মিঠামইনের ৩০ ঈদগাহ পানির তলে, মসজিদে গাদাগাদি করে জামাত

মুসল্লিরা ছোট ছোট নৌকা নিয়ে মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করেছেন, ছবি: সমকাল
বিজয়কর রতন, মিঠামইন (কিশোরগঞ্জ)
প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২২ | ০০:৩৪ | আপডেট: ১০ জুলাই ২০২২ | ০০:৩৪
কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার সাত ইউনিয়নের ৩০টি ঈদগাহ মাঠ এখনও বন্যার পানিতে তলিয়ে রয়েছে। মুসল্লিরা ঈদুল আজহার নামাজ বড় বড় মসজিদে তিন থেকে চারটি করে জামাতে আদায় করেছেন। ছোট ছোট মসজিদে সাত থেকে আটটি করেও জামাত হয়েছে।
মুসল্লিরা খুব কষ্টে গাদাগাদি করে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। কোনো কোনো মুসল্লি মসজিদে ঠাঁই না পেয়ে নিজ নিজ বাড়িতে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন বলেও জানা গেছে।
উপজেলাটির অনেকের বাড়িতেই কোরবানি দেওয়ার মতো শুকনো জায়গা নেই। তাই একসঙ্গে উঁচু জায়গায় তিন চারটি কোরবানি দিতে দেখা গেছে। অনেকেই বড় রাস্তার পাশে কোরবানি দিচ্ছেন।
ঢাকী ইউনিয়নের মুন্সি হাটীর ঈদের নামাজ পড়তে আসা মুসল্লি দেলু মিয়া জানান, খুব কষ্ট করে মসজিদে ঈদ নামাজ আদায় করেছেন তিনি। অন্যান্য সময় ঈদগাহের মাঠে নামাজ পড়তেন।
কোনো কোনো এলাকায় গ্রাম্য কোন্দলের কারণে মসজিদে না গিয়ে উঁচু জায়গায় নামাজ আদায় করেছেন অনেকেই।
উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের মুসল্লি মো. ছালেক মিয়া জানান, ঘাগড়া বড় রাস্তার পাশে কবরস্থান সংলগ্ন ঈদগাহ মাঠে এখনও চার ফুট পানি। ঈদগাহের মাঠের ওপর দিয়ে এখনও নৌকা চলছে। মুসল্লিরা ছোট ছোট নৌকা নিয়ে ঘাগড়া বাজার মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করেছেন।
ঘাগড়া ইউনিয়নের চারটি ঈদগাহ মাঠ পানিতে তলিয়ে রয়েছে। শিহারা, চমকপুর, হোসেনপুর ও ঘাগড়া। ঢাকী ইউনিয়নের সাতটি শান্তিপুর, গোবিন্দপুর, মুন্সি হাটী দক্ষিণ, বড় হাটী, দরগাহ হাটী, চারিগ্রাম কবরস্থান সংলগ্ন ঈদগাহ মাঠ।
গোপদিঘী ইউনিয়নের পাঁচটি ঈদগাহ মাঠ পানিতে নিচে। ভৈজব পুর, সরালিয়া হাটী, শাওদ হাটী ও কাশাপুর। কেওরজোড় ইউনিয়নে আটটি মাঠ পানিতে তলিয়ে রয়েছে। রহমতপুর, কান্দিপাড়া, কাদিরখলা, রানীগঞ্জ, অলেকপুর ও মফিজ নগর। বৈরাটি ইউনিয়নে তিনটি; বৈরাটি, নয়া হাটী ও আগলা পাড়া। কাটখাল ইউনিয়নে তিনটি ঈদগাহ মাঠের মধ্যে পানি শুকিয়ে গেলেও কাঁদার কারণে নামাজ আদায় করা সম্ভব হয়নি।
কাটখাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম জানান, এ ইউনিয়নে তলিয়ে যাওয়া ঈদগাহ মাঠ থেকে পানি সরে গেলেও কাঁদার কারণে মসজিদে মসজিদে তিন চারটি করে জামাত করতে হয়েছে।
ঘাগড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান ভূঁইয়া জানান, এ ইউনিয়নে চারটি ঈদগাহ মাঠ পানিতে তলিয়ে রয়েছে। প্রতিটি মসজিদেই চার পাঁচটি করে জামাতের মাধ্যমে নামাজ পড়তে হয়েছে।
এছাড়া লোডশেডিংয়ের কারণে গাদাগাদি করে নামাজ আদায় আরও বেশি কষ্ট হয়েছে বলেও জানা গেছে। পাশাপাশি ঘাগড়া ইউনিয়নে অন্যান্য বছরের তুলনায় পশু কোরবানির সংখ্যা কম বলেও জানা গেছে।