চার কন্যার কাতার ভ্রমণের গল্প

চার নারী অ্যাথলেটস প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কাতার সফর করেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইঙ্গ
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | ১৬:১৯
‘প্রথমে যখন জানলাম, আমরা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্যারের সঙ্গে কাতার যাব, তখন খুব আনন্দ হয়েছিল। পরিবারের সবাই খুশি ছিল। এটা আমাদের জন্য দারুণ একটা অভিজ্ঞতা।’ ক্রিকেটার সুমাইয়া আক্তার সাবলীলভাবে বললেন কথাগুলো। ফুটবলার শাহেদা আক্তার রিপা আঞ্চলিক ভাষায় গড় গড় করে বলে গেলেন অন্যরকম অভিজ্ঞতার কথা।
লুসাইল স্টেডিয়ামে মেসিদের ড্রেসিংরুম ও ওয়ার্মআপ জোন দেখে বিমোহিত তারা। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ভেন্যুতে প্রবেশ করার রোমাঞ্চের আনন্দস্রোত শাহেদাকে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল পারসিয়ান গালফ সাগরে।
যে মঞ্চে বসে ২০২২ সালের বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যাচ দেখেছিল কাতারের রাজপরিবার, সেখানে যেতে পারা; রাজাসনে বসে ছবি তোলার অনন্য অভিজ্ঞতা আফেদা খন্দকারদের। সাধারণ কাতারিদের যেখানে প্রবেশাধিকার নেই, সেখানে বাংলাদেশের চার নারী খেলোয়াড়কে রাজাসনে বসে ছবি তোলার সুযোগ করে দেওয়া সত্যিই বিরল অভিজ্ঞতা।
‘আর্থনা সামিট-২০২৫’ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-সানির আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন। রাষ্ট্রীয় এ সফরে তিনি দেশের চারজন নারী ক্রীড়াবিদকে সঙ্গে নিয়েছিলেন। ফুটবলার শাহেদা আক্তার রিপা, আফেদা খন্দকার আর ক্রিকেটার শারমিন সুলতানা ও সুমাইয়া আক্তার ব্যতিক্রমী এই সফরে গিয়েছিলেন কাতার ফাউন্ডেশনের আমন্ত্রণে।
বিশেষ এ সফরে নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করতে গতকাল রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। যেখানে শারমিন সুলতানা বলেন, ‘কাতারের রিহ্যাব সেন্টার বিশ্বমানের। আমাদের বলা হলো নেইমাররাও ওখানে ইনজুরি পুনর্বাসন করেন। আমরা বলেছি এখানে রিহ্যাব সেন্টার তৈরি করতে।’
সুমাইয়া আক্তার চেয়েছেন কাতারের মেয়েরাও ক্রিকেট খেলুক, ‘কাতারে ক্রিকেটের চর্চা নেই। একবার শুরু হয়েছিল, কিন্তু বল শক্ত হওয়ায় তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমরা অনুরোধ করেছি ক্রিকেট চালু করতে।’
বাংলাদেশের চার নারী খেলোয়াড়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা তাদের প্রয়োজন। তারা নিজেদের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন কাতার ফাউন্ডেশনের সিইও শেখ হিন্দের কাছে। নারী ক্রীড়াবিদদের আবাসন এবং ইনডোর সুবিধা গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি কাতার ফাউন্ডেশন থেকে দেওয়া হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার উপসচিব আবুল কালাম আজাদ জানান, ‘বন্ধুত্বের স্মারকস্বরূপ কিছু সুযোগ-সুবিধা গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কাতার ফাউন্ডেশন। এটি মাত্র শুরু, ভবিষ্যতে এ উদ্যোগ বড় পরিসরেও হতে পারে।’
স্পোর্টসের বাইরেও খেলোয়াড়দের বেশি মুগ্ধ করেছে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হওয়ায় প্রাপ্ত সম্মানে। ফুটবলার আফেদার মতে, ‘স্যার বলে ছিলেন আমি বক্তব্য দিতে যাচ্ছি, তোমরা আসো। গিয়ে দেখি স্যারের বক্তব্য শুরু হয়ে গেছে, অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে তা শুনছে। অথচ আমাদের বসানো হয়েছে ভিআইপি আসনে। এটা বড় প্রাপ্তি।’
- বিষয় :
- কাতার
- নারী ক্রিকেটার
- ড. ইউনূস