সড়ক দুর্ঘটনা নয়, হত্যা করা হয় জেরিনকে

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রিচি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী মদিনাতুল কিবরিয়া জেরিনের মৃত্যু প্রথমে সড়ক দুর্ঘটনা মনে করা হলেও পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ইতোমধ্যে পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত জাকির হোসেন নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। 

পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাকির জানিয়েছে, প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সিএনজি অটোরিকশা থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে জেরিনকে। হবিগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সুলতান উদ্দিন প্রধানের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে জাকির। সে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ধল গ্রামের দিদার হোসেনের ছেলে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্যাহ। তিনি বলেন, ধল গ্রামের আব্দুল হাই মিয়ার কন্যা মেধাবী ছাত্রী জেরিনকে বেশ কিছুদিন ধরে উত্ত্যক্ত করতো জাকির। বারবার তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিলেও তাতে রাজি হয়নি জেরিন। পরে জেরিন বিষয়টি তার পরিবারের সদস্যদেরও জানায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী জাকির গত রোববার সকালে স্কুলে যাওয়ার সময় তার বাড়ির সামনে একটি সিএনজি অটোরিকশা দাঁড় করিয়ে রাখে। পরে জেরিন বাড়ি থেকে বের হয়েই সিএনজিতে উঠে যায়। পথে জাকির ও তার আরেক সহযোগী হৃদয় নামে এক যুবক একই সিএনজিতে ওঠে। এ সময় দু'জনের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয় জেরিনের। জাকির জেরিনকে অপরহরণ করে নিয়ে যেতে চাইলে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে জেরিনকে সিএনজি থেকে ফেলে দেয় জাকির। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে যায়। আশঙ্ককাজনক অবস্থায় সেখান থেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ভোররাতে তার মৃত্যু হয়।

হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মাসুক আলী বলেন, সোমবার রাতে নিহত জেরিনের বাবা বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় জাকির হোসেন ছাড়াও অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। ইতোমেধ্য গ্রেপ্তার জাকিরকে আদালতে জাবনবন্দি শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তার দেওয়া তথ্য মতে সিএনজিচালক নুর আলম ও জাকিরের সহযোগী হৃদয়কে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।