ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন মুস্তাফিজ

ছবি- সংগৃহীত
ক্রীড়া প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম থেকে
প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ০৯:৫১
মাঠ থেকে হাসপাতালে নেওয়ার সময় মুচকি হেসে দলের সতীর্থদের বললেন, ‘টেনশন কইরেন না, আমি ঠিক আছি।’ মুস্তাফিজুর রহমানের বলা এই কথায় তাৎক্ষণিক একটা স্বস্তি মিললেও শঙ্কা কাটছিল না। কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন নির্ধারিত অনুশীলন শেষ করিয়েছিলেন বটে, তবে আহত সতীর্থের খবর জানার জন্য যেন উন্মুখ ছিলেন সবাই। এর পর হাসপাতাল থেকে আপডেট দেওয়ায় দল দুশ্চিন্তামুক্ত হয়। কিন্তু বাইরে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছিল সময়ের সঙ্গে।
সাংবাদিক, ক্রিকেট-সংশ্লিষ্ট সবার মধ্যেই দুশ্চিন্তার ছায়া পড়েছিল কিছু সময়ের জন্য। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের নিরাপত্তা প্রটোকলে থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তাকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে দেখা ছিল আবেগাপ্লুত হওয়ার মতোই। মুস্তাফিজকে নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ ছিল লিটন কুমার দাসের খেলা একটি বল মাথায় লেগে রক্তাক্ত হয়েছিলেন। খুলির ওপরের চামড়া ছিঁড়ে ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হতে দেখে পিলে চমকে গিয়েছিল মাঠে উপস্থিত অনেকেরই। খারাপ কিছুর শঙ্কা তখন অনেকের মনে। যদিও দুশ্চিন্তার কালো মেঘ কেটে গেছে সিটি স্ক্যানের পর মাথার ভেতরে আঘাতজনিত চিহ্ন না পাওয়ায়। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স তথা জাতীয় দলের বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজকে বিপদমুক্ত ঘোষণা করেছেন চিকিৎসকরা।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের নেটসেশনে ব্যস্ত ছিল কুমিল্লা। ফিজ বল করে উল্টো দিকে রানআপ স্পটে ফিরছিলেন। সে মুহূর্তে কিছু বুঝে ওঠার আগে একটি বল তাঁর বাঁ-কানের ওপরের দিকে আঘাত করে। যদিও দূরত্বের কারণে বলের গতির তীব্রতা কম ছিল। কিন্তু সিমের আঘাতে মাথার ওপরের অংশের চামড়া কেটে যাওয়ায় রক্তপাত হয়। রক্ত বন্ধ করতে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে নেওয়া হয় বাঁহাতি পেসারকে। একটুও না ঘাবড়ে ফিজ গেছেন হাসপাতালে। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের পর চিকিৎসকরা বিপদমুক্ত মনে করলেও মাথার ভেতরটা পরীক্ষা করে দেখার প্রয়োজন ছিল। জরুরি ভিত্তিতে সে আনুষ্ঠানিকতা সারেন চিকিৎসকরা।
রিপোর্টের সব ভালো জানার পর কুমিল্লার ফিজিও জাহিদুল ইসলাম সজল লিখিত বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ‘একটি বল সরাসরি মুস্তাফিজের মাথার পেরিটিয়াল অংশে আঘাত করলে রক্ষপাত বন্ধ করতে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যান্ডেজ করা হয়। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার পর সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট দেখে আমরা সন্তুষ্ট। কারণ চোট বাইরে, ভেতরে কোনো সমস্যা নেই।’
ফিজ বিপদমুক্ত হলেও ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে থাকবেন হাসপাতালে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের চট্টগ্রামের বাকি দুই ম্যাচ খেলা হবে না তাঁর। ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় খেললেও খেলতে পারেন তিনি।
মুস্তাফিজের চোট গুরুতর না হওয়ায় জাতীয় দলের সিরিজ মিস করার কারণ দেখেন না বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘চোট মাথার বাইরে। চার থেকে পাঁচ দিন গেলে সেলাই শুকিয়ে যাবে। মাথার সেলাই নিয়ে খেললেও সমস্যা হওয়ার কথা না। জাতীয় দলের সিরিজ শুরু হতে এখনও অনেক দেরি। ততদিনে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবে।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি২০ সিরিজ শুরু হবে ৪ মার্চ। এখনও ১৫ দিন বাকি। সুতরাং হোম সিরিজই শুধু নয়, তিনি যে কুমিল্লার প্লে-অফ ম্যাচ খেলবেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।