সেমিতে পিএসজি
দায় রেফারির নাকি বার্সার ভুল

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নেওয়ায় বার্সা ফুটবলাররা হতাশ। ছবি: এএফপি
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | ১৪:১২
‘ফুটবল যুদ্ধ হবে।’ পিএসজির বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগের আগে ঘোষণা দিয়েছিলেন বার্সেলোনা কোচ জাভি হার্নান্দেজ। প্রথম লেগে পিছিয়ে থাকা পিএসজির কোচ এনরিকে বলেছিলেন, ‘হাই প্রেসিং আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলব। পিছু হটার সুযোগ নেই।’
পিছু হটেনি পিএসজি। বরং বার্সেলোনার মাঠে শুরু থেকে কর্তৃত্ব করে খেলে ৪-১ গোলের জয় তুলে নিয়েছে। দুই লেগ মিলিয়ে ৬-৪ গোলে জিতেছে। যদিও বড় ওই হারের দায় রেফারির কাঁধে চাপিয়েছেন বার্সা কোচ জাভি। বার্সার ফুটবলার-কর্মকর্তা-ভক্ত-সমর্থকরাও ‘সেমিফাইনাল ছিনতাই’ ভিন্ন কিছু ভাবছেন না।
ম্যাচের ২৯ মিনিটে রেফারি বার্সার ডিফেন্ডার রোনাল্ড আরাহোকে লাল কার্ড দেন। দ্বিতীয়ার্ধে বার্সা পেনাল্টির দাবি করলেও রেফারি নাকচ করে দেন। ক্ষোভ দেখানোয় লাল কার্ড দেন কোচ জাভিকে। ৬০ মিনিটে পিএসজির পক্ষে পেনাল্টির বাঁশিও বাজান। রেফারিকে দোষ দেওয়ার তাই যথেষ্ট কারণ আছে বৈকি।
তবে দোষ কী সব রেফারির? নাকি একাদশ নির্বাচন, খেলার কৌশল ও মেজাজ হারিয়ে লাল কার্ড পাওয়া, পেনাল্টি উপহার দেওয়ার মতো ভুল করেছে বার্সা? সমান্তরালভাবে এটাও আলোচনার দাবি রাখে। বার্সা শুরুর একাদশে এই ম্যাচেও তরুণ ডিফেন্ডার পাও কুবারসির ওপর ভরসা রেখেছিল। তিনি রক্ষণে বেশ অটুট। কিন্তু পায়ে বল রাখা, খেলা সাজানো, বল সরবরাহ করার মতো পরিণত এখনও নন। জাভি খুব সহজেই মার্কো অ্যালোনসোকে লেফট ব্যাকে খেলিয়ে জুলেন কুন্দেকে সেন্ট্রাল ডিফেন্সে খেলাতে পারতেন।
আরাহোর লাল কার্ড নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেতে পারে। কিন্তু তার ‘ট্যাকল জ্ঞান’ নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ কম। পিএসজির ফরোয়ার্ড ব্রাডলি বারকোলা বার্সা গোলরক্ষকের সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান ছিলেন। তাকে পিছন থেকে টেনে ফেলে দিতে চাওয়ার ব্যাখ্যা দেওয়া মুশকিল। সুযোগ নিয়েছেন বারকোলাও। পেনাল্টি আদায়ের আশায় বক্সে গিয়ে পড়লেও অবশ্য লাভ হয়নি। গত জানুয়ারিতে সুপার কোপার ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে একই ভুল করেছিলেন আরাহো। অসময়ে, অপ্রয়োজনে ট্যাকল করেছিলেন ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে। খেসারত দিয়েছিল তার দল।
বার্সা দ্বিতীয় লেগে শুরু থেকে রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলার চেষ্টা করেছে। হাই প্রেসিং দলের বিপক্ষে ঘরের মাঠে পুরো সময় রক্ষণাত্মক কৌশলের খেসারতও দিতে হয়েছে কাতালানদের। অথচ পিএসজির চেয়ে কাগজে-কলমে বার্সার মাঝমাঠ শক্ত। বার্সার গুন্ডোগান-ডি জং-পেদ্রি জুটির চেয়ে পায়ে বল ধরে রাখার প্রশ্নে পিএসজির ফ্যাবিয়ান রুইজ-ভিতিনহা-জাইরি এমেরি ত্রয়ী পিছিয়ে।
পিএসজিকে পেনাল্টি পাইয়ে দেওয়ার দায়ও বার্সার কাঁধেই বর্তাবে। বক্সের মধ্যেই ছিলেন উসমান ডেম্বেলে। কিন্তু কর্ণারের সাইড বরাবর। সেখান থেকে গোলে শট নেওয়ার কিংবা গোলে সহায়তা দেওয়ার মতো সেরা অবস্থানে ছিলেন না ডেম্বেলে। ধারে বার্সায় যোগ দিয়ে ভালো খেলা জোয়াও কেনসেলো ঠিক পায়ে বল না থাকলেও ডেম্বেলেকে ট্যাকল করে সেঁধে পেনাল্টি হজম করেছেন। তাদের এমন সব ভুলের পসরার সুযোগ নিয়ে দুর্দান্ত কামব্যাকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের টিকিট হাতে পেয়েছেন এমবাপ্পে-ডেম্বেলেরা। টিকিটটা বার্সাই কী তাদের হাতে তুলে দেয়নি?