মেয়র আরিফকে নিয়ে নানা নাটক

সিলেট ব্যুরো
প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০২০ | ১৩:৩২
সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর অপসারণ দাবি নিয়ে গতকাল বুধবার দিনভর কাউন্সিলরদের পক্ষে-বিপক্ষে নানা নাটক হয়ে গেল। মেয়রের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছচারিতা ও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিলেন ২২ জন কাউন্সিলর। বিকেলে সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগও দেন তারা। গত ১ মার্চ বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের স্বাক্ষর নিয়ে অভিযোগপত্র প্রস্তুত হলেও এদিন সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরীর কাছে এটি হস্তান্তর করার পরই শুরু হয় নাটক। তাদের মধ্যে ১০ জন রাতেই পাল্টা বিবৃতি দিয়ে দাবি করেন, তারা মেয়রের অপসারণ নয়, ভিন্ন বিষয়ে স্বাক্ষর করেছিলেন। আর দু'জন বলেছেন, মেয়রের কর্মকাণ্ডে তাদের ক্ষোভ ও দুঃখ আছে। তবে তারা মেয়রের অপসারণ চান না। লিখিত অভিযোগে কাউন্সিলররা উল্লেখ করেন, মেয়র আরিফ সাধারণ সভায় উপস্থাপন বা আলোচনা ছাড়া বর্তমান পরিষদকে উপেক্ষা করে দক্ষিণ সুরমা এলাকার
তেঁতুলিয়া, বানেশ্বর ও বলদী মৌজায় জায়গা অধিগ্রহণ করেছেন। যথাযথ নিয়ম অনুসরণ না করে টাকার বিনিময়ে ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে বিভিন্ন শাখায় লোক নিয়োগ করে অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন তিনি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার মাধ্যমে কমিশন বাণিজ্যেও জড়িত তিনি। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সিটি করপোরেশন আইন ও বিধিমালা ধারা ১৩-এর উপধারা ১ (ঘ) অনুসারে তার স্বপদে থাকার যোগ্যতা নেই। গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তারা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগপত্র তুলে দেন।
কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠকে অনেক বিষয়ে কথাবার্তা হলেও মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সমঝোতার অংশ হিসেবে সাপ্তাহিক বন্ধের দোহাই দিয়ে আগামী রোববার পর্যন্ত মেয়রের বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগপত্র ঢাকায় না পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কাউন্সিলররা বলেন, যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে পরিষদের অনুমোদন নিতে হলেও মেয়র অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা মানেন না। প্রতি মাসে পরিষদের সভা হওয়ার কথা থাকলেও সেটি হয় না। এমনকি বিভিন্ন প্রকল্পের বিপরীতে মেয়রের একক সিদ্ধান্তে অর্থ ব্যয় করা হয়। তারা বলেন, দক্ষিণ সুরমার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নে সিসিকের এসপল্ট প্লান্ট নির্মাণের জন্য ৪১০ শতক ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ ২৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। বড় অঙ্কের এ টাকা ব্যয় করলেও মেয়র তা নিয়ে পরিষদের সভা বা কাউন্সিলরদের সঙ্গে আলোচনা পর্যন্ত করেননি।
সিসিকের প্যাডে লেখা মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রের একটি কপি সমকালের কাছে রয়েছে- যাতে কাউন্সিলরদের পক্ষে প্যানেল মেয়র-১ মোহাম্মদ তৌফিক বকস প্রথমে স্বাক্ষর করেছেন। এ ছাড়া কাউন্সিলর সৈয়দ তৌহিদুল হাদী, একেএম লায়েক, ফরহাদ চৌধুরী শামীম, ইলিয়াছুর রহমান, মখলিছুর রহমান কামরান, তারেক উদ্দিন তাজ, রকিবুল ইসলাম ঝলক, সিকন্দর আলী, শান্তনু দত্ত শন্তু, নজরুল ইসলাম মুনিম, ছয়ফুল আমিন বাকের, আব্দুল মুহিত জাবেদ, এসএম শওকত আমিন তৌহিদ, আজাদুর রহমান আজাদ, আব্দুর রকিব তুহিন, মোস্তাক আহমদ, তাকবিরুল ইসলাম পিন্টু, মাসুদা সুলতানা, নাজনীন আক্তার কনা ও রেবেকা আক্তার লাকির স্বাক্ষর রয়েছে।
গত ১ মার্চ লিখিত অভিযোগপত্রে তাদের স্বাক্ষর থাকলেও তা অন্য কারণে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন ১০ জন কাউন্সিলর। গতকাল রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমন দাবি করেন কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম মুনিম, শান্তনু দত্ত শন্তু, মাসুদা সুলতানা, রেবেকা আক্তার লাকি, সিকন্দর আলী, এসএম শওকত আমিন, আব্দুর রকিব তুহিন, মখলিছুর রহমান কামরান, নাজনীন আক্তার কনা ও সোহেল আহমদ রিপন। তাদের পাশাপাশি মেয়রপন্থি বাকি কাউন্সিলররা পৃথক বিবৃতিতে দাবি করেছেন, 'মেয়রের বিরুদ্ধে কাউন্সিলরদের অভিযোগ' শিরোনামে বিভিন্ন অনলাইন নিউজপোর্টালে প্রকাশিত সংবাদটি মিথ্যা ও বানোয়াট।
নগরীর ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিকন্দর আলী মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করলেও তিনি অপসারণ চান না বলে দাবি করেছেন। গতকাল রাতে তিনি সমকালকে বলেন, উন্নয়ন বঞ্চনার জন্য মেয়রের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগ রয়েছে। তবে তার অপসারণের দাবির কথা জানি না। উন্নয়ন বঞ্চনার প্রতিবাদে তারা আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেছিলেন বলে দাবি করেন তিনি। একই কথা বলেন নগরীর ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুর রকিব তুহিন। তিনি বলেন, মেয়রের বিরুদ্ধে আমাদের অনেক ক্ষোভ ও দুঃখ আছে। তবে তার অপসারণ বা তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করিনি।
ক্ষুব্ধ কয়েকজন কাউন্সিলর সমকালকে বলেন, নগরীর উপকণ্ঠ খাদিমপাড়ায় সিসিকের তিন একরেরও বেশি জায়গা মানুষের দখলে রয়েছে। এই জমি উদ্ধার না করে মেয়র ২৪ কোটি টাকা ব্যয় করে নতুন জায়গা কেনায় অর্থের অপচয় হয়েছে। এসব কথা তারা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন। কয়েকদিন আগে কাউন্সিলররা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেন বলে জানান তারা। এরপর অভিযোগপত্র প্রস্তুত করে সবার স্বাক্ষর নেওয়া হয়। গতকাল জমা দেওয়ার আগে আরেক দফা বৈঠক করে অভিযোগপত্রে কিছু শব্দ পরিবর্তন করা হয়।
এদিকে, নগরীর উন্নয়নকে বিঘ্নিত করতে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র হচ্ছে দাবি করে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সমকালকে বলেন, কারও কোনো কষ্ট বা অভিযোগ থাকলে আমাকে বলা যেত; পরিষদ সভায় উপস্থাপন করে আলোচনা করা যেত। অথচ তারা সেসব না করে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি থাকলে তদন্ত হোক, তা আমিও চাই। তিনি দাবি করেন, মুজিববর্ষকে সামনে রেখে তিনি দ্রুত নগরীর উন্নয়ন কাজ শেষ করতে চাইছেন। এ সময় ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।
তেঁতুলিয়া, বানেশ্বর ও বলদী মৌজায় জায়গা অধিগ্রহণ করেছেন। যথাযথ নিয়ম অনুসরণ না করে টাকার বিনিময়ে ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে বিভিন্ন শাখায় লোক নিয়োগ করে অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন তিনি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার মাধ্যমে কমিশন বাণিজ্যেও জড়িত তিনি। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সিটি করপোরেশন আইন ও বিধিমালা ধারা ১৩-এর উপধারা ১ (ঘ) অনুসারে তার স্বপদে থাকার যোগ্যতা নেই। গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তারা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগপত্র তুলে দেন।
কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠকে অনেক বিষয়ে কথাবার্তা হলেও মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সমঝোতার অংশ হিসেবে সাপ্তাহিক বন্ধের দোহাই দিয়ে আগামী রোববার পর্যন্ত মেয়রের বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগপত্র ঢাকায় না পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কাউন্সিলররা বলেন, যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে পরিষদের অনুমোদন নিতে হলেও মেয়র অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা মানেন না। প্রতি মাসে পরিষদের সভা হওয়ার কথা থাকলেও সেটি হয় না। এমনকি বিভিন্ন প্রকল্পের বিপরীতে মেয়রের একক সিদ্ধান্তে অর্থ ব্যয় করা হয়। তারা বলেন, দক্ষিণ সুরমার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নে সিসিকের এসপল্ট প্লান্ট নির্মাণের জন্য ৪১০ শতক ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ ২৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। বড় অঙ্কের এ টাকা ব্যয় করলেও মেয়র তা নিয়ে পরিষদের সভা বা কাউন্সিলরদের সঙ্গে আলোচনা পর্যন্ত করেননি।
সিসিকের প্যাডে লেখা মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রের একটি কপি সমকালের কাছে রয়েছে- যাতে কাউন্সিলরদের পক্ষে প্যানেল মেয়র-১ মোহাম্মদ তৌফিক বকস প্রথমে স্বাক্ষর করেছেন। এ ছাড়া কাউন্সিলর সৈয়দ তৌহিদুল হাদী, একেএম লায়েক, ফরহাদ চৌধুরী শামীম, ইলিয়াছুর রহমান, মখলিছুর রহমান কামরান, তারেক উদ্দিন তাজ, রকিবুল ইসলাম ঝলক, সিকন্দর আলী, শান্তনু দত্ত শন্তু, নজরুল ইসলাম মুনিম, ছয়ফুল আমিন বাকের, আব্দুল মুহিত জাবেদ, এসএম শওকত আমিন তৌহিদ, আজাদুর রহমান আজাদ, আব্দুর রকিব তুহিন, মোস্তাক আহমদ, তাকবিরুল ইসলাম পিন্টু, মাসুদা সুলতানা, নাজনীন আক্তার কনা ও রেবেকা আক্তার লাকির স্বাক্ষর রয়েছে।
গত ১ মার্চ লিখিত অভিযোগপত্রে তাদের স্বাক্ষর থাকলেও তা অন্য কারণে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন ১০ জন কাউন্সিলর। গতকাল রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমন দাবি করেন কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম মুনিম, শান্তনু দত্ত শন্তু, মাসুদা সুলতানা, রেবেকা আক্তার লাকি, সিকন্দর আলী, এসএম শওকত আমিন, আব্দুর রকিব তুহিন, মখলিছুর রহমান কামরান, নাজনীন আক্তার কনা ও সোহেল আহমদ রিপন। তাদের পাশাপাশি মেয়রপন্থি বাকি কাউন্সিলররা পৃথক বিবৃতিতে দাবি করেছেন, 'মেয়রের বিরুদ্ধে কাউন্সিলরদের অভিযোগ' শিরোনামে বিভিন্ন অনলাইন নিউজপোর্টালে প্রকাশিত সংবাদটি মিথ্যা ও বানোয়াট।
নগরীর ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিকন্দর আলী মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করলেও তিনি অপসারণ চান না বলে দাবি করেছেন। গতকাল রাতে তিনি সমকালকে বলেন, উন্নয়ন বঞ্চনার জন্য মেয়রের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগ রয়েছে। তবে তার অপসারণের দাবির কথা জানি না। উন্নয়ন বঞ্চনার প্রতিবাদে তারা আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেছিলেন বলে দাবি করেন তিনি। একই কথা বলেন নগরীর ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুর রকিব তুহিন। তিনি বলেন, মেয়রের বিরুদ্ধে আমাদের অনেক ক্ষোভ ও দুঃখ আছে। তবে তার অপসারণ বা তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করিনি।
ক্ষুব্ধ কয়েকজন কাউন্সিলর সমকালকে বলেন, নগরীর উপকণ্ঠ খাদিমপাড়ায় সিসিকের তিন একরেরও বেশি জায়গা মানুষের দখলে রয়েছে। এই জমি উদ্ধার না করে মেয়র ২৪ কোটি টাকা ব্যয় করে নতুন জায়গা কেনায় অর্থের অপচয় হয়েছে। এসব কথা তারা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন। কয়েকদিন আগে কাউন্সিলররা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেন বলে জানান তারা। এরপর অভিযোগপত্র প্রস্তুত করে সবার স্বাক্ষর নেওয়া হয়। গতকাল জমা দেওয়ার আগে আরেক দফা বৈঠক করে অভিযোগপত্রে কিছু শব্দ পরিবর্তন করা হয়।
এদিকে, নগরীর উন্নয়নকে বিঘ্নিত করতে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র হচ্ছে দাবি করে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সমকালকে বলেন, কারও কোনো কষ্ট বা অভিযোগ থাকলে আমাকে বলা যেত; পরিষদ সভায় উপস্থাপন করে আলোচনা করা যেত। অথচ তারা সেসব না করে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি থাকলে তদন্ত হোক, তা আমিও চাই। তিনি দাবি করেন, মুজিববর্ষকে সামনে রেখে তিনি দ্রুত নগরীর উন্নয়ন কাজ শেষ করতে চাইছেন। এ সময় ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।
- বিষয় :
- মেয়র আরিফ