সালাউদ্দিনকে পাল্টা তোপ প্রতিমন্ত্রীর

ফাইল ছবি
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৩ | ০৪:৫৩
নানা ইস্যুতে বাফুফে কর্তারা বারবার কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে। রোববার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে সেমিফাইনালে ওঠা ফুটবল দলকে সংবর্ধনা দেওয়ার অনুষ্ঠানে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের সংস্কারকাজের সময়কাল নিয়ে ক্ষোভ ঝেড়েছেন। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে ইঙ্গিত করে তিনি বলেছেন, ‘একটা স্টেডিয়াম সংস্কার করতে তিন-চার বছর লাগার কথা কোথাও শুনিনি। খেলোয়াড়রা কোথায় খেলবে, জঙ্গলে?’
ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতির এমন মন্তব্যে নাখোশ যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। নানা নেতিবাচক মন্তব্য করায় কাজী সালাউদ্দিনের জ্ঞান-বুদ্ধি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি, ‘মাঠ তো প্রস্তুতই আছে। অন্য আনুষঙ্গিক কাজ বাকি আছে। ‘তিন থেকে চার বছর লাগল কোথায়? আমাদের লাগল দুই বছর। কাজ শুরু হয়েছে দুই বছর হলো। তাঁর জ্ঞান-বুদ্ধি আছে নাকি। আমাদের আর্থিক সমস্যা আছে। আমরা টাকা-পয়সা ছাড় পাই না। না পাইলে টাকা কে দেবে। ১৫০ কোটি টাকার কাজ ইচ্ছা করলেই তো এত অল্প সময়ে করা যায় না। তার পর অর্ধেক কাজ করার পর আবার নতুন করে ডিপিডি সংশোধন করতে হইছে। নতুন করে একনেকে পাঠানো হয়েছে। একনেক থেকে ছাড় করবে, তার পরই কাজ। আর জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে, যার কারণে নতুন করে আবার সব সংশোধন করতে হইছে।’ সোমবার সমকালের কাছে নিজের ক্ষোভ এভাবেই প্রকাশ করেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী।
ঢাকার বাইরে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার মতো ভেন্যু আছে সিলেট, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, নীলফামারী। এগুলোতে কেন খেলতে চায় না বাফুফে, তা নিয়েই প্রশ্ন জাহিদ আহসান রাসেলের, ‘সারাদেশে এত স্টেডিয়াম বানাইছি, এগুলো কার জন্য বানাইছি? সারাদিন ঢাকা শহর থাকার জন্য এটা বলেছেন সালাউদ্দিন সাহেব। কুমিল্লা খেলতে গেলেও তো তাঁর হেলিকপ্টার লাগে। সভাপতি হিসেবে সব জায়গায় যেতে হবে, সেটা তো কথা নয়। তিনি যেখানে প্লেনে যাওয়া যায়, সেখানে যাক। পাপন ভাই (বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন) সিলেটে খেলাচ্ছেন, চট্টগ্রাম খেলাচ্ছেন; এ রকম নিতে পারে না। চট্টগ্রাম, সিলেটে, রাজশাহী ও নীলফামারী– এগুলো সবই আন্তর্জাতিক মানের মাঠ। এগুলোতে খেলে না কেন, খালি ঢাকা শহরের চিন্তা করেন কেন?’
কিন্তু বাফুফে সভাপতি মনে করেন, ঢাকার বাইরে খেলা হলে কেউ দেখে না। এটা মানতে নারাজ যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী, ‘ঢাকার বাইরে খেললে বরং দেখে মানুষ। ঢাকার ভেতর খেলা থাকলে, খালি সাংবাদিক আর কয়েকজন ভিআইপি দেখেন। দর্শকরা সাধারণত দেখেন না। ঢাকার মধ্যে ম্যাচের সময় দেখা যায়, গ্যালারি অনেকটা ফাঁকা থাকে। আর ঢাকার বাইরে মাঠে হাজার হাজার দর্শক থাকে।’
অক্টোবরে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের খেলা। এই মাঠ ততদিনে খেলার উপযোগী হবে কিনা– এ প্রশ্নের উত্তরে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী তুলে আনলেন সিলেট স্টেডিয়ামে আগের সংস্কারের কথাটি, ‘বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচের কথা বলে দুই থেকে তিন বছর আগে সিলেট স্টেডিয়ামের জন্য আমাদের কাছ থেকে ৭ কোটি টাকা দিয়ে চেয়ার লাগাল। এই চেয়ারগুলো তো আজকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কেন এত টাকা খরচ করে চেয়ারগুলো লাগাল? সরকারের এত টাকা খরচ করে এসব স্টেডিয়ামে কেন তারা খেলায় না? আমাদের টাকাগুলো কেন নষ্ট করতেছে তারা? তিনি ঢাকার চিন্তা করেন কেন? তিনি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলবেন বলেই তো আমরা ৭ কোটি টাকা দিয়ে সিলেটে চেয়ার লাগিয়ে দিলাম।’
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে ইঙ্গিত করে সালাউদ্দিন বলেছেন, তাহলে কি জঙ্গলে খেলব? এমন মন্তব্যের পাল্টা তোপ দেন রাসেল, ‘জঙ্গলে খেলতে চাইলে, খেলতে পারবে। মনে চাইলে খেলুক। তাদের জন্য কমলাপুরে একটা মাঠ রাখা হয়েছে, আউটার স্টেডিয়ামে মাঠ আছে। ৬৪টি জেলাতে মাঠ আছে। যেখানে তারা খেলতে চায়, আমাদের বলুক, আমরা সব জায়গায় খেলার জন্য প্রস্তুত করে দেব। আশপাশের কোনো জেলায় যদি খেলতে চায়, সেখানেও আমাদের বলুক, আমরা প্রস্তুত করে দেব। মুন্সীগঞ্জ স্টেডিয়ামও আন্তর্জাতিক মানসম্মত। এর পর বসুন্ধরা কিংসও আছে। তাঁর হলো বাড়ির কাছে খেলতে হবে। বাড়ির বাইরে যেতে পারবে না।’