বাগেরহাটে বিএনপি-জামায়াতের ২১ নেতাকর্মী আটক

বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২২ | ০৭:১৮ | আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২২ | ০৭:১৮
বাগেরহাটে বিএনপি-জামায়াতের অন্তত ২১ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার সকালে কাটাখালি মোড়সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। অপরদিকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এটিএম আকরাম হোসেন তালিমের বাড়ি, শহরের সরুইস্থ দলীয় কার্যালয় এবং শ্রমিক দলের সাবেক জেলা সভাপতি সরদার লিয়াকত হোসেনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা হয়েছে। শনিবার সকালে শতাধিক মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এই ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ করেছে দলটি। বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত গণমিছিল বানচাল করতে নেতাকর্মীদের আটক ও হামলা করা হয়েছে বলে দাবি করেন বিএনপির নেতারা।
বিএনপি মিছিল করতে না পারলেও এদিন সকালে বাগেরহাট-খুলনা মহাসড়কের কাটাখালি মোড় এলাকায় গণমিছিল করেছেন জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। মিছিলে জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা রেজাউল করিম, নায়েবে আমির অ্যাড. আব্দুল ওয়াদুদ, সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. ইউনুসসহ সহস্রাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
হামলার বিষয়ে এটিএম আকরাম হোসেন তালিম বলেন, শনিবার সকাল দশটার দিকে আমার চাচাতো ভাই আলী রেজা আহমেদের স্ত্রী মারা গেছেন। আমরা নিহতের দাফন-কাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এ সময় ছাত্রলীগের ছেলেরা শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে এসে আমাদের বাড়ি আক্রমণ করে। মৃত্যুর খবর শুনে বাসার সামনে আসা আসা স্বজন ও প্রতিবেশীদের ধাওয়া করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তাদের বসার জন্য আনা চেয়ার ও বা বাড়ির ভেতর ঢুকে রুমের দরজা-জানালা ভাঙচুর করেন। তাদের আমরা যতই বলি, এখানে একজন মানুষ মারা গেছে। এর জন্য লোকজন আসছে, এরা সবাই আমাদের স্বজন, তা না শুনেও সব কিছু ভেঙে চলে গেছে। এই হচ্ছে ক্ষমতাসীনদের গনতন্ত্রের নমুনা।
তিনি আরও বলেন, সকাল থেকে আমাদের অফিস পুলিশ ঘেরাও করে রেখেছে। আমাদের কোনো নেতাকর্মীরা ভেতরে ঢুকতেই পারেনি। সেখানে মিছিল করার প্রস্তুতি নিলে পুলিশ পাঁচজনকে আটক করেছে। যাকে পাচ্ছে তাকে আটকের তাৎপরতা চালাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা মিছিল করতে পারিনি।
হামলার বিষয়ে জানতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মনির হোসেনকে একাধিক বার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমএ সালাম বলেন, কেন্দ্র ঘোষিত গণমিছিলের সব আয়োজন করা হয়েছিল বাগেরহাটে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা এসে আমাদের অফিসের দরজা, জানালা ভাঙচুর করেছে। অফিস তালাবদ্ধ থাকায়, দেওয়াল টপকিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে তারা হামলা-ভাঙচুর করে। এ ছাড়া গত দুই-তিনদিন ধরে আমাদের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বাড়ি হামলা ও ভাঙচুর করেছে।
বাগরেহাট জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা রেজাউল করীম বলেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি থেকে ফেরার পথে বিভিন্ন স্থান থেকে পুলিশ আমাদের ১৮ নেতাকর্মীকে আটক করেছে। আমরা আটক নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি চাই।
বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়ক পরিদর্শক এসএম আশরাফুল আলম বলেন, ফকিরহাট থানার এসআই সঞ্জয় বাদী হয়ে একটি নাশকতা মামলা দায়ের করেছেন। এই মামলায় কাটাখালিসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ২১ জনকে আটক করা হয়েছে। অন্য আসামিদের আটক করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যেকোনো মূল্যে জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা হবে। এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানান তিনি।