চলন্ত বাসে ডাকাতি-ধর্ষণ
রাজার দেওয়া তথ্যে আউয়াল ও নুরনবী গ্রেপ্তার: এসপি

গ্রেপ্তার আব্দুল আউয়াল ও নুরনবী
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০২২ | ০২:১৯ | আপডেট: ০৫ আগস্ট ২০২২ | ০২:৩৫
কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী ঈগল এক্সপ্রেসের বাসে যাত্রীবেশে উঠে যাত্রীদের হাত-পা চোখ বেঁধে মারধর, ডাকাতি ও এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় মো. আব্দুল আউয়াল ও নুরনবীকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় নুরনবীর কাছ থেকে ডাকাতির সময় ছিনিয়ে নেওয়া একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ নিয়ে চলন্ত বাসে ডাকাতি এবং সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
শুক্রবার দুপুর ১২টায় টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) সরকার মোহাম্মদ কায়সার তার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, রিমান্ডে থাকা আসামি রাজা মিয়ার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে টাঙ্গাইল (উত্তর) গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) নেতৃত্বে এক অভিযানে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গতরাত ৫টার দিকে কালিয়াকৈরের টান সূত্রাপুর এলাকা থেকে আউয়ালকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সকাল ৯টার দিকে নুরনবীকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেসময় নুরনবীর কাছ থেকে ডাকাতির সময় ছিনিয়ে নেওয়া একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
সরকার মোহাম্মদ কায়সার আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃত আউয়াল (৩০) কালিয়াকৈরের কাঞ্চনপুর গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে। নুরনবী (২৬) কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ধোনারচর পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাহেজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি বর্তমানে কালিয়াকৈরের শিলাবহ পশ্চিমপাড়া এলাকায় থাকতেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার ভোরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল টাঙ্গাইল শহরের দেওলা এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে ডাকাত দলের এক সদস্য রাজা মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। এসময় তার কাছ থেকে বাসের যাত্রীদের কাছ থেকে লুট করা ৩টি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়।
রাজা মিয়া টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার বল্লা গ্রামের হারুন অর রশিদের ছেলে। তিনি টাঙ্গাইল শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন। পেশায় টাঙ্গাইলের ঝটিকা বাসের চালক।
এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। রাজা মিয়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা আদালতে স্বীকার করেছেন।
এর আগে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মধুপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মুরাদ হোসেন তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে হাজির করেন।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, রাজা মিয়া ডাকাতির সময় নিয়ন্ত্রণে নেওয়া বাসটি চালাচ্ছিলেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়া তিনি পুলিশের কাছে গুরুত্বপূর্ণ আরও তথ্য দিয়েছেন। তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।
গত মঙ্গলবার রাতে ঈগল এক্সপ্রেসের একটি বাস কুষ্টিয়ার ৩০-৩৫ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছিলেন। পথে যাত্রীবেশে ডাকাত দল উঠে প্রথমে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরে যাত্রীদের হাত-পা ও চোখ বেঁধে মারধর এবং লুটের পর এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। ডাকাত দল বাসটি ঘুরিয়ে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের সামনে ফেলে রেখে নেমে যায়।
ধর্ষণের শিকার নারীর ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত মিলেছে। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে বৃহস্পতিবার দুপুরে তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। এরপর তাকে আদালতে পাঠানো হয়। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই নারী।