একজন তুখোড় নেতা তো এমনই কৌশলী হন। ২০১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রানআউট হওয়ার পর ভারতীয় সমর্থকদের একাংশের কাছে ধোনি এখন কেবলই ‘বুড়ো’ ঘোড়া। কিন্তু চেন্নাই সমর্থকদের কাছে তিনি এখনও তেজি, এখনও সেরা। সেই যে ২০০৮ থেকে চেন্নাই সুপার কিংসের হলুদ জার্সি গায়ে তাঁর, এর পর চ্যাম্পিয়ন হয়েছে চারবার। ফাইনালে ১০ বার।

মাঝে ২০১৫-১৬ জুয়া কেলেঙ্কারিতে আইপিএলে নিষিদ্ধ ছিল চেন্নাই। ওই দুই মৌসুম পুনের হয়ে খেললেও সুবিধা করতে পারেননি ধোনি। তার পর চেন্নাইয়ে ফিরে আবার সেই ‘থালা’। ২০১৮, ২০২১-এ চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু বয়স তো বাড়ছে, আগামী মৌসুমে কি দেখা যাবে চেন্নাইয়ের এই থালা ধোনিকে– প্রশ্ন রেখেছিলেন হার্শা ভোগলে। উত্তর ধোনি, ‘জানি না পরের বছর ফিরব কিনা? এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ৮ থেকে ৯ মাস সময় রয়েছে। তাহলে এখন থেকে কেন চিন্তা বাড়ব? তবে আমি সব সময় চেন্নাইয়েই থাকব। সেটা খেলোয়াড় হিসেবেও হতে পারে, বা অন্য কোনো ভূমিকায়ও হতে পারে।’

একটি দলকে এত বছর ধরে কীভাবে এতটা সংহত রাখেন ধোনি? ভীষণ জানার ইচ্ছা ছিল ভোগলের। ‘কখনও সতীর্থরা আমার ওপর রেগে যেতেই পারে। রাগিয়ে দেওয়ার মতো কাজও আমি করতে পারি। মাঝেমধ্যেই ফিল্ডারদের ২-৩ ফুট এদিক-ওদিক করে দিই। ওদের সেটা পছন্দ নাও হতে পারে। একটাই কথা ওদের বলি, সব সময় আমার দিকে চোখ রাখ। যদি কোনো ক্যাচ ফেলে দাও তখন আমার কোনো প্রতিক্রিয়া পাবে না। কিন্তু বার্তা পাবে, আমার দিকে সব সময় নজরাটা রাখ।’ ঠিক এ কারণেই ধোনি চেন্নাইয়ের ‘থালা’।

আরও পড়ুন

×