সেই ছাত্রলীগ নেতাদের ছিনতাইয়ের ৭ লাখ টাকা উদ্ধার

নরসিংদীতে পুলিশ পরিচয়ে পিস্তল দেখিয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের ছিনতাই করা সাত লাখ টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার গভীর রাতে নরসিংদী পৌর শহরের বানিয়াছল এলাকা থেকে ওই টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। সেদিন বিকেলে শহরের বৌয়াকুড় এলাকা থেকে আক্কাস আলী নামে এক ইউপি সদস্যের ১৬ লাখ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যান তাঁরা। ওই ঘটনায় জড়িত চার ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকে একটি খেলনা পিস্তল উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার নেতারা হলেন নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রেহানুল ইসলাম ভূঁইয়া লেলিন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাবেক সদস্য মাধবদী টাটাপাড়া এলাকার শোয়েব রায়হান, ছাত্রলীগ কর্মী মাধবদীর বিরামপুর এলাকার তানভীর আহমেদ ও বলভদ্রী এলাকার কামরুল হাসান মুহিত। এর মধ্যে লেলিন নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আমিরুল ইসলাম ভূঁইয়ার ছেলে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নরসিংদীর রায়পুরা উপজেরার বাঁশগাড়ি ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আক্কাস আলী মেম্বার জমি কেনার জন্য ১৬ লাখ টাকা নিয়ে অটোরিকশায় গ্রামের বাড়ি রায়পুরার বাঁশগাড়িতে যাচ্ছিলেন। তিনি শহরের বৌয়াকুড় এলাকায় পৌঁছালে দুটি মোটরসাইকেলে চারজন এসে তাঁর গতিরোধ করেন। মোটরসাইকেলে থাকা ব্যক্তিরা নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে এবং খেলনা পিস্তল দেখিয়ে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নেন। এ সময় আক্কাস মেম্বারের ছেলেও তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তানভীর ও শোয়েবকে ধরে ফেলতে সক্ষম হলেও বাকি দু’জন টাকার ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন।

এদিকে তানভীর ও শোয়েবকে আটকের পর তাঁদের ছাড়াতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা লেলিন ও মুহিত এলে ঘটনার সঙ্গে তাঁদের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে পুলিশের সন্দেহ হয়। পরে  তাঁদেরও আটক করা হয়।

এ ব্যাপারে আক্কাস মেম্বার বাদী হয়ে নরসিংদী মডেল থানায় তাঁদের নামে একটি মামলা করেন। পরে তাঁদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ।

জানা গেছে, লেলিন ২০১৫-১৬ সালে নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। অপরদিকে ২০২২ সালে ওই সংগঠনের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ছিলেন শোয়েব রায়হান। এ কারণে নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসান হাবীব লিমন বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেপ্তরকৃতরা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়।

নরসিংদী সদর থানার ওসি আবুল কাশেম বলেন, আটক ব্যক্তিদের দেওয়া তথ্যমতে ছিনতাই করা টাকার মধ্যে সাত লাখ উদ্ধার করা হয়। বাকি টাকা উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে টাকা উদ্ধারের সময় অন্য কাউকে আটক করা হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, এই চক্রের সঙ্গে অন্তত ৩০ জন সদস্য রয়েছে। তারা নিকট অতীতে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল।