অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে যুবক ও গৃহবধূকে ৯ ঘণ্টা গাছে বেঁধে নির্যাতন

ছবি: সমকাল
দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৩ | ১৭:০৬ | আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৩ | ১৭:০৬
অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ এনে এক যুবক ও গৃহবধূকে প্রায় ৯ ঘণ্টা গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার ভোরে কুমিল্লার দেবিদ্বারের এলাহাবাদ ইউনিয়নে। পরে সালিশ বৈঠক করে গৃহবধূকে বাবার বাড়িতে ও যুবককে তাঁর বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয়রা জানান, ২-৩ বছর আগে ওই যুবক ও গৃহবধূর মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে গৃহবধূ যুবককে মোবাইল ফোনে ডেকে তাঁর ঘরে আনেন। যুবক বাড়ি থেকে বের হলে তাঁর বড় ভাই তাঁকে অনুসরণ করে ওই বাড়ি আসেন এবং গৃহবধূর বাড়ির লোকজনকে ডেকে এনে দু’জনকে ঘরে তালাবন্দি করেন। পরে তাঁরা দু’জনকে প্রায় ৯ ঘণ্টা গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে শারীরিক নির্যাতন চালায়।
ঘটনার পর স্থানীয় ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সালিশে বসে। সালিশে গৃহবধূর স্বামী বাড়ি এলে তাঁদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে তাঁকে বাবার বাড়িতে এবং যুবককে তাঁর ভাই ও স্বজনদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে ওই সালিশে উভয় পক্ষের লোকজন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সালিশদার মোজাফ্ফর আহমদ, নজরুল ইসলাম, রমিজ উদ্দিন, সাদেক মিয়া, বাবরী মিয়া, অহিদ মিয়া, আজিজ খান, রঞ্জিত দে, মহিলা ইউপি সদস্য নাছিমা বেগম প্রমুখ।
ইউপি সদস্য আবুল হোসেন জানান, এ বিষয়ে সালিশ করার এখতিয়ার তাঁদের নেই, তাই আটকদের যার যার বাবার বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। গৃহবধূর স্বামী বিদেশ থেকে আসার পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মহিলা ইউপি সদস্য নাছিমা বেগম বলেন, এটা অমানবিক কাজ করা হয়েছে। এত ঘণ্টা তাঁদের উন্মুক্ত জায়গায় আটকে রেখে, এতগুলো মানুষের সামনে গাছের সঙ্গে কোমরে রশি বেঁধে নির্যাতন করার পর বলা হলো যার যার বাবার বাড়িতে চলে যাও। পুরুষ লোকটির ভাগ্যে যা-ই হোক, নারীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত ছাড়াই এক কাপড়ে বিদায় করা হলো। বিচারে গৃহবধূকে তাঁর স্বামী তালাক দিলে এর দায়ভার যুবককে বহন করতে হবে, এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত। কাউকে দোষী সাব্যস্তও করা হলো না। এটা ন্যায়বিচার হলো না।
দেবিদ্বার থানার ওসি কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ এখনও পাননি, তবে যেহেতু বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জেনেছেন, তা খতিয়ে দেখবেন বলে জানান তিনি।