বিএসএফের বাধায় নিজ দেশে ফিরতে পারেনি ৫ ভারতীয়

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩১ মে ২০২২ | ০৩:৩২ | আপডেট: ৩১ মে ২০২২ | ০৩:৩২
অবৈধ অনুপ্রবেশের অপরাধে আদালত প্রদত্ত সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছর পার হলেও কুড়িগ্রাম কারাগারে আটক থাকা ৫ ভারতীয় যুবক বিএসএফের বাধায় নিজ দেশে ফিরে যেতে পারেনি।
মঙ্গলবার লালমনিরহাট জেলার বুড়িমারী ইমিগ্রেশনের উল্টো দিকে অবস্থিত ভারতের চ্যাংরাবান্ধা ইমিগ্রেশনে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্মরত বিএসএফ তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়।
বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের ভূ-খণ্ডে অবৈধ অনুপ্রবেশের অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটক আছেন ওই ভারতীয় যুবকরা।
আদালত ও কারাগার কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ অনুপ্রবেশের অপরাধে সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কুচবিহার জেলার দিনহাটা থানার সাইদালেরকুটি গ্রামের মৃত দুদু মিয়ার ছেলে আলাম মিয়া, আসাম রাজ্যের ধুবড়ি জেলার কানাইমারা গ্রামের সুরুত আলীর ছেলে নুরুজ্জামান এবং একই এলাকার নুর ইসলামের ছেলে সেলিম মিয়া, আমিরুল ইসলামের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম ও ছানোয়ার হোসেনের ছেলে শাহ আলম।
এদের মধ্যে আলম মিয়া কারাগারে আসেন ২০২১ সালের ২১ মে । তার সাজার মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর। তারপর থেকে তিনি ৮ মাস ধরে কারাগারে আটক আছেন। নুরুজ্জামান কারাগারে আসেন ২০২১ সালের ৪ জানুয়ারি। তার সাজার মেয়াদ শেষ হয় ২০২১ সালের ১৯ মার্চ। এক বছর ২ মাস ধরে তিনি কারাগারে রয়েছেন। একইভাবে সেলিম মিয়া, জাহাঙ্গীর আলম ও শাহ আলম সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও এক বছর ৪ মাস ধরে কারাগারে আটক আছেন।
জেলা কারাগারের জেলার মো. ইসমাইল হোসেন জানান, তারা মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে বুড়িমারী ইমিগ্রেশনে পৌঁছান। এরপর এর উল্টো দিকে অবস্থিত ভারতের চ্যাংরাবান্ধা ইমিগ্রেশনে ও বিএসএফের কাছে কাগজপত্র পাঠান। কিন্তু বিএসএফ তাদের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোন নির্দেশনা পাননি বলে ওই ৫ ভারতীয় যুবককে ফিরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানান। এ অবস্থায় ওই ভারতীয় যুবকদের ফিরিয়ে আকার কারাগারে আনা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর ও বর্ডার ভিকটিম রেসকিউ লিগ্যাল অ্যাসিসটেন্স ফোরামের আহ্বায়ক এসএম আব্রাহাম লিংকন জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কারা অধিদপ্তর, রাজশাহীস্থ ভারতীয় দূতাবাস, কোলকাতার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ-মাসুম-এর মাধ্যমে ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও বর্ডার ভিকটিম রেসকিউ লিগ্যাল এ্যাসিসটেন্স ফোরামের উদ্যোগে সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দীর্ঘদিন কারাগারে আটক থাকার বিষয়টি নিষ্পত্তি করে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু বিএসএফের কাছে কোন রিপেট্রিয়েশনের কাগজ বা মসেজে না থাকায় তারা তাদের নাগরিকদের গ্রহণ করেনি। ফলে তাদের আবার কারাগারে ফিরে আসতে হয়েছে। এটি কষ্টের বিষয়।
তিনি আরও বলেন, বিএসএফের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে কারাগার কর্তৃপক্ষের অগ্রসর হওয়া উচিত ছিল। এরপরও প্রত্যাশা ভারতীয় কর্তৃপক্ষ দ্রুত তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেবে। যা মানবাধিকার রক্ষায় সহায়ক হবে।