ফরিদপুরে বিএসএমএমসি অধ্যক্ষকে মেয়রের লিগ্যাল নোটিশ

প্রতীকী ছবি।
ফরিদপুর অফিস
প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২২ | ০৯:৪৮ | আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২২ | ০৯:৪৮
করোনাভাইরাস টেস্টের ভুল রিপোর্ট প্রদান এবং এ সংক্রান্ত তথ্য বিভিন্ন দপ্তরে পাঠিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের (বিএসএমএমসি) অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমানকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র অমিতাভ বোস।
গত বুধবার তার পক্ষে এ লিগ্যাল নোটিশ দেন ফরিদপুর জজ কোর্টের আইনজীবী মানিক মজুমদার। ভুল রিপোর্টের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মেয়রের কোটি টাকার মানহানি হয়েছে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, আমার মোয়াক্কেল ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতা হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ঢাকায় তাঁর নিজস্ব কার্যালয়ে আলোচনার জন্য ডাকেন। আমার মোয়াক্কেল ঢাকা যাওয়ার আগে আপনার ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ল্যাবে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য ১৪ নভেম্বর বিকেল ৪টায় স্পেসিমেন প্রদান করেন, যা আপনি আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে পরীক্ষা করে ওইদিনই ফলাফল প্রদান করেন। ফলাফল অনুযায়ী কোভিড-১৯ টেস্ট রেজাল্ট পজিটিভ মর্মে প্রদান করেন।
নোটিশে আরও বলা হয়, আমার মোয়াক্কেলের কাছে আপনার প্রদত্ত করোনা রিপোর্ট তাহার প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের গভীর ষড়যন্ত্র এবং চক্রান্ত বলে প্রতীয়মান হলে আমার মোয়াক্কেল ঢাকার ল্যাব এইড হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা করেন। ফলাফল নেগেটিভ আসে।
এতে বলা হয়, উক্ত নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে নোটিশ দাতা যথারীতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ফরিদপুর জেলা সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক মো. ইশতিয়াক আরিফের সঙ্গে গণভবনের রেস্টরুমে অপেক্ষা করতে থাকেন। নোটিশ দাতা অমিতাভ বোস গণভবনে উপস্থিত ছিলেন। অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যা ছবিসহ একাধিক ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও প্রিন্ট মিডিয়াতে প্রকাশিত হয়। আপনি এ বিষয় জানতে পেরে অন্যায়ভাবে প্রভাবিত হয়ে আপনার মিথ্যা রিপোর্ট নিজ উদ্যোগে পুনরায় গোয়েন্দা সংস্থাকে প্রদান করে আমার মোয়াক্কেলকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ কর্মসূচি হতে বঞ্চিত করেছেন। তখন আমার মোয়াক্কেল সারা দেশ থেকে উপস্থিত নেতৃবৃন্দের কাছে মারাত্মক হেয় প্রতিপন্ন হন।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, আপনি একজন দায়িত্বশীল উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। আপনার এমন কার্যকলাপ সত্যিই দুঃখজনক, অনভিপ্রেত এবং আদৌ সমীচীন নয়। আপনার কৃতকর্মের কারণে আমার মোয়াক্কেলের কোটি টাকার উপরে মান-সম্মানের ক্ষতিসাধিত হয়েছে। আপনার দেওয়া করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট মিথ্যা, উদ্দেশ্যমূলক এবং প্রভাবিত। আপনার মিথ্যা রিপোর্ট প্রস্তুত এবং বিভিন্ন দপ্তরে পাঠিয়ে আপনি ফৌজদারী দণ্ডনীয় অপরাধ করেছেন, যা দেশের প্রচলিত আইনে অপরাধযোগ্য।
নোটিশে আরও বলা হয়, আমার মোয়াক্কেল এই লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করে দাবি করছেন যে, আপনার করোনা পরীক্ষা ও প্রদত্ত রিপোর্ট মিথ্যা হওয়ায় উক্ত রিপোর্ট বাতিল বলে ঘোষণা করবেন এবং মিথ্যা রিপোর্টের কারণে আমার মোয়াক্কেলের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। অন্যথায় মানহানির কারণে আমার মোয়াক্কেল আদালতে বিচারপ্রার্থী হতে বাধ্য হবেন এবং আপনার কারণে নোটিশ দাতা বাধ্য হওয়ায় উক্ত মোকদ্দমায় খরচা আপনি বহন করতে বাধ্য থাকিবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওই লিগ্যাল নোটিশ তিনি গত শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত হাতে পাননি। নোটিশ পেলে এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানাবেন।
আইনজীবী মানিক মজুমদার জানান, গত বৃহস্পতিবার রেজিস্ট্রি ডাকে ওই নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এ সংক্রান্ত কাগজ আমাদের হাতে রয়েছে।
- বিষয় :
- করোনা টেস্ট
- বিএসএমএমসি
- অমিতাভ বোস
- ঢাকা
- ফরিদপুর