প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান, গায়ে হলুদের রাতেই প্রাণ দিলো কাকলি

মেয়েকে হারিয়ে কাকলির বাড়িতে চলছে শোকের মাতম
শরীয়তপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২২ | ১০:১১ | আপডেট: ২০ মার্চ ২০২২ | ১০:১১
আজ বাদে কাল বিয়ে করে স্বামীর বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল কাকলির। কিন্তু প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করাই কাল হলো। গায়ে হলুদের রাতেই প্রেমে প্রত্যাখ্যাত যুবকের হামলার শিকার হলো শরীয়তপুর সদর আলিয়া মাদ্রাসার একাদশ শ্রেণির এই ছাত্রী। ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাকলির মৃত্যু হয়েছে।
রোববার ভোর ৩টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাকলির মৃত্যু হয়। এছাড়া গণপিটুনিতে গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে ঘাতক জাহিদুল ইসলাম (১৮)।
নিহত কাকলি আক্তার (১৮) শরীয়তপুর শহরের চর পালং এলাকার বাসিন্দা নুরুজ্জামান মাতবরের মেয়ে। ঘাতক জাহিদুল ইসলাম শরীয়তপুর পৌরসভার কাশাভোগ এলাকার মজিবুর রহমানের ছেলে।
আগামী সোমবার কাকলির বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। পারিবারিকভাবেই তার বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু কাকলিকে বিয়ে করতে না পারায় এবং প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে জাহিদুল তাকে কুপিয়ে আহত করে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এর গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শরীয়তপুর সদর পৌরসভা ৩নং ওয়ার্ডের চর পালং গ্রামের দুবাই প্রবাসী নুরুজ্জামান মাতবরের বাড়িতে কাকলিকে কুপিয়ে আহত করে জাহিদুল।
সদর উপজেলার পালং মডেল থানা সূত্রে জানা গেছে, কাকলি আক্তার শরীয়তপুর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। ওই মাদ্রাসার সাবেক ছাত্র জাহিদুল ইসলাম তাকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতো। এমনকি প্রেমের প্রস্তাব বিয়ে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর কাকলিকে বিয়ে করার জন্য তার পরিবারের কাছেও প্রস্তাব দিয়েছিল সে। কিন্তু কাকলির পরিবার তাতে রাজি হয়নি।
এরপর কাকলিকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেয় তার পরিবার। এতে ক্ষুব্ধ হয় জাহিদুল। বৃহস্পতিবার রাতে কাকলির বাড়িতে ঢুকে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে ২০২২ সালে শরীয়তপুর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে আলিম পাশ করা জাহিদুল।
এসময় কাকলির চিৎকারে এলাকার মানুষ তাকে উদ্ধার করে এবং পালিয়ে যাওয়ার সময় জাহিদুলকে আটক করে। এরপর জাহিদুলকে গণপিটুনি দিয়ে আটকে রাখে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ দুজনকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে ওইদিন রাতেই কাকলি ও জাহিদুলকে ঢাকায় পাঠানো হয়। ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার ভোরে কাকলির মৃত্যু হয়।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) আক্তার হোসেন জানান, রোববার রাত তিনটার দিকে ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাকলির মৃত্যু হয়। আমরা ধানমন্ডি থানার মাধ্যমে ঢাকা মেডিকেল থেতে ময়নাতদন্ত করে মরদেহ শরীয়তপুরে নিয়ে আসছি।
তিনি আরও জানান, শনিবার রাতে মেয়ের ভাই ফারুক হোসেন থানায় হত্যাচেষ্টার একটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় জাহিদুলকে আসামি করা হয়েছে। তবে মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে।