ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

মাছে লাভ হচ্ছে না চলনবিলের চাষিদের

মাছে লাভ হচ্ছে না চলনবিলের চাষিদের

ফাইল ছবি

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২৩ | ১৮:০০

 লাগামহীনভাবে বাড়ছে মাছের খাবার ও পোনার দাম। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ওষুধের দামও। মাছ চাষে আর লাভ হচ্ছে না। গত এক বছরের ব্যবধানে সংশ্লিষ্ট সব ধরনের সামগ্রীর দাম বেড়েছে ২৫ থেকে ৪৫ শতাংশ। এতে মাছের রাজ্য চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশের চাষিরাও আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন মাছ চাষে।

 সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, উল্লাপাড়া ও রায়গঞ্জে সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুর রয়েছে প্রায় ৮ হাজার ১৮৫টি। এসব এলাকার বিলগুলোতে বাণিজ্যিকভাবে রুই, কাতলা, সিলভারকার্প, বিগ্রেট, পাঙাশ, তেলাপিয়া, হাঙ্গরী, মৃগেল, পাবদা, টেংরা, গুলশা, শিং, মাগুর, শোল, কৈ, সরপুঁটিসহ ২২ থেকে ২৪ প্রজাতির মাছের চাষ হয়ে থাকে। বছরে উৎপাদন হয় ৩৮ হাজার ৪শ ১৫ টন। স্থানীয় চাহিদা পূরণের পর এসব মাছ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। বর্তমানে মাছের খাবারসহ আনুষঙ্গিক সব কিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম অবস্থা চাষিদের।

সম্প্রতি চলনবিল এলাকায় হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে আফতাব, নারিশ, মেঘা, প্যারাগন, কোয়ালিটিসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানির প্যাকেটজাত মাছের খাবারের দাম এক বছরের ব্যবধানে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বেড়েছে। প্রায় সব কোম্পানির ওষুধের দাম ছয় মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ ভাগ। এছাড়া অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে পোনার দাম।

ক্ষুদ্র মাঝিড়া গ্রামের চাষি মো. গোলাম মোস্তফা জানান, চলনবিল এলাকার পুকুরে চাষের জন্য যে পোনা কেনা হয় তার প্রায় ৭০ শতাংশই আসে ময়মনসিংহ ও বগুড়ার আদমদীঘি এলাকার হ্যাচারি থেকে। এক মণ রুই মাছের পোনা গত বছর ৬ হাজার টাকায় কিনতে পারলেও এবার কিনেছেন ৮০০০ টাকায়। একইভাবে দাম বেড়েছে কাতল, সিলভার কার্প, বিগ্রেট, মৃগেল, বাইম, কৈ, পাবদা, গুলসা, শিংসহ ছোটবড় সব ধরনের পোনার।

চলনবিল অঞ্চলের ফিস ফিড ডিলার মো. লুৎফর রহমান জানান, হ্যাচারি মালিকদের পোনার খাদ্য, ওষুধ, অক্সিজেনসহ সব ধরনের সামগ্রীর আনুষঙ্গিক খরচ বেড়েছে । শুধু পোনা মাছ উৎপাদনসহ পরিচর্যার ব্যয় বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। প্যাকেটজাত মাছের খাবার ১০ কেজি ওজনের এক প্যাকেট ‘নার্সারি’ এখন এক হাজার ৩০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।। এক বছর আগে এর দাম ছিল ৮০০ টাকা। একইভাবে ৭০০ টাকার নার্সারি-২ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২০০ টাকায়।

মাছচাষি শাহিনুর ইসলাম, সজীব খন্দকারসহ বিলপাড়ের একাধিক চাষি জানান, গত বছর প্রতি বিঘা পুকুর ৩৫ হাজার টাকায় লিজ নিয়েছিলেন তারা। চলতি বছর ৫০ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। যে জাল দুই হাজার ২০০ টাকায় ভাড়া নিতেন এখন তা নিতে হচ্ছে তিন হাজার ৫০০ টাকায়। পাশাপাশি পুকুর পরিচর্যার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকের পারিশ্রমিকও বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।

এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মশগুল আজাদ জানান, মাছের দাম ওঠানামা করে। মৎস্য বিভাগ প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র মাছ চাষিদের সরকারিভাবে প্রণোদনা দিচ্ছে। এর পরিমাণ বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন

×