বায়োগ্যাসে বদলে গেছে জীবন

বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করে দিন বদলে গেছে রাঙামাটি শহরের তবলছড়ির ওমদামিয়া পাহাড়ের বাসিন্দা কৃষি উদ্যোক্তা মো. সেলিমের পরিবারের। শুক্রবার তোলা ছবি - সমকাল
সত্রং চাকমা, রাঙামাটি
প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ১১ মার্চ ২০২২ | ২২:০৬
রাঙামাটি শহরের তবলছড়ির ওমদামিয়া পাহাড়ের বাসিন্দা মো. হারুন। পাঁচ থেকে ছয় মাস আগে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আশা থেকে ঋণ নিয়ে বায়োগ্যাস প্লান্ট বসিয়েছেন তিনি। বর্তমানে জ্বালানির মূল্যের ঊর্ধ্বগতি থাকায় রান্নার ক্ষেত্রে প্লান্টটি তার পরিবারের আরও সহায়ক হয়েছে। হারুনের প্লান্ট থেকে প্রতিবেশী দুই পরিবারকেও রান্নার গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। তাকে দেখে এলাকার আরও অন্তত ১০ পরিবার প্লান্ট বসিয়েছেন।
জানা যায়, একই এলাকার বাসিন্দা কৃষি উদ্যোক্তা মো. সেলিমও আশা থেকে ঋণ নিয়ে বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করেন। এতে পরিবারটির প্রতিদিনের রান্নার কাজ চলছে সহজেই। শুধু তাই নয়, বায়োগ্যাস ব্যবহারের জন্য যে গোবর প্রয়োজন হয়, তা ব্যবহারের পর উচ্ছিষ্টাংশ দিয়ে জৈবসার তৈরি করা হয়। নিজেদের চাহিদা মেটানোর পর এসব সার বিক্রি করছেন প্লান্টের মালিকরা।
উপকারভোগী কৃষি বিভাগে কর্মরত মো. হারুন বলেন, আশা থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ এবং নিজের আরও ৩০ হাজার টাকা যোগ করে দিয়ে বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করি। ফলে এখন আর রান্নার জন্য জ্বালানির চিন্তা করতে হচ্ছে না।
এছাড়া গোবরের উচ্ছিষ্টাংশ দিয়ে জৈবসার তৈরি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছি। এতে অন্যরাও অনুপ্রাণিত হচ্ছেন।
আরেক উপকারভোগী মো. সেলিম বলেন, পরিবারের পাঁচজনের প্রতিদিনের রান্না চলছে প্লান্টের গ্যাস দিয়ে। এছাড়া এ থেকে যে সার তৈরি হচ্ছে, তা নার্সারিতে ব্যবহার করছি। উদ্বৃত্ত সার ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি করি।
আশা সূত্রে জানা গেছে, গ্রামীণ নারী-পুরুষদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছে সংস্থাটি। এরই অংশ হিসেবে রাঙামাটিতে আশার অর্থায়নে তিনটি বায়োগ্যাস প্লান্ট এবং তিনটি জৈবসার তৈরির প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া আশা ৯ জেলায় (তিন পার্বত্য জেলা, কক্সবাজার, কুমিল্লা, নরসিংদী, যশোর, মাগুরা ও পাবনা) ২০১৮ সাল থেকে মাশরুম চাষ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ পর্যন্ত ২১০ জনকে মাশরুম চাষের ওপর প্রশিক্ষণ ও নগদ অনুদান দেওয়া হয়েছে। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে কর্মসংস্থানও।
আশার রাঙামাটি জেলার কৃষি কর্মকর্তা খায়রুল বাসার টিপু বলেন, বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপনের জন্য আশা থেকে ঋণ ও ২০ বছরের জন্য সরাসরি কারিগরিসহ সবকিছু সহায়তা দেওয়া হয়। এ পর্যন্ত যারা বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করেছেন, তারা পরিবারের শুধু রান্নাবান্নার ক্ষেত্রে উপকৃত হচ্ছেন না, গোবরের উচ্ছিষ্টাংশ দিয়ে সার তৈরি করে আর্থিক লাভবান হচ্ছেন। এছাড়া আশা থেকে ঋণ ও সহযোগিতা নিয়ে মাশরুম চাষ করে অনেক বেকার যুবক স্বাবলম্বী হয়েছেন।
- বিষয় :
- বায়োগ্যাস
- বায়োগ্যাস প্লান্ট
- জৈবসার
- রাঙামাটি